২১০০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে যাবে

Advertisement
আপাতভাবে পরিবেশ রক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বিশ্ব জুড়ে জনসংখ্যা হ্রাস অবশ্যই ইতিবাচক বলে মনে হবে। কিন্তু নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে সমাজের ওপর। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ২১০০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে যাবে। তখন মানুষের মধ্যে বয়স ভিত্তিক পার্থক্য তৈরি হবে অনেক বড় আকারে। – ছবি : সংগৃহীত

%25E0%25A7%25A8%25E0%25A7%25A7%25E0%25A7%25A6%25E0%25A7%25A6 %25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B2 %25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2597%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A6 %25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2583%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%259F %25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%2582%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE %25E0%25A6%2585%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A7%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%2595 %25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%259F%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587

অনলাইন পেপার : দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পৃথিবীর বর্তমান সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম। জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলেই পরিবেশ ও সমাজের ওপর তার বিরাট প্রভাব পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তাই জনসংখ্যার হার নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন দেশকে একাধিকবার বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছে নিজের স্বার্থে। অনেক দেশ আবার কড়া হাতে আইন প্রয়োগ করে ‘দুই সন্তান’ নীতিও লাগু করেছে ইতিমধ্যে। তাদের লক্ষ্য কোনওভাবেই যেন দেশের অভ্যন্তরে নতুন করে জনবিস্ফোরণ না ঘটে। আবার উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির সচেতন নাগরিকেরা নিজে থেকেও উদ্যোগ নিয়েছে এক বা দুই সন্তান গ্রহণের।
     এর অন্য ফলাফল যাইহোক, ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে উল্লেখযোগ্য হারে জনসংখ্যা হ্রাসের আভাস মিলতে শুরু করেছে, অন্তত এমনটিই জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স ইভালুয়েশনের একদল গবেষক। তাদের দাবি, বিশ্ব জুড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে জন্মহার কমছে। এই হ্রাস এতটাই উদ্বেগের, আগামী শতাব্দী অর্থাৎ ২১০০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে। এমনকি কম-বেশি পৃথিবীর সব দেশেই এই একই ঘটনা ঘটবে।
     বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, ওই গবেষক দলটি জানাচ্ছে, পৃথিবীতে যে হারে জন্মহার কমছে তাতে ফার্টিলিটি রেট দীর্ঘদিন ধরেই হ্রাস পাচ্ছে। এখানে ফার্টিলিটি রেট বলতে বোঝানো হয়, একজন নারী গড়ে যতগুলি শিশুর জন্ম দেয় তার সংখ্যাকে। কোনও দেশের ফার্টিলিটি রেট যখন ২.১-এর নিচে নেমে আসে (অর্থাৎ সেই দেশের প্রতিটি নারী গড়ে ২.১টির থেকেও কম শিশু ধারণ করে), তখন ধরে নেওয়া হয় সেই দেশের জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
     ওই গবেষক দলটির দাবি অনুযায়ী, ১৯৫০ সাল নাগাদ যেখানে পৃথিবীর ফার্টিলিটি রেট ছিল ৪.৭, সেখানে ২০১৭ সালে সেই রেট হ্রাস পেয়ে পৌঁছায় ২.৪-এ। অর্থাৎ বিগত ৬৭ বছরে সমগ্র পৃথিবীর মোট ফার্টিলিটি রেট হ্রাস পেয়েছে ২.৩। বলা যায় প্রায় অর্ধেকে পৌঁছিয়েছে। তাঁদের হিসাব অনুযায়ী, এইভাবে চলতে থাকলে ২০৬৪ সাল নাগাদ পৃথিবীর ফার্টিলিটি রেট কমে হবে ২.১। অর্থাৎ ওই বছরই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা সর্বোচ্চ স্তর ছুঁয়ে যাবে। তখন পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯৭০ কোটির কাছাকাছি। এরপর থেকেই ফার্টিলিটি রেট ২.১-এর নিচে নেমে আসবে এবং ২১০০ সাল নাগাদ ওই রেট হবে ১.৭-এরও কম। পৃথিবীর জনসংখ্যা তখন হ্রাস পেয়ে হবে প্রায় ৮৮০ কোটি। এমনিতেই বর্তমানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৭৭৯ কোটির কাছাকাছি প্রায়।
     এই জন্মহার কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে তাঁরা মনে করছেন, শিক্ষার প্রসার ও বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে নারী সমাজের অংশগ্রহণকে। সেই সঙ্গে এর অন্যতম কারণ হিসাবে জন্মনিরোধকের সহজলভ্য ও উন্নতিকরণকেও উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
     ওই গবেষক দলটি থেকে আরও জানা যাচ্ছে, এর প্রভাব যেমন একদিকে ইতিবাচক আবার অন্যদিকে নেতিবাচকও হতে পারে। পরিবেশের জলবায়ু পরিবর্তন সহ অন্য বিভিন্ন দিক থেকে বিচার করলে এর প্রভাব ইতিবাচক হবে। যে কোনও দেশের পক্ষেও এটিকে সাফল্য বলে ধরে নেওয়া যাবে।
     কিন্তু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে এর। কারণ ওই গবেষক দলের ধারণা, এর ফলে ২১০০ সাল নাগাদ মানুষের মধ্যে বয়স ভিত্তিক এক বিরাট বৈষম্য তৈরি হবে পৃথিবীতে। তখন যুবক শ্রেণীর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে বেড়ে যাবে বয়স্কদের সংখ্যা। তাঁদের হিসাবে ২০১৭ সালে যেখানে ৫ বছরের কম বয়সীদের সংখ্যা ছিল ৬৮ কোটি ১০ লাখ, ২১০০ সালে তা কমে হবে ৪০ কোটি ১০ লাখ। আবার ২০১৭ সালে বয়স্কদের সংখ্যা যেখানে ছিল ১৪ কোটি ১০ লাখ, সেখানে ২১০০ সাল নাগাদ বেড়ে হবে ৮৬ কোটি ৬০ লাখ। যাকে এক বিরাট সামাজিক পরিবর্তন বলেই মনে করা হবে।
Advertisement
Previous articleগ্রহাণু ‘২০২০এনডি’ কি পৃথিবীর পক্ষে বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে!
Next articleলকডাউনে এ যেন এক অচেনা শান্তিনিকেতন!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here