কয়েক হাজার বছর ধরে মশাদের মধ্যে রক্তপানের স্বভাব তৈরি হয়েছে

Advertisement
মশার রক্তপানের স্বভাব এই পৃথিবীতে আবির্ভাবের প্রথম দিকে তাদের মধ্যে ছিল না। কয়েক হাজার বছর ধরে ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে। গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, শুষ্ক অঞ্চল, বিশেষ করে যেখানে মাঝে মধ্যে জলের অভাব দেখা দেয়, সেই অঞ্চলের মশারাই রক্ত পান করে থাকে। তবে সব মশা রক্ত পান করে না। – ছবি : সংগৃহীত

habit of drinking blood has been created in mosquitoes for thousands of years 2

অনলাইন পেপার : ভারতীয় উপমহাদেশে মশার কামড়ে জর্জরিত হতে হয়নি, এমন অভিজ্ঞতা বোধহয় কারোরই নেই। এ অঞ্চলের প্রায় প্রত্যেককেই প্রায় প্রতিদিনই মশার সম্মুখীন হতে হয়। শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ হয়, দক্ষিণ আমেরিকা বা আফ্রিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলিতে মশার বাড়-বাড়ন্ত এত ব্যাপক, যে মাঝে মধ্যে বাধ্য হতে হয় মশা নিধন অভিযান চালাতে। কিন্তু মশার বংশ ধ্বংস হচ্ছে কোথায়? প্রবল শীতের দিনগুলি বাদ দিলে বছরের বাকি দিনগুলি শুধু মশা তাড়িয়েই পার করে দিতে হয়।
     মশা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, গোদ, চিকুনগুনিয়া রোগগুলির জীবাণুর বাহক, একথা কারোরই অজানা নয়। এছাড়াও পরোক্ষভাবে মশা আরও কিছু রোগের জন্মদাতা। মশা নিধন করতে বর্তমানে যে বিষাক্ত কিটস্ ব্যবহার করা হয়, সেগুলির থেকেও কম জটিল রোগের জন্ম হয় না। পরিবেশে মশার এমনিতেই কোনও উপকারিতা নেই। তাই এদের পরিবেশের অন্যতম প্রধান শত্রু বললেও ভুল বলা হবে না।
     কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই জানতে ইচ্ছা করে, মশার রক্ত পানের রহস্য আসলে কী? এই রহস্যও কম-বেশি হয়তো কারোরই এখন অজানা নেই। তবুও আর একবার উল্লেখ করতে হয়, আসলে ডিম পাড়ার জন্যেই মশা রক্ত পান করে থাকে। তাই শুধুমাত্র স্ত্রী মশাদেরই রক্ত পান করতে দেখা যায়। পান করা এই রক্ত তাদের খাদ্যের চাহিদা মেটায় না। শুধুমাত্র গর্ভাশয়কে সতেজ রাখতে রক্তকে জলীয় উপাদান হিসাবে তারা ব্যবহার করে।
     মশার এই রক্তপানের দৃশ্য দেখলে হয়তো কল্পকাহিনীর ড্রাকুলার কথা মনে পড়ে যাবে। অথচ মশার সঙ্গে ড্রাকুলার মিল কোনও অংশেই নেই। মশা শুধুমাত্র তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ ডিমগুলিকে তাদের গর্ভাশয়ে বাঁচিয়ে রাখতেই রক্ত পান করে থাকে। অথচ এই বিশ্বে আবির্ভাবের প্রথম দিকে এই স্বভাব তাদের মধ্যে কখনওই ছিল না। এই স্বভাব ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে কয়েক হাজার বছর ধরে, এমনটিই সম্প্রতি দাবি করেছে নিউ জার্সির প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাঁদের সেই দাবি প্রকাশিত হয়েছে ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’-এ।
     নিউ সায়েন্টিস্ট-এর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, শুষ্ক এলাকায় নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য, বিশেষ করে প্রজননের সময় যখন জলের অভাব দেখা দেয়, তখন জলের অভাব মেটাতে বা গর্ভাশয়কে সিক্ত রাখতে স্ত্রী মশারা রক্ত পান করতে শুরু করে। ওই গবেষকরা আফ্রিকার অ্যাডিস ইজিপ্ট মশা নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তাঁদের দাবি, সব মশা-ই যে রক্ত পান করে তা কিন্তু নয়। শুধুমাত্র শুষ্ক অঞ্চল অর্থাৎ খরা প্রবণ বা উত্তাপ বেশি অঞ্চলগুলিতে, যেখানে মাঝে মধ্যে জলের অভাব দেখা দেয়, সেই অঞ্চলগুলির মশাদের মধ্যেই এই রক্তপানের স্বভাব রয়েছে। তবে এই স্বভাব প্রথম থেকেই তাদের মধ্যে ছিল না। হাজার হাজার বছর ধরে তাদের মধ্যে এই স্বভাব তৈরি হয়েছে, যা এখনও বর্তমান।
Advertisement
Previous articleআদৌ কি ইউএফও-এর অস্তিত্ব রয়েছে, নাকি পুরোটাই ভুয়ো?
Next articleবর্ষায় জল বাড়লেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গোটা গ্রাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here