Advertisement
অনলাইন পেপার : সব সিনেমা যে ‘হিট’ হবে, তার কোনও কথা নেই। তবে পরিচালক, প্রযোজক বা অভিনেতারা তাদের সেরাটা দিয়ে সব সময়ই চেষ্টা করে যায় সিনেমা হিট করার। আবার যে কোনও সিনেমার সাফল্যের পিছনে ‘দর্শক’-ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি অধিক দর্শকের মনের মতো কোনও সিনেমা তৈরি করা যায়, তবেই ব্যবসায়ে সাফল্য আসে, নচেৎ ‘ফ্লপ’ হতে বাধ্য।
আবার কোনও কোনও সিনেমা এতটাই সাফল্য পেয়ে যায়, যে তাকে ‘সুপার–ডুপার হিট’ তকমা দেওয়া হয়। ইতিহাসে এরকম সিনেমা অসংখ্য আছে। আজকের দিনের হলিউডের ‘হ্যারি পর্টার’ বা ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ সিরিজের কাল্পনিক সিনেমাগুলিকে ব্যবসায়িক সফলতার দিক থেকে ‘সুপার–ডুপার হিট’ বলা যেতেই পারে।
কিন্তু সেই সিনেমা যদি রিলিজের দীর্ঘদিন পরে হিট হয়, তবে ব্যাপারটা কেমন হতে পারে? হ্যাঁ, সম্প্রতি এরকমই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিবিসি সংবাদ সংস্থা। রিপোর্টটি থেকে জানা গেল, ‘কনটেজিয়ন’ হলিউড সিনেমাটি রিলিজ হয়েছিল ২০১১ সালে। তখন এটি অন্য সাধারণ সিনেমার মতোই বাজারে চলেছি। খুব যে সফলতা পেয়েছিল, তা কিন্তু নয়। কিন্তু ২০২০ সালে এসে অর্থাৎ দীর্ঘ ৯ বছর পর সেই সিনেমাটিই এবার ব্যবসায়ী সাফল্য পেল। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার বছরে ব্যবসায়ী দৃষ্টিকোণ থেকে যেখানে ৬০টি সিনেমার পিছনে ছিল, এবছর সেই সিনেমাটিই অষ্টম স্থানে চলে এসেছে।
আর এই সফলতার জন্য বিশেষজ্ঞরা করোনা ভাইরাসকেই দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, অনেকেই সিনেমায় দেখানো কাল্পনিক ভাইরাসের সঙ্গে বাস্তবের করোনা ভাইরাসের সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছে। তাই প্রচুর দর্শক ওই সিনেমাটি দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল কাল্পনিক ভাইরাসকে কেন্দ্র করে। সেখানে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে মাইকেল ডগলাস, গিনেথ প্যালট্রো, কেট উইনস্লেট, মেট ডেমন–এর মতো একাধিক অভিনেতাকে। সিনেমাটি নির্মাণ করেছিল ওয়ার্নার ব্রাদার্স।
![]() |
গিনেথ প্যালট্রো (ছবি : সংগৃহীত) |
কাল্পনিক এই সিনেমাটির গল্পের সঙ্গে বর্তমান করোনা ভাইরাসে বিশ্ব জুড়ে জর্জরিত পরিস্থিতির অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। গল্পে দেখানো হয়েছিল একজন মহিলা ব্যবসায়ী (এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গিনেথ প্যালট্রো) হংকং-এ এসে এক অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তার শরীরে এই ভাইরাসটি প্রবেশ করে হংকং-এর এক ব্যক্তির সাথে করমর্দনের ফলে। পরে এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় ‘এমইভি-১’। ভাইরাসটি বাদুড়ের মাধ্যমে প্রথমে শূকর ও পরে ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করেছিল। আশ্চর্য রকমভাবে বাস্তবেও ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস বাদুড়ের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে (যদিও এব্যাপারে এখনও কোনও সঠিক তথ্য কারও জানা নেই)।
সিনেমাটিতে ওই মহিলা ব্যবসায়ী পরে মারা যায়। তার ছেলেও ওই একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ওই ভাইরাস। সারা বিশ্বের প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় ভাইরাসটি। এখানেও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কাল্পনিক এমইভি-১ ভাইরাসের সঙ্গে বাস্তবের কোভিড-১৯ ভাইরাসের। কারণ উভয় ভাইরাসই শারীরিক স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াতে দেখা গিয়েছে।
তবে ওই কাল্পনিক ভাইরাসের সঙ্গে বাস্তবের ভাইরাসের বৈসাদৃশ্য অনেক। এখানে চিন থেকে সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও মৃত্যু হয়েছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার জনের মতো। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণেও আনা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া উভয় ভাইরাস সম্পূর্ণ আলাদা গোত্রের।
যাইহোক, কাল্পনিক এমইভি-১ ও বাস্তবের কোভিড-১৯ একেবারেই সম্পর্কহীন। এই দু’য়ের মধ্যে মিল পাওয়া নিছকই অকস্মাৎ ছাড়া আর কিছুই নয়। এব্যাপারে সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার স্কট জি বার্নস নিজেই এব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছেন।
- All Rights Reserved
Advertisement