করোনা মোকাবিলায় কার্যকারী ভূমিকা নিতে পারে প্রাচীন আয়ুর্বেদ

Advertisement
br
ডাঃ অনুপম গঙ্গোপাধ্যায় : বিগত কয়েক মাস ধরে সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারত করোনা অতিমারিকে কীভাবে বাগে আনা যায়, তা নিয়ে শুরু করেছেবিস্তর আলোচনা, পরামর্শ, গবেষনা ইত্যাদি। মর্ডান মেডিসিন টেকনোলজির পাশাপাশি চলছে বিকল্প চিকিৎসারও সন্ধান। এ ক্ষেত্রে শতাব্দী প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ভূমিকা কি হতে পারে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ূষ (AYUSH) মন্ত্রক সম্প্রতি যে উপদেশ (Advisory Note) দিয়েছেন, তা নিয়ে চিকিৎসক ও নেট দুনিয়ার শিক্ষিতরা আলোচনা শুরু করেছেন। কিন্তু আপামর জনগণ যাতে অতি সহজ, ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন, তার জন্য সংক্ষেপে এখানে কিছুটা আলোচনা করা হল
     প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ২টি মূল মন্ত্র রয়েছে, স্বস্থস্য, স্বাস্থ্য রক্ষনম্” ও “আতুরস্য বিকার প্রশমনম্ চ”। অর্থাৎ সুস্থ শরীরের জন্য স্বাস্থ্য রক্ষা বা Preventive Therapy এবং আতুরের বিকাশ প্রশনম অর্থাৎ Curative Therapy বর্তমান বিশ্ব খুব ভালো করেই জেনে গিয়েছে,এই অতিমারির প্রতিরোধে এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকারী প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন নেই এবং ভাইরাসটির জেনেটিক গঠনও দেশ, তাপমাত্রা ভেদে পরিবর্তনশীল।
     তাই আয়ুর্বেদের প্রথম মন্ত্র এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা immunity boost করে রোগ প্রতিহত করবে। এছাড়াও দিনচর্চা বা ঋতুচর্য্যার ভূমিকাও এক্ষেত্রে কিছু কম নয়। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এখানে উল্লেখ করা হল –
     প্রথমত, সাধারণভাবে সারাদিন ধরে মৃদু উষ্ণ জল পান করা। প্রত্যহ ৩০ মিনিট যোগাসন, প্রাণায়ম, ধ্যান, ইত্যাদির অভ্যাস করা। রান্নায় আদা, হলুদ, জিরা, ধনে, রসুন ইত্যাদির ব্যবহার করা
     দ্বিতীয়ত, আয়ুর্বেদ উপায়ে প্রতিরোধ শক্তিবর্ধনের জন্য সকালে প্রত্যহ ১ চামচ চ্যবনপ্রাশ সেবন করা। তুলসী, দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ সহযোগে তৈরি পাচন, যাতে স্বাদবর্ধক হিসেবে গুড়, লেবু, কিসমিস বা মনাক্কা দেওয়া যেতে পারে। গোন্ডেন মিল্ক অর্থাৎ ১-২ চামচ হলুদ গুড়ো ১৫০ মিলিলিটার দুধে মিশিয়ে দিনে একবার করে পান করাও যেতে পারে
     তৃতীয়ত,শুষ্ক কাশি, গলা খুসখুসভাব প্রশমনে পুদিনা পাতা বা জোয়ান সহযোগে গরম জলে বাষ্পস্বেদন করা। চিনি বা মধু সহযোগে মুখে লবঙ্গ চূর্ণ রাখা। সম্ভব হলে টক দই খাওয়া। শরীরে পর্যাপ্ত সূর্যালোক নেওয়া।
     বিশ্বাস থাকলে করনো মোকাবিলা কার্যকারী দিশা দেখাতে পারে ভারতের প্রাচীন এই চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে নিরাময় না পেলে বা উপসর্গ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও অতি অবশ্যই সরকারি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিধিনিধেষ সঠিকভাবে পালন করা উচিত। তবেই হারানো যেতে পারে করোনা অতিমারিকে।
(লেখক সরকারি আয়ুর্বেদ চিকিৎসক, আমোদপুর, বীরভূম)
  • All Rights Reserved
Advertisement
Previous articleলকডাউনে পেটে টান পড়েছে বিষয়পুরের বহুরূপীদের
Next articleকরোনা শাসিত পৃথিবীতে আগামী দিনে বুদ্ধের বাণী পথ দেখাতে পারে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here