Advertisement
জনদর্পণ ডেস্ক : ভারতে ‘লকডাউন’-এর চতুর্থ দিন পূরণ হল। ১৩০ কোটি ভারতবাসী এই মুহূর্তে এক প্রকার গৃহবন্দি। এ ছাড়া উপায়ও নেই। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘যেন–তেন প্রকার’-এ এভাবে কাটাতেই হবে দেশবাসীকে। কারণ শত্রু এখন দেশের অভ্যন্তরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘুরে বেড়াচ্ছে পথে–ঘাটে, যেখানে সেখানে। এ এমনই শত্রু, যাকে চোখে দেখা একেবারেই সম্ভব নয়। অনুভব করাও অসম্ভব। অতি সন্তর্পণে শরীরে প্রবেশের পর ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যাওয়াই এর একমাত্র কাজ। ইতিমধ্যে সমগ্র বিশ্বের প্রায় ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে চিরদিনের মতো ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে এই শত্রু রূপি ‘কোভিড–১৯’ করোনা ভাইরাস।
এর থেকে মুক্তির উপায় একমাত্র গৃহবন্দি। সামাজিক সংস্পর্শ থেকে সাময়িক দূরে থাকা এর প্রথম ও শেষ পাথেয়। সমগ্র ভারত ইতিমধ্যে এই পথই বেছে নিয়েছে। মনে রাখতে হবে, এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোনও স্থানই আর নিরাপদে নেই।
তবুও দেশের অনেকেই আছেন, যারা এই পথের পথিক হতে এখনও নারাজ। তাদের উদ্দেশ্যে এখানে অবশ্যই বলা কর্তব্য, ‘লকডাউন’ না মানতে চাইলে বা এখনই সচেতন হতে না চাইলে খুব শীঘ্রই দেখতে হবে ভয়ঙ্কর বিপদকে। এমনকি নিজের পাশাপাশি আরও কিছু মানুষকে বিপদের মুখে টেনে নিয়ে যাবে। ভারতে এর ফল হবে ভয়াবহ, বা তারও কিছু বেশি।
![]() |
‘লকডাউন’ না মেনে এখনও কিছু মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছে (ছবি : রঞ্জন সরকার) |
করোনার গরলে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। দেশটির জনঘনত্ব (প্রতি বর্গকিলোমিটারে) ২০৬ জন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি। দেশটির জনঘনত্ব (প্রতি বর্গকিলোমিটারে) মাত্র ৩৬ জন। স্পেনও আর এক আক্রান্ত দেশ, যেখানে মৃত্যুর মিছিল চিনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। এই দেশের বর্তমান জনঘনত্বও যথেষ্ট কম, মাত্র ৯৪ জন (প্রতি বর্গকিলোমিটারে)। জনঘনত্ব এত কম হওয়া স্বত্বেও ওই দেশগুলিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এছাড়া জার্মানি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশগুলির জনঘনত্বও এমন কিছু বেশি নয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও সারা বিশ্বের আধার বলা চলে এই দেশগুলিকে। তা স্বত্বেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম দশে রয়েছে দেশগুলি। এর সবচেয়ে বড়ো কারণ এই দেশগুলির কেউ–ই করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর প্রথম পর্যায়কে একেবারেই গুরুত্ব দেয়নি। ক্রমাগত উদাসীনতা দেখিয়ে গিয়েছে। ওই দেশগুলির অধিকাংশই এখনও সম্পূর্ণ দেশ জুড়ে ‘লকডাউন’ করেনি।
কিন্তু ৪৬৪ জনঘনত্ব (প্রতি বর্গকিলোমিটারে) নিয়েও করোনা সংক্রমণকে ভারত যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। জানুয়ারির শেষ দিকে করোনায় প্রথম আক্রান্ত হয় কেরলের এক ব্যক্তি। তারপর থেকে গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দেশের সরকার। বর্তমানে ২৩ মার্চ থেকে গোটা দেশকেই ‘লকডাউন’ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও আক্রান্তের সংখ্যা এদেশেও বাড়ছে প্রতিদিনই। কিন্তু লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে, আক্রান্তেরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে বিদেশিদের সংস্পর্শে এসেছে।
লক্ষ্য করলে আরও বোঝা যাবে, আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে যেভাবে দ্রুত গতিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, ভারতে সে তুলনায় যথেষ্ট কম। তার অন্যতম কারণ ‘লকডাউন’। তাই ‘লকডাউন’ পছন্দ হোক বা না হোক মানতেই হবে প্রত্যেককে।
ভারতের করোনা–গ্রাফ :
তারিখ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
২০ মার্চ পর্যন্ত
|
২৯৪
|
৪
|
২১.০৩.২০২০
|
৫৯
|
২
|
২২.০৩.২০২০
|
১০৮
|
২
|
২৩.০৩.২০২০
|
৩৮
|
২
|
২৪.০৩.২০২০
|
৩৭
|
১
|
২৫.০৩.২০২০
|
৭০
|
০
|
২৬.০৩.২০২০
|
১১৩
|
৫
|
২৭.০৩.২০২০
|
১৬৮
|
৪
|
মোট
|
৮৮৭
|
২০
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ৭৩ জন)
করোনা আপডেট (আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ) :
দেশ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
আমেরিকা
|
৯৩,৮৮১
|
১,৪২১
|
ইতালি
|
৮৬,৪৯৮
|
৯,১৩৪
|
চিন
|
৮১,৩৪০
|
৩,২৯২
|
স্পেন
|
৬৪,০৫৯
|
৪,৯৩৪
|
জার্মানি
|
৪৯,৩৪৪
|
৩০৪
|
ইরান
|
৩২,৩৩২
|
২,৩৭৮
|
ফ্রান্স
|
২৯,১৫৫
|
১,৯৯৬
|
ইংল্যান্ড
|
১৪,৫৪৩
|
৭৫৯
|
সুইজারল্যান্ড
|
১২,৩১১
|
২০৭
|
দক্ষিণ কোরিয়া
|
৯,৩৩২
|
১৩৯
|
সমগ্র বিশ্ব
|
৫৭৫,৭৪৭
|
২৬,৪০৭
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ১২৯,৯৮৮ জন)
* সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার, ভারতীয় সময় ২৭ মার্চ রাত ১১টা পর্যন্ত
- All rights Reserved
Advertisement
Thank you for your well-timed and strong message.
Dr Madhab Chattopadhyay
Hyderabad, India