Advertisement
জনদর্পণ ডেস্ক : ১৯ মার্চ সন্ধ্যা ৮টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জাতির উদ্দেশ্যে নিজের বক্তব্য জানালেন। এদিন তিনি সমগ্র ভারতবাসীর কাছে অনুরোধ করলেন আগামী ২২ মার্চ রবিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা ‘জনতা কারফিউ’ পালন করতে।
তাঁর কথায় বারবার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কথা চলে আসে। তিনি প্রথমেই জানালেন, সমগ্র বিশ্ব এই মুহূর্তে এক মারাত্মক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলছে। সাধারণত যখনই কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, তখন তা কয়েকটি দেশ বা রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু এবার এই দুর্যোগ সমগ্র মানব জাতিকে পুরো বিশ্ব জুড়ে সংকটে ফেলেছে।
এরপরই তিনি দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করলেন। এবং সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে কয়েক সপ্তাহ সময় চেয়ে নিলেন। তিনি জানালেন, এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞান করোনা মহামারী এড়ানোর জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের পরামর্শ দিতে পারেনি। তাই উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও বললেন, অন্য দেশগুলিতে যখন করোনার ব্যাপক প্রভাব পড়ছে, তখন এই প্রভাব ভারতেও যে পড়বে না এটা ধারণা করা সম্পূর্ণ ভুল। ভারত সরকার এই করোনা প্রসারের ট্র্যাক রেকর্ডের ওপর গভীর নজর রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন করোনা মোকাবিলায় দেশবাসীকে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বললেন। তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে বললেন, নিজেকে সংক্রামিত হওয়া থেকে এড়াতে এবং অন্যকে সংক্রামিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে। যেহেতু এর কোনও ওষুধ নেই, তাই নিজেকে সুস্থ রাখা এখন খুবই প্রয়োজন।
![]() |
ছবি : সংগৃহীত |
প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর বক্তব্যে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দেশবাসীকে ভিড় এড়িয়ে চলতে বললেন। বাড়ি থেকে না বেরনোর অনুরোধ করলেন। যতটা সম্ভব বাড়িতে বসে কাজ করতে বললেন। তিনি ৬৫ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিকে আগামী কয়েক সপ্তাহ বাড়িতেই থাকার কথা বললেন।
এরপরই তিনি দেশবাসীকে আগামী ২২ মার্চ রবিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই ১৪ ঘণ্টা ‘জনতা কারফিউ’ অনুসরণ করতে বললেন। তিনি কারফিউ সম্পর্কে বললেন, ২২ মার্চের এই কারফিউ-এর সফলতা এবং অভিজ্ঞতা আগামী দিনগুলির চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত করবে। এর জন্যে তিনি রাজ্য সরকারগুলিকেও নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসতে বললেন। কারফিউ প্রচারের জন্য তিনি প্রতিদিন ১০ জনকে ফোন করার কথা বললেন।
যাঁরা এতদিন নিঃস্বার্থভাবে বিভিন্ন স্থানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যদের সেবা করেছেন, তাঁদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ২২ মার্চ বিকাল ৫টায় সকলকে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ধন্যবাদ জানানোর অনুরোধ করলেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী এদিন জানালেন, করোনার থেকে উদ্ভূত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের জন্য অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড-১৯-অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। তিনি দেশবাসীকে অতিরিক্ত জিনিসপত্র মজুত না করার কথাও জানালেন।
বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে মারা গিয়েছে সাড়ে ৮ হাজারেও বেশি মানুষ। ভারতে এখনও পর্যন্ত ১৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মারা গিয়েছে ৪ জন। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এদিনের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement