করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় আমাজনের আদিবাসীরা গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এমনিতেই সভ্য সমাজের সংস্পর্শে থাকতে পছন্দ করে না তারা। গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করলেও চিন্তা থেকেই যাচ্ছে তাদেরকে নিয়ে। কারণ তখন তাদের অবস্থা বুঝতে পারা একেবারেই সম্ভব হবে না। – ছবি : সংগৃহীত |
এমনিতেই আমাজনের জঙ্গলে একাধিক আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। তারা মূলত সভ্য লোকালয়ের সংস্পর্শের বাইরেই থাকতে পছন্দ করে। তাই সভ্য সমাজের সঙ্গে খুব বেশি মেলামেশা করতে তাদের দেখা যায় না। আমাজনের জঙ্গলে এমনও অনেক আদিবাসীর বসবাস রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব এখনও প্রায় অজানা রয়ে গিয়েছে বিশ্ববাসীর কাছে। গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করাও অনেকটা দুঃসাধ্য প্রায়। আমাজনের জঙ্গলকে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর জঙ্গলও বলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে এই জঙ্গলের গভীরে অজানা অনেক আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসতি থাকতে পারে। যাদের দেখা পাওয়া সত্যিই বিরল। তারা মূলত বন্য জন্তুদের সঙ্গে সংগ্রাম করে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে। তাদের আধুনিক সভ্যতার আলোয় নিয়ে আসাও প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু কিভাবে আমাজনের এই বিচ্ছিন্ন আদিবাসীদের মধ্যে করোনার প্রকোপ শুরু হল, তা অবশ্য জানা যায়নি। যদিও এর আগেও অনেকবার ওই সমস্ত আদিবাসীর মধ্যে হাম বা ইনফ্লুয়েজার মতো রোগ দেখা দিয়েছিল। তারা সেগুলিকে সামলাতে পারলেও করোনার থেকে কিছুতেই নিস্তার মিলছে না তাদের। ব্রাজিলের ইনডিজেনাস পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশন সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত আমাজনের আদিবাসীদের প্রায় ৭ হাজার ৭০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর তাদের দেখাশুনার দায়িত্বে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারাও এখন আর আদিবাসীদের দেখাশুনা করতে পারছে না।
জনবসতির কাছাকাছি থাকা আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকাংশই এখন স্থান পরিবর্তন করে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করতে বাধ্য হচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্রাজিলের ক্রুজইরিনহো, উমারিইয়াকা গ্রামগুলি প্রায় জনবসতি শূন্য হয়ে গিয়েছে। তবে আদিবাসীরা গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করলেও চিন্তা থেকে যাচ্ছে অন্য দিক থেকে, দাবি করছেন কিছু বিশেষজ্ঞ। তাঁরা জানাচ্ছেন, গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করলে তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে আদিবাসীরা কি অবস্থায় থাকবে তা জানার আর কোনও উপায় থাকবে বা। আবার আমাজনের গভীর জঙ্গলের পরিবেশ অতি মারাত্মক। সেখানে তুলনামূলক অধিকতর দুর্গম পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করতে হতে পারে তাদের।