ব্রহ্মাণ্ডে খোঁজ পাওয়ার পথে ৩৬টি উন্নত ভিনগ্রহী সভ্যতার

Advertisement
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, আকাশগঙ্গা ছায়াপথেই ৪টে থেকে ২১১টি সভ্যতার অস্তিত্ব রয়েছে। তার মধ্যে ৩৬টি সভ্যতা রীতিমতো উন্নত। এমনকি চেষ্টা করলে এদের সঙ্গে সংকেত আদান-প্রদানও করা যেতে পারে। হয়তো এদের সভ্যতা পৃথিবীর থেকেও ঢের গুণ বেশি উন্নত। – ছবি : সংগৃহীত

ব্রহ্মাণ্ডে খোঁজ পাওয়ার পথে ৩৬টি উন্নত ভিনগ্রহী সভ্যতার
রঞ্জন সরকার : অনন্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে মানুষ কবে থেকেই ভেবে আসছে, এই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে সে হয়তো একা নয়। তার মতো বা তার থেকেও আরও অনেক উন্নত প্রাণী আছে ব্রহ্মাণ্ডের কোনও না কোনও প্রান্তে। আর এই অদ্ভুত ভাবনার কারণে ব্রুনো-কে মরতে হয়েছিল অনেককাল আগেই। বাইবেল বিরোধী কথা বলার জন্য বেচারাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল সেসময়ে। অদ্ভুতভাবে, আজ এত বছর পর বিজ্ঞান স্বগর্বে ঘোষণা করছে, ‘এই ব্রহ্মাণ্ডে মানুষ একা নয়’।
     পৃথিবী যে গ্যালাক্সিতে অবস্থান করছে, সেই গ্যালাক্সিতেই পৃথিবীর মতোই অন্তত ৩৬টি উন্নত সভ্যতাযুক্ত গ্রহ রয়েছে। এমনকি তারা হয়তো মানুষের থেকেও উন্নত। এমনটা দাবি করা হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। যা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এ।
     ১৯৬১ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্র্যাঙ্ক ড্রেক একটি সমীকরণের মাধ্যমে সেই সব ভিনগ্রহী সভ্যতা খোঁজার কথা বলেছিলেন। সমীকরণটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ড্রেক ইক্যুয়েশন’। গ্যালাক্সিতে প্রতি নিয়ত কত নতুন নতুন নক্ষত্র জন্ম নিচ্ছে, কোন সময়সীমার মধ্যে তাদেরকে পাঠানো সংকেত পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে, এই ছিল গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। যদিও তাঁর এই সমীকরণে সভ্যতা খোঁজার ব্যাপারে তৈরি হচ্ছিল অনেক অনিশ্চয়তা। সমীকরণটিতে কিছু সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল অনিশ্চিত, আবার কিছু ক্ষেত্রে কয়েকশো কোটি সভ্যতার অস্তিত্বেরও নিশ্চয়তা ছিল।
     তাই সমীকরণটিতে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী কনসেলিস কিছুটা সংস্করণ করেন। তারপর নতুন সমীকরণটি দিয়ে যে গবেষণা চালানো হয়েছে, তাতে দেখা গেল পৃথিবীর ছায়াপথে ৪টে থেকে ২১১টি সভ্যতা রয়েছে। আর এদের মধ্যেই চেষ্টা করলে সংকেত আদান-প্রদান করা যেতে পারে কমপক্ষে ৩৬টি সভ্যতার সঙ্গে।
ব্রহ্মাণ্ডে খোঁজ পাওয়ার পথে ৩৬টি উন্নত ভিনগ্রহী সভ্যতার
     জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ওই সভ্যতাগুলি গড়ে উঠেছে পৃথিবীর মতোই। যেমনভাবে পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে উন্নত প্রাণী, ঠিক তেমনিভাবে ওই ভিনগ্রহগুলিতেও উন্নত প্রাণীর আবির্ভাব ঘটতে পারে। যদিও তারা দেখতে কেমন, সে ব্যাপারে কোনও আন্দাজ করতে পারছেন না কেউ-ই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই ভিনগ্রহীদের দৈহিক আকার ভয়ানক নাও হতে পারে। হয়তো তারা দেখতে পৃথিবীবাসী মানুষের থেকেও সুন্দর হতে পারে। আর এও হতে পারে তাদের কাছে মানুষই হবে ভয়ানক দর্শন।
     তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তারা কোথায়? ওই গবেষণাপত্রটি বলছে, পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের যে বুদ্ধিমান জীব বসবাসকারী গ্রহটি অবস্থান করছে, তার দূরত্ব মাত্র ১৭ হাজার আলোকবর্ষ। স্বাভাবিকভাবে এই পথ অত্যন্ত দীর্ঘ হলেও জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় এই দূরত্ব অবশ্য কিছুই নয়।
     কিন্তু এতো গেল শুধুমাত্র পৃথিবীর ছায়াপথ ‘আকাশগঙ্গা’-র হিসাব। এই অনন্ত মহাকাশে এরই মতোই রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি। অর্থাৎ আরও ভিনগ্রহী সভ্যতা। এদের মধ্যেই হয়তো কোনও কোনও সভ্যতা মানুষের সভ্যতার থেকেও ঢের গুণ বেশি উন্নত। বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে তাদের চলাচল হয়তো আলোর থেকেও অনেক গুণ বেশি দ্রুত গতির। কিছু জ্যোতির্বিজ্ঞানীর ধারণা, মানুষ তাদেরকে সন্ধান পাওয়ার আগেই তারাই খুঁজে নেবে মানুষের সভ্যতাকে। কিংবা পথ হারিয়ে ‘ল্যান্ড’ করবে এই নীল পৃথিবীতে।
Advertisement
Previous articleযক্ষ্মা রোগীদের অন্যতম নিরাপদ আশ্রয় ছিল বীরভূমের ‘নিরাময় টিবি স্যানিটোরিয়ম’
Next articleআমফানের এতদিন পরেও তেমন স্বাভাবিক হল না সুন্দরবনের জনজীবন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here