Advertisement
আমফানের তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। মূলত এই জেলাগুলি প্রায় ধবংস হয়ে গিয়েছে বলা যায়। অপর দিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ঝড়ের রেশ কিছুটা কম হলেও ঝড় ও বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে বিস্তর।
|
পল মৈত্র : ২০ এপ্রিল রাতের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে কিছুটা ছন্দপতন ঘটল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার। তবে এখানে ঝড়ের মাত্রা কম হওয়াতে অনেকটা স্বস্তি পেয়েছেন জেলাবাসীরা। কিন্তু এর মাঝেও ক্ষতি হয়েছে ফসলের। কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়েছে কাঁচা এবং টিন ও খড় দিয়ে ছাওয়া বাড়িগুলির।
২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় বছরের প্রথম বড়ো সাইক্লোনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখ দেখতে হয়েছে কলকাতা সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলী জেলাকে। কলকাতা এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা পরিণত হয়েছে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে। ঝড়ের দিন থেকে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ওই জেলাগুলির অনেক জায়গাতেই। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে দক্ষিণের কয়েকটি জেলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, একথা ঝড় শেষ হওয়ার পরপরই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সকলকে সচেতন ও নিরাপদ থাকার কথাও বলেছেন তিনি।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর সহ অন্যান্য জায়গাতে প্রচন্ড ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। অনেক জায়গায় মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে। টিন ও খড়ের চাল উড়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখ দেখেছেন জেলার চাষিরা। এমনিতেই পাকা ধান তোলার মরশুম এখন। অধিকাংশ চাষিই মাঠের ধান কেটে এখনও ঘরে তুলতে পারেননি। তার আগেই তাঁরা পড়লেন এই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মধ্যে। মাঠের ধান মাঠেই পড়ে রয়েছে এখন। ঝড় ও বৃষ্টিতে বহু ধান ঝরেও গিয়েছে। তাই রীতিমতো মাথায় হাত পড়তে বাধ্য হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ওই চাষিদের।
এমনিতেই করোনা দমনে সমগ্র দেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চলছে লকডাউন। যদিও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা এখনও গ্রীন জোন হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে, কিন্তু জেলাবাসি বিপুল অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ মানুষগুলির অবস্থা এখন সবচেয়ে করুণ। চাষিরাও নিজেদের সাধ্যমতো ফসল ফলিয়ে উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। এরকম অবস্থায় জেলাবাসির ওপর আঘাত হানল ‘আমফান’।
এই জেলায় ঝড়ের রেশ কিছুটা কম হলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিস্তর। তবে প্রাণহানির এখনও পর্যন্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ঝড়ের পরের দিন সকালে জেলার চিত্রটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। চাষের ক্ষেতগুলো দেখলে মনে হবে, কোনও বিশালাকার দৈত্য সারা রাত ব্যাপী এখানে তাণ্ডব নৃত্য ঘটিয়েছে। গঙ্গারামপুর সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্য অঞ্চলগুলির ছবিও প্রায় একই।
Advertisement