করোনা কেড়ে নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষের কর্মজীবন

Advertisement
Coi
বিজয় ঘোষাল : সমগ্র দেশ জুড়ে চলছেলকডাউন শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এখন স্বেচ্ছায় এইলকডাউন’-কে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে কারণ করোনা সংক্রমণকে রুখতে এছাড়া আর কোনও পথও খোলা নেই বিশ্ববাসীর কাছে
     ২৪ মার্চ থেকে করোনা মোকাবিলায় ভারতে শুরু হয়েছে ২১ দিন ব্যাপী লকডাউনযা শেষ হতে চলেছে আগামী ১৪ এপ্রিল কিন্তু দিন যত এগিয়েছে ভারতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৪ মার্চ অর্থাৎলকডাউন’-এর শুরুর দিকে যেখানে করোনা আকান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩৬ জন, সেখানে এখন বেড়ে দাঁড়িয়ে সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুও ২৪ মার্চ মৃতের সংখ্যা ছিল ১০ জন, যা এখন দেড়শো অতিক্রম করে ফেলেছে তাই লকডাউন’-এর সময়সীমা বাড়তে পারে বলে অনুমান করছে অধিকাংশ দেশবাসী যদিও এ পুরোটাই নির্ভর করছে দেশের রাজ্য সরকারগুলি এবং কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর
     দেশ জুড়ে চলা এই লকডাউনএখন করোনা মোকাবিলার এক মহার্ঘ্য এবং অদ্বিতীয় ওষুধ, একথা স্বীকার করতেই হবে তবে একথাও অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই, এইলকডাউন প্রত্যক্ষভাবে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক বির্পযয় ডেকে আনতে বাধ্য এই বিপর্যয়ের কথা এক প্রকার স্বীকারও করে নিয়েছে দেশের অর্থনীতিবিদ সহ ছোট-বড় বিভিন্ন উদ্যোগপতিরাও
     জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই দাবি করেছে, ‘লকডাউন’-এর জেরে সারা পৃথিবী জুড়ে কর্মহীন হয়ে পড়বে প্রায় ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন আইএলওও ওই এই কথা বলছে তারা বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর খুব করুণ অবস্থার মধ্যে পড়তে চলেছে বিশ্বের বেকারত্বের সমস্যা তাদের মতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা তৈরি হতে পারে ভারত, ব্রাজিল আর নাইজেরিয়ার
     ভারতের উপদেষ্টা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)এর সমীক্ষা অনুযায়ী, লকডাউন’-এর জন্য ভারতের প্রায় ১৩ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের কর্মহীন হওয়ার অশংঙ্কা রয়েছে। এদেশের প্রায় ৪৮ কোটি মানুষ যুক্ত রয়েছে অংসগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গেএর মধ্যে গ্রামে রয়েছে ৩৮ কোটি ও বাকি ১৪ কোটি মানুষ রয়েছে শহরাঞ্চলে। ইতিমধ্যেই দেশের শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রের এক বিশাল সংখ্যক মানুষলকডাউন’-এর ফলে গৃহবন্দি হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে অপরদিকে বেশ কিছু ক্ষুদ্রশিল্প সহ হোটেল-রেস্তোরা, পরিবহন, পর্যটন প্রভৃতি শিল্পও এখন সম্পূর্ণ বন্ধ
     সিএমআইইএর একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, লকডাউন’-এর আগে ১৬ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত ভারতে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৪ শতাংশ ২৩ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত বেকারত্বের সেই হার বেড়ে হয়েছে ২৩.৪ শতাংশ এবং পরবর্তী ৩০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩.৮ শতাংশে সবচেয়ে আশঙ্কার, ‘লকডাউন’-এর সময়কালে যদি বেকারত্বের হার এই ভাবে ক্রমবর্ধমান হয়, তবেলকডাউনসমাপ্তিতে সেই হার কোথায় গিয়ে পৌঁছবে!
     ইতিমধ্যেই বহু বেসরকারী সংস্থা তাদের নিযুক্ত কর্মীদের ছাঁটাই করতে শুরু করেছে। কাজ না পেয়ে সমস্যায় পড়তে বাধ্য হচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলিও লকডাউন না ওঠা পর্যন্ত এখন তাদের ভরসা শুধু মাত্র সঞ্চিত অর্থের ওপর অপরদিকে সুদের হার ০.২৫% কমে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাজ পড়তে শুরু করেছে মধ্যবিত্তদেরও
     তাই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন, লকডাউন’-এর প্রভাবে সমস্ত বিশ্বের অর্থনীতি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের অর্থনীতিও ভেঙে পড়তে পারে বলে তাদের অনুমান
  • All Rights Reserved
Advertisement
Previous article‘লকডাউন’-এর সময়েও কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে রথীন্দ্র কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র
Next article‘লকডাউন’-এ কাজ হারাদের সহযোগিতা করছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here