প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও চলছে করোনা সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার

Advertisement
1
সুজয় ঘোষাল : চিন থেকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে এখন সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে ভারতও যথেষ্ট উদ্বিগ্নে। ১৩০ কোটির এই দেশেও ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে করোনার মারণ সংক্রমণ। ধীরে ধীরে আক্রন্তের সংখ্যা বাড়ছে সমগ্র দেশে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও এদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৩২ জন। তার মধ্যে ৫ জন মারা গিয়েছে (সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার)। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাতেও প্রবেশ ঘটেছে এই সংক্রমণের। ইতিমধ্যে ৫ জন আক্রান্ত হয়েছে এই ভাইরাসে। যা নিয়ে কেন্দ্র সহ রাজ্য সরকারও উদ্বিগ্নে আছে।
     যদিও ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর হিসাবে ভারত এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সঠিক সাবধানতা ও সচেতনতা মেনে না চললে এ প্রকোপ তৃতীয় স্তরে পৌঁছে যেতে পারে। তাই দেশ জুড়ে সচেতনতা ও সাবধানতা গড়ে তুলতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না। দেশ তথা রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী একাধিক নির্দেশনামা প্রচার করছে।
2
     কিন্তু বেশ কিছু প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অভিযোগ উঠছে, সেখানে তেমনভাবে সচেতনতা বোধ গড়ে তোলা হচ্ছে না। আর তাই ওই গ্রামগুলির বাসিন্দারা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তেমন কিছু না জেনেই ভীত বা আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। তাদের কাছে সঠিক ও পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় গ্রামগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গুজব। তাতে তারা আরও অসচেতন ভীত হয়ে পড়ছে।
     তাই এই প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সচেতনার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব তুলে নিল বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ির উপহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। সিউড়ি সংলগ্ন তিলপাড়া অঞ্চলের অজয়পুর, মানরাপাড়া প্রভৃতি গ্রামগুলিতে তাঁরা বেশ কয়েকদিন দিন ধরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে করোনা সম্পর্কে সচেতনতা বোধ গড়ে তুলছেন। সেই সঙ্গে এর মোকাবিলা কিভাবে করা সম্ভব সে সম্পর্কেও নির্দেশনামা প্রচার করছেন।
     যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) করোনার এই পরিস্থিতিতে জমায়েত এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ওই সদস্যরা জমায়েতের মাধ্যমে সচেতনতা প্রচারের পরিবর্তে গ্রামের প্রতিটি বাড়ি ঘুরে সাবধানতা মেনে চলুন, নিজেকে সুস্থ রাখুন, অযথা আতঙ্কিত হবেন না, গুজব ছড়াবেন না বা গুজবে কান দেবন না” সহ আরও একাধিক আপ্তবাক্য প্রচার করছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা গ্রামবাসীদের কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকারের নির্দেশনামাও অনুসরণ করতে বলছেন।
3
     গত ২০ মার্চ ওই সংস্থার সদস্যরা প্রচারে বেরিয়ে গ্রামের মোট ১৫০টি বাড়িতে বিনামূল্যে মাস্ক, হ্যান্ডওয়াস, সাবান, স্যানিটাইজার তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও রাজ্য সরকারের দেওয়া হেল্পলাইন নাম্বার প্রয়োজনে ব্যবহার করারও পরামর্শ দিয়েছেন
     এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন তিলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বুদ্ধদেব মাহারা। তিনি জানালেন, ‘উপহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিতে এতদিন ধরে যেভাবে মানুষকে ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করার কাজ করছে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখবেএছাড়া তিনি আরও বললেন, এই দুঃসময়ে সচেতন বাণী প্রচার করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সামগ্রী দিয়েও তাঁরা গ্রামবাসীদের সহায়তা করেছেন। ফলে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা খুবই উপকৃত হবে। আশা করা হচ্ছে এই গ্রামগুলির বাসিন্দারা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা মাথার রেখে, গুজব দূরে সরিয়ে সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার পন্থা বের করতে পারবে।
Advertisement
Previous article২২ মার্চ “বিশ্ব জল দিবস”-এ এবারের বিশেষ ভাবনা “জল ও জলবায়ু পরিবর্তন”
Next articleঅবশেষে ‘লকডাউন’ রাজ্য ২৭ মার্চ পর্যন্ত, ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রেল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here