Advertisement
জনদর্পণ ডেস্ক : ২৬ মার্চ পর্যন্ত ভারতে ‘লকডাউন’-এর ৩ দিন পূরণ হল। এই মুহূর্তে দেশের ১৩০ কোটি মানুষ গৃহবন্দি। রাস্তায় লাঠি হাতে পুলিশ ছাড়া আর কাউকেই বিশেষ দেখা যাচ্ছে না। যদিও কিছু বাঁধন হারা যুবক কোনও কারণ ছাড়ায় মাঝে মধ্যে পথে বেরিয়ে পড়ছে। কিন্তু পরক্ষণেই পুলিশের নির্দেশে আবার তাদের ঘরমুখো হতে হচ্ছে। কখনও বা অবাধ্যের সীমা লঙ্ঘন করলে সঙ্গে সঙ্গেই জুটছে মৃদু লাঠি চার্জ। সব মিলিয়ে এ এক নতুন ভারত।
![]() |
ছবি : সংগৃহীত |
কিন্তু সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ মানুষগুলো। যাদের একদিন কাজে না বেরোলে পেটে ভাত পড়ে না। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামগুলিতেও ওই একই দৃশ্য। যারা অন্যের জমিতে সামান্য অর্থের বিনিময়ে মজুরি খাটে, তারাও এখন সম্পূর্ণ ঘরবন্দি। কাজ না করলে পকেটে অর্থ আসবে কি করে। আর কাজ জুটবেই বা কি করে। মনিবেরও তো ওই একই দশা।
২৬ মার্চ এই খেটে খাওয়া মানুষদের কিছুটা স্বস্তি দিয়ে কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করল তার আর্থিক প্যাকেজ। এদিন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেন। সেই সঙ্গে তিনি আরও বেশ কিছু প্রকল্পের কথাও জানালেন।
অর্থমন্ত্রীর আর্থিক প্যাকেজ অনুযায়ী, দেশের ৮০ কোটি দরিদ্র যারা ‘প্রধানমন্ত্রীর অন্ন যোজনা’-র আওতায় পড়ছে, তারা এপ্রিল মাস থেকে আগামী ৩ মাস বাড়তি ৫ কিলোগ্রাম করে চাল–আটা ও ১ কিলোগ্রাম করে ডাল পাবে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে এবার থেকে ১৮২ টাকার পরিবর্তে দেওয়া হবে ২০২ টাকা। সেই সঙ্গে উজ্জ্বলা গ্রাহকরা এপ্রিল মাস থেকে আগামী ৩ মাস রান্নার গ্যাস একেবারেই বিনামূল্যে পাবে।
অর্থমন্ত্রী এদিন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যেও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী, ওই সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যেকেই ৫০ লক্ষ টাকার বিমা পাবেন। এছাড়াও তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী, যে সমস্ত কর্মচারীদের মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা, তাদের পিএফ আগামী ৩ মাস কেন্দ্র সরকারই জমা দিয়ে দেবে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও উদ্বেগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সমগ্র দেশ সহ বিশ্ববাসীর। এই মুহূর্তে পৃথিবীর প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ গৃহবন্দি (তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ গৃহবন্দি ভারতে)। বিশ্ব জুড়ে তাই অর্থনীতির অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই দরিদ্র মানুষদের জন্য ২০০ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু অর্থনীতি ফিরবে কোন পথে? কোনও অবস্থাতেই এখন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ইতিমধ্যে বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ অতিক্রম করে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যতদিন না পৃথিবী করোনা মুক্ত হচ্ছে, ততদিন অর্থনীতি ফেরার কোনও সম্ভাবনা-ই নেই।
ভারতের করোনা–গ্রাফ :
তারিখ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
২০ মার্চ পর্যন্ত
|
২৯৪
|
৪
|
২১.০৩.২০২০
|
৫৯
|
২
|
২২.০৩.২০২০
|
১০৮
|
২
|
২৩.০৩.২০২০
|
৩৮
|
২
|
২৪.০৩.২০২০
|
৩৭
|
১
|
২৫.০৩.২০২০
|
৭০
|
০
|
২৬.০৩.২০২০
|
১১৩
|
৫
|
মোট
|
৭১৯
|
১৬
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ৪৫ জন)
করোনা আপডেট (আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ) :
দেশ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
চিন
|
৮১,২৮৫
|
৩,২৮৭
|
আমেরিকা
|
৭৫,০৬৯
|
১,০৮০
|
ইতালি
|
৭৪,৩৮৬
|
৭,৫০৩
|
স্পেন
|
৫৬,১৯৭
|
৪,১৪৫
|
জার্মানি
|
৪৩,১৯৭
|
২৩৯
|
ইরান
|
২৯,৪০৬
|
২,২৩৪
|
ফ্রান্স
|
২৫,২৩৩
|
১,৩৩১
|
সুইজারল্যান্ড
|
১১,৭১২
|
১৯১
|
ইংল্যান্ড
|
৯,৮৪৯
|
৪৭৭
|
দক্ষিণ কোরিয়া
|
৯,২৪১
|
১৩১
|
সমগ্র বিশ্ব
|
৫০৩,২৭৪
|
২২,৩৪২
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ১২১,২২৭ জন)
* সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার, ভারতীয় সময় ২৬ মার্চ রাত ১০টা পর্যন্ত
- All Rights Reserved
Advertisement