Advertisement
সুজয় ঘোষাল : লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকে অনেক বুদ্ধিজীবী হয়তো ভেবেছিলেন লকডাউনের এই সময়টাকে সবচেয়ে বেশী উপভোগ করবেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। কারণ দেশের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই মুহূর্তে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। স্কুল-কলেজ বা অন্য যে কোনও ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, তাও সুনিশ্চিত করে বলতে পাছেন না কেউই। তাই শিক্ষাক্ষেত্র থেকে আপাতত অনেকটাই দূরে থাকতে হচ্ছে শিক্ষকদেরও (যদিও অনেকেই অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন ঘরে বসে)।
তবে এই ধরনা থেকে বেরিয়ে ব্যতিক্রমী মনোভাব দেখাচ্ছেন অনেক শিক্ষক–শিক্ষিকা। আর্ত, দুঃস্থ, অসহায় মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে সাঁইথিয়া ব্লকের অন্তগর্ত ধোবাজল আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুভাষচন্দ্র মু্র্মু-র নাম। গত ১২ মে সাঁইথিয়া ব্লকের ভ্রমরকোল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তগর্ত নপাড়া গ্রামে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থে ও উদ্যোগে ২৫টি পরিবারের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিলেন তিনি। তাঁর ত্রাণ সামগ্রীতে ছিল ২ কেজি চাল, সয়াবিন বড়ি, লবণ ও একটি সাবান।
সুভাষচন্দ্র বাবুর এই মহতী উদ্যোগে সামিল হতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ওই গ্রামের অনেক সুহৃয় মানুষও। নপাড়া গ্রামের আনন্দ সর্দার, টুরকো মু্র্মু, সোম মু্র্মুরা জানালেন, “সুদীর্ঘ লকডাউনে আমাদের আয় কমে গিয়েছে। তাই আমাদের মতো পরিবারের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য আমরা অনেকেই উপকৃত হলাম”।
শুধু তাই নয়, সুভাষ বাবু ওই দিন সমস্ত গ্রামবাসীকে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও সচেতন বার্তা দিলেন। তিনি জানালেন, “আমি ছোট থেকেই এই গ্রামে বড় হয়েছি। তাই এখানকার গরিব দুঃস্থ মানুষদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছি। এই করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় আমার গ্রামের মানুষগুলো যাতে জঠর জ্বালা নিয়ে চিন্তিত না হয়, সেজন্য সামান্য খাদ্যসামগ্রী মানুষের হাতে তুলে দিলাম। এইকাজে ব্রতী হতে পেরে ভালো লাগছে”। সুভাষ বাবু আরও জানলেন ভবিষ্যৎ সময়ে তিনি এই ভাবেই মানুষের সেবায় এগিয়ে আসবেন।
Advertisement
Nice