Advertisement
জেএমপি : রাজধানী দিল্লি এখন যথেষ্ট শান্ত। যদিও পথের এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি চলা ‘অশান্তি’র দগদগে খত। এখনও দিল্লির ওই অংশ জুড়ে চলছে আশ্চর্য রকম নীরবতা। থমথম করছে চতুর্দিক। প্রচণ্ড ঝড়ের পর যেমন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সবকিছু, দিল্লির ওই অংশের এখন সেই দশা। স্থানীয়দের অনেকেই এখনও ঘোরের মধ্যে আছেন। তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না, চেনা পরিবেশটা কিভাবে এত সহজে বদলে যেতে পারে। আশ্চর্য রকমভাবে বিশ্বাস ভাঙতে পারে পরিচিত মানুষের সঙ্গে মানুষের। এসবের কী আদৌ প্রয়োজন ছিল?
পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলে স্থানীয়রা পথে বেরুচ্ছেন একে একে। দোকান খুলছে দু’একটি করে। তবে সব কিছু দেখলে মনে হবে, এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও বেশ কয়েকটা দিন লেগে যাবে।
শুধু দিল্লি নয়, দিল্লির এই ঘটনায় নড়ে উঠেছে সমগ্র দেশ। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশ জুড়েমানুষে মানুষে যে ধর্মীয় ভেদাভেদের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা চলছে, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে এক শ্রেণীর তরুণ যুবক। তাঁরা এগিয়ে আসছে সম্প্রীতির শক্ত সেতুবন্ধন গড়তে। সারাদেশের আর কোথাও তাঁরা দেখতে চান না দিল্লির মতো এই ‘অশান্ত’ পরিবেশ।
এদিন যেমন বীরভূমের সিউড়ি শহরে ‘অকাল রাখিবন্ধন’ উৎসবের আয়োজন করল একদল তরুণ। তাঁরা নিজের দেশ তথা জেলা এবং শহরকে সুন্দর সম্প্রীতির বন্ধনে বেঁধে রাখতে এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। সাধারণ পথ চলতি মানুষকে রাখি পরিয়ে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল নিজেদের মতো করে।
‘রামায়ণ’-এ উল্লেখ আছে, ভগবান শ্রীরামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য এক সময়ে মা দুর্গার অকালবোধন করেছিলেন। আবার ধর্মীয় ভেদাভেদ ঘোচাতে ১৯০৫ সালে রবীন্দ্রনাথ হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের হাতে রাখি বেঁধে দিয়েছিলেন। যদিও এদিন রাখিপূর্ণিমা ছিল না। ছিল না মা দুর্গার অকালবোধনের সময়কালও। কিন্তু দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রেখে তাঁরা চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। তাঁরা পথে নেমে এই ‘অকাল রাখিবন্ধন’ উৎসবের আয়োজন করল। রুখে দাঁড়ালো ধর্মীয় ভেদাভেদের বিরুদ্ধে।
তাঁদের দাবি, এভাবেই দুষ্টু ক্ষমতাকে বধ করে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদকে রুখে দেওয়া সম্ভব। তাঁরা এই অকাল উৎসব পালনের মাধ্যমে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে বার্তা পাঠাতে চাইল, দেশের সম্প্রীতি রক্ষা করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর।
Advertisement