আপনি জানেন কি http আর https এর মধ্যে কোনটি বেশি সুরক্ষা দেয়?

Advertisement

http হল হাইপার টেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল। এটি ইন্টারনেট জগতে তথ্য আদান-প্রদানের একটি প্রচলিত পদ্ধতি। আর https হল সেই পদ্ধতিরই একটি আধুনিক সংস্করণ। এখানে অতিরিক্ত ‘S’-এর অর্থ হল সিকিউর। অর্থাৎ এই প্রকৃতির লিঙ্কে প্রবেশ করলে আপনার তথ্য আদান-প্রদানের সমস্ত কিছুই সুরক্ষিত থাকবে। কোনও হ্যাকার এই প্রকৃতির লিঙ্কে সাধারণভাবে প্রবেশ করতে পারে না। এটিকে এক ধরণের সুরক্ষা দানকারী লেয়ার বলা চলে। – ছবি : সংগৃহীত

Do you know which of http and https offers more security

সজয় পাল : প্রযুক্তি জগতে ইন্টারনেট এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড়ো আবিষ্কার বলা চলে। আধুনিক সভ্যতা এখন অনেকটাই এই ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। একজন অতি সাধারণ মানুষও নিজের পছন্দের যে কোনও কিছুর খোঁজ করতে এই ইন্টারনেটের শরণাপন্ন হন। বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন, যদি কোনও একদিনের জন্য সমগ্র বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবস্থা ছিন্ন করে দেওয়া হয়, তবে কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে মানব সভ্যতার অগ্রগতি।

     সে যাইহোক, এবার আসা যাক ইন্টারনেট দুনিয়ার কিছুটা ভিতরের খবরে। আপনি যখনই পছন্দের কোনও কিছু খোঁজ করতে আপনার মোবাইল, ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের ব্রাউজার (যে কোনও ব্রাউজার হতে পারে) থেকে সংকেত পাঠাবেন, প্রথমেই আপনার সামনে সারি বদ্ধ এক গুচ্ছ ওয়েব পোর্টালের লিঙ্ক চলে আসবে। আপনি পছন্দ মতো তারই একটিতে ক্লিক করে আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়টির খোঁজ করে নিতে পারেন। লক্ষ্য করলে দেখবেন, আপনার ক্লিক করার পর যে পেজটি খুলে গিয়েছে তার লিঙ্ক অর্থাৎ ওয়েব পোর্টালের ঠিকানাটি শুরু হয়েছে http বা https দিয়ে। এরপর একটি কোলন (:) চিহ্নের পর রয়েছে শ্লাস (//) চিহ্ন। তারপর www.। সবশেষে থাকছে ওয়েব পোর্টালটির মূল নাম এবং ডোমেইন (.com, .in, .org, .co.in প্রভৃতি)।

     এবার লক্ষ্য করুন, আপনার নির্বাচিত কোনও কোনও ওয়েব সাইটের প্রথম অংশটি শুরু হচ্ছে http দিয়ে। আবার কোনওটি শুরু হচ্ছে https দিয়ে। প্রশ্ন আসায় স্বাভাবিক, এমনটি কেন হচ্ছে?

     http, যার পুরো নাম হাইপার টেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল (Hyper Text Transfer Protocol)। এটি ইন্টারনেট জগতে তথ্য আদান-প্রদানের একটি প্রচলিত পদ্ধতি। লিঙ্কটি ১৯৮৯ সালে টিম বার্নাস লি তৈরি করেন। এখন যে কোনও ওয়েব সাইটের ঠিকানার শুরুতে এই লিঙ্কটি ব্যবহার করা হয়। আর https-ও ওই একই পদ্ধতি। বলা যায় https হল http-এর আধুনিক প্রজন্ম। এখানে নামের শেষে একটি অতিরিক্ত s যুক্ত করা হয়েছে মাত্র। যার অর্থ সিকিউর (Secure) বা নিরাপদ।

     এই ‘সিকিউর’ শব্দটি শুনে হয়তো অনেকেই ধরে ফেলেছেন মূল ব্যাপারটি। শব্দটি এখানে নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। আসলে, আপনি যখন ইন্টারনেট জগৎ বা ওয়েভ সারভারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন এবং কিছু তথ্য আদান-প্রদান করছেন, তখন ইন্টারনেট জগৎ আর আপনার মাঝে যে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি চলে আসার সম্ভাবনা থাকে। বলা বাহুল্য এই তৃতীয় ব্যক্তিটিকে বর্তমান যুগে ‘হ্যাকার’ বলা হচ্ছে। এই যুগে হ্যাকারের কোনও অভাব নেই। তারা সর্বদা ইন্টারনেট জগতে জাল বিছিয়ে রেখেছে। সামান্যতম অসতর্কতায় আপনার ব্যক্তিগত জীবনে সে অনায়াসেই প্রবেশ করতে পারে। লুটে নিতে পারে আপনার গচ্ছিত ধন-সম্পত্তিও।

     ইন্টারনেট জগৎ ও তার ব্যবহারকারীকে সুরক্ষিত রাখতে এই ‘S’ এর ভূমিকা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘S’ অর্থাৎ SSL, যার পুরো নাম সিকিউর সকেটস লেয়ার (Secure Sockets Layer)। এটি আসলে অনেকটা ছাকনির মতো। এই লেয়ার সংযোগ রয়েছে এমন কোনও লিঙ্কে (https) প্রবেশ করে আপনি যা কিছু করবেন, তা প্রায় সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। এমনকি আপনার অর্থ লেন-দেনের প্রক্রিয়াটিও গোপন থাকবে। SSL কোনওভাবেই ওয়েব সারভার এবং আপনার মাঝে অন্য কোনও তৃতীয় ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেবে না।

     SSL অনেকটা সিকিউরিটি গার্ড-এর মতো কাজ করে। ATM বুথে যেমন থাকতে দেখা দেখা যায় সিকিউরিটি গার্ডকে। যে সমস্ত ATM বুথে সিকিউরিটি গার্ডের উপস্থিতি রয়েছে সেগুলি অনেকটাই সুরক্ষিত। https-এর ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই। এই প্রকৃতির লিঙ্ক http-এর থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত। আপনি নির্ভয়ে এই প্রকৃতির লিঙ্কে প্রবেশ করতে পারেন।

     তবে সব ওয়েব পোর্টালের ঠিকানার শুরুতে https থাকে না কেন? আসলে যে কোনও ওয়েব পোর্টাল মালিককে SSL সার্টিফিকেট অর্জন করতে হয়। ইন্টারনেট পরিষেবা দানকারী সংস্থাগুলির কাছে আলাদাভাবে এর জন্য আবেদন করতে হবে। সংস্থাগুলি প্রয়োজন বুঝলে নিশ্চয় ওয়েব পোর্টাল মালিককে এই সার্টিফিকেট প্রদান করবে।

     এখন আপনিও দেখে নিতে পারেন কোন কোন ওয়েব পোর্টালে এই সার্টিফিকেট মজুত রয়েছে। লিঙ্কের শুরুতেই যে তালা চিহ্নটি (Lock Symbol) থাকবে, সেখানে ক্লিক করে সার্টিফিকেট অপশনে গিয়ে আপনি দেখে নিতে পারেন এটি বৈধ কিনা। পেয়ে যাবেন বাকি তথ্যও। তাই ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের পূর্বে অথবা ওয়েব সারভারে আর্থিক লেন-দেনের পূর্বে এই বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখে নেওয়া প্রয়োজন।

Advertisement
Previous articleআবারও সামনে এল কৃষ্ণাঙ্গ ওটা বেঙ্গা-র বন্দি জীবনের ঘটনা
Next articleএলাকায় একাধিক করোনা পজিটিভ, তবু এখনও সচেতন হল না কিছু মানুষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here