Advertisement
সুজয় ঘোষাল ও বিজয় ঘোষাল : করোনা সংক্রমণ রুখতে ভারতে ‘লকডাউন’-এর ষষ্ঠ দিন পূরণ হল। ভারত সহ বিশ্ব জুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা বিশ্বের ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষের। তবে সুস্থ হয়েও উঠেছেন এক বিশাল সংখ্যক মানুষ, প্রায় দেড় লক্ষ।
![]() |
ছবি : সংগৃহীত |
কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারা যাবে, করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় প্রবীণদেরই ভিড় সবচেয়ে বেশি। যুবক শ্রেণী আক্রান্ত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুস্থও হয়ে উঠছে। তাই করোনায় আক্রান্তের এই সময়ে প্রবীণদের নিয়ে–ই চিন্তা সবচেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাদের শরীরে ‘ইমিউনিটি পাওয়ার’ বা প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, তারা করোনার বিরুদ্ধে অধিক সময় ধরে লড়াই করতে পারছে। প্রবীণদের ‘ইমিউনিটি পাওয়ার’ যুবক শ্রেণীর থেকে তুলনামূলক কম। তাছাড়াও প্রবীণরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুগার, হাই প্রেশার, হাইপার টেনশন বা হার্টের সমস্যায় ভোগেন। এতে তাদের ‘ইমিউনিটি পাওয়ার’ আরও কমে যায়। ফলে একবার করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে রিকোভার করার সুযোগ পাওয়া যায় অনেক কম।
ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে কর্ণাটকে। তিনি ৭৬ বছরের একজন বৃদ্ধ ছিলেন। দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান ৬৮ বছরের একজন বৃদ্ধা। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গেও প্রথম যাঁর মৃত্যু ঘটেছে তাঁর বয়সও এমন কিছু কম ছিল না, ৫৬ বছর। তাই করোনার থেকে প্রবীণদের অবশ্যই দূরে রাখা একান্ত প্রয়োজন।
তবে এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রমও আছে। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের লে লোকল শহরের ৯৫ বছরের বৃদ্ধা গেট্রুড ফেটন করোনা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। একটা সময়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা এমনই খারাপ ছিল, যে তিনি নিজেই জীবনের আশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত করোনার সঙ্গে সংগ্রামে তিনিই জয়ী হন।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতে ১০ মিলিয়ন প্রবীণ নাগরিক বসবাস করে ভারতে। তার মধ্যে ৬৫ শতাংশ প্রবীণ নাগরিক সন্তানদের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেদের জীবন সংগ্রামে ব্রতী রেখেছেন। কারণ সন্তানদের তাদের বাবা–মায়ের প্রতি অনিহা। একদিন কর্মক্ষেত্রে না বেরোলে পেট চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে ওই সমস্ত প্রবীণ নাগরিকদের। চিন্তা এঁদের জন্যেও কিছু কম নয়। একবার করোনার গরলে আটকা পড়লে, পাশে দাঁড়ানোর মতো আর কেউই থাকবে তাঁদের।
তাই দেশের প্রতিটা নাগরিককে অবশ্যই বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে নিজের বাড়ি ও পাশের বাড়ির প্রবীণদের দিকে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই ঝুঁকি নেওয়া চলবে না। আর অবশ্যই মানতে হবে সরকারি নির্দেশ।
ভারতের করোনা–গ্রাফ :
তারিখ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
২০ মার্চ পর্যন্ত
|
২৯৪
|
৪
|
২১.০৩.২০২০
|
৫৯
|
২
|
২২.০৩.২০২০
|
১০৮
|
২
|
২৩.০৩.২০২০
|
৩৮
|
২
|
২৪.০৩.২০২০
|
৩৭
|
১
|
২৫.০৩.২০২০
|
৭০
|
০
|
২৬.০৩.২০২০
|
১১৩
|
৫
|
২৭.০৩.২০২০
|
১৬৮
|
৪
|
২৮.০৩.২০২০
|
৮৯
|
০
|
২৯.০৩.২০২০
|
৪৮
|
৭
|
মোট
|
১,০২৪
|
২৭
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ৯৫ জন)
করোনা আপডেট (আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ) :
দেশ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
আমেরিকা
|
১৩৩,০৯৪
|
২,৩৬৩
|
ইতালি
|
৯৭,৬৮৯
|
১০,৭৭৯
|
চিন
|
৮১,৪৩৯
|
৩,৩০০
|
স্পেন
|
৭৮,৭৯৯
|
৬,৬০৬
|
জার্মানি
|
৬০,৬৫৯
|
৪৮২
|
ইরান
|
৩৮,৩০৯
|
২,৬৪০
|
ফ্রান্স
|
৩৭,৫৭৫
|
২,৬০৬
|
ইংল্যান্ড
|
১৯,৫২২
|
১,২২৮
|
সুইজারল্যান্ড
|
১৪,৮২৯
|
৩০০
|
নেদারল্যান্ড
|
১০,৮৬৬
|
৭৭১
|
সমগ্র বিশ্ব
|
৭০৪,৫০০
|
৩৩,৫১৯
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৫০,৭২৯ জন)
* সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার, ভারতীয় সময় ২৯ মার্চ রাত ১১টা পর্যন্ত
- All Rights Reserved
Advertisement