Advertisement
অনলাইন পেপার : শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই যে ভূ-কম্পন হতে পারে, তার কোনও কথা নেই। মানুষও ভূ-কম্পন সৃষ্টি করে থাকে। একই সঙ্গে অধিক মানুষ যখন ভূ-পৃষ্ঠের ওপর পদচারণ করে অথবা কলকারখানা-যানবাহন চালনা করে তখনও ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। কিন্তু তার মাত্রা এতটাই কম থাকে, তা অনুভব করা মানুষের পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেই মাত্রা ধরা পড়ে যন্ত্রে।
সম্প্রতি ফোর্বস-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেল, পৃথিবীর ওপর মনুষ্য সৃষ্ট কম্পন উল্লেখযোগ্যভাবে বেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে পূর্বের তুলনায়। আর তা ধরা পড়েছে সিসমোমিটার (Seismometer) যন্ত্রে। সিসমোমিটার দিয়ে সাধারণত ভূ-ত্বকের কম্পন পরিমাপ করা হয়। পূর্বে একে ‘সিসমোগ্রাফ’ বলা হত। ১৯৩৫ সালে চার্লস এফ রিখটার এটি আবিষ্কার করেছিলেন। বর্তমানে এই যন্ত্রের আধুনিক সংস্করণটি অনেক উন্নত। সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর কম্পনও এতে পরিমাপ করা সম্ভব। ভূ-পৃষ্ঠের যে কোনও কম্পন এই যন্ত্রে ধরা পড়ে অতি নিখুঁতভাবে। পৃথিবীর সমস্ত দেশেই এখন এই যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।
ফোর্বস-এর ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এখন লকডাউন চলছে। এ অবস্থায় সমগ্র বিশ্বের ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ গৃহবন্দি। পূর্বের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা। তাই পৃথিবী পৃষ্ঠের ওপর মানুষের পদচারণ কমে গিয়েছে। এর পাশাপাশি অনেকটাই কমে গিয়েছে কলকারখানা বা যে কোনও প্রকার যানবাহন চলাচলও। যার ফলে বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র মনুষ্য সৃষ্ট ভূ-কম্পন গোটা বিশ্ব জুড়ে উৎপন্ন হচ্ছে খুবই কম। যেহেতু আধুনিক সিসমোমিটার যন্ত্রে অতি সূক্ষ্ম ভূ-কম্পনও নিখুঁতভাবে পরিমাপ করা যায়, তাই সেই যন্ত্রেও ধরা পড়ছে ভূ-কম্পন কমে যাওয়ার এই হার।
ওই রিপোর্ট থেকে আরও জানা যাচ্ছে, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স বা ইতালির মতো করোনায় অধিক আক্রান্ত দেশগুলিতে মানুষ এখন পুরোপুরি গৃহবন্দি হয়ে রয়েছে। যার ফলে ওই সমস্ত দেশগুলিতে মনুষ্য সৃষ্ট ভূ-কম্পন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে। বিশ্বের অন্য প্রান্তেও এই একই দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে।
- All Rights Reserved
Advertisement