Advertisement
অনলাইন পেপার : করোনা সংক্রমণ আটকাতে ভারতে‘লকডাউন’-এর ১ সপ্তাহ পূরণ হল। শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এখন ‘লকডাউন’ চলছে। এই মুহূর্তে ঘরবন্দি বিশ্বের ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ।
‘কোভিড–১৯’ করোনা ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তবে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে, আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৪.৭৩ শতাংশ মানুষ মারা গিয়েছে এবং প্রায় ২১.২৩ শতাংশ মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে। আর বাকিরা এখনও করোনার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই বাকিদের অধিকাংশরাই যে পরে সুস্থ হয়ে উঠবে তা শতকরার হিসাব দেখলেই বুঝতে পারা যাচ্ছে।
করোনার সঙ্গে এই যুদ্ধের দিনে তাই আশার খবর, ভাইরাসটি যে খুব বেশি ভয়াবহ তা বলা যাচ্ছে না। আবার অন্য দিক থেকে ভয়াবহ নয় সেটাও বলা যাবে না, অন্ততঃ যতদিন না এই ভাইরাসের কোনও উপযুক্ত প্রতিষেধক আবিষ্কার হচ্ছে।
এবার নজর দেওয়া যাক করোনা ভাইরাসের কার্যপ্রণালীর ওপর। অর্থাৎ ভাইরাসটি মানব শরীরে প্রবেশের পর কী কী ঘটনা ঘটিয়ে থাকে, সেই দিকে। সম্প্রতি বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা শরীরে প্রবেশের পর বেশ কয়েকটি ধাপে তার কার্যক্রম শুরু করে।
প্রথম দিকে ভাইরাসটি আক্রান্ত কোনও রোগীর থেকে প্রশ্বাসের সঙ্গে অন্যের শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়াও সংক্রমিত হাত মুখে লাগার ফলেও ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। প্রবেশের পর প্রথমেই গলা, শ্বাসনালী ও ফুসফুস আক্রান্ত করে। এরপর ধীরে ধীরে বংশবিস্তার করে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এই সময়ে আক্রান্ত কেউ-ই নিজেকে অসুস্থ বোধ করেন না বা কোনও উপসর্গের প্রকাশও ঘটে না। এই অবস্থা প্রায় ৫ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
![]() |
ছবি : সংগৃহীত |
এরপর শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করে। শরীরে একাধিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। নিঃসৃত হয় ‘সাইটোকাইনস’। ফলে উপসর্গ হিসাবে দেখা দেয় জ্বর, মাথা ব্যথা, শুকনো কাশি। তবে মাথা ব্যথা বা শুকনো কাশি অনেকক্ষেত্রে নাও হতে পারে। পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এই পর্যায়টি প্রায় ৭ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে। এর মধ্যে সুচিকিৎসা শুরু করলে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রমাগত ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে থাকবে। ফলে বেশিরভাগ আক্রান্ত রোগী এই পর্যায়েই সুস্থ হয়ে উঠবে।
যদি কোনও রোগী এই পর্যায়ে সুস্থ না হয়, তাহলে রোগী চলে যাবে পরের পর্যায়ে। এই পর্যায়ে ভাইরাসটি পূর্বের তুলনায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। অনেকক্ষেত্রে সর্দি হতে দেখা যায়। শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। ফলে সারা শরীরে ব্যথা অনুভব হয়। এই পর্যায়ে করোনা ভাইরাস ফুসফুসে সন্তাপ সৃষ্টি করতে থাকে। তাই শ্বাস–প্রশ্বাস চালাতে কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। কারণ ফুসফুসের বায়ুথলিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। রোগীকে দেওয়া হয় ভেন্টিলেটর। তারপরেও রোগী সুস্থ হয়ে না উঠলে পরের পর্যায়ে চলে যায়।
এই পর্যায়টি অত্যন্ত জটিল। রোগীর শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই পর্যায়ে আরও ভেঙে পড়তে থাকে। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের স্বাভাবিক কাজগুলি বন্ধ করতে শুরু করে। রোগীর নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। প্রয়োজন হয়ে পড়ে ইসিএমও পদ্ধতি ব্যবহার করার। এই পদ্ধতিতে রোগীর শরীরে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত সরবরাহ করা হয়। বহু চেষ্টার পরেও যদি কোনও রোগী চিকিৎসায় সাড়া না দেয় তখন আর কিছুই করার থাকে না।
তবে প্রথমেই বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ৪.৭৩ শতাংশ মানুষ মারা গিয়েছে। তাই বলতেই হয়, শেষ পর্যায়ে পৌঁছনোর অনেক আগেই অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
ভারতের করোনা–গ্রাফ :
তারিখ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
২০ মার্চ পর্যন্ত
|
২৯৪
|
৪
|
২১.০৩.২০২০
|
৫৯
|
২
|
২২.০৩.২০২০
|
১০৮
|
২
|
২৩.০৩.২০২০
|
৩৮
|
২
|
২৪.০৩.২০২০
|
৩৭
|
১
|
২৫.০৩.২০২০
|
৭০
|
০
|
২৬.০৩.২০২০
|
১১৩
|
৫
|
২৭.০৩.২০২০
|
১৬৮
|
৪
|
২৮.০৩.২০২০
|
৮৯
|
০
|
২৯.০৩.২০২০
|
৪৮
|
৭
|
৩০.০৩.২০২০
|
২২৭
|
৫
|
মোট
|
১,২৫১
|
৩২
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ১০২ জন)
করোনা আপডেট (আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ) :
দেশ
|
আক্রান্ত
|
মৃত্যু
|
আমেরিকা
|
১৪৫,৫৪২
|
২,৬১৬
|
ইতালি
|
১০১,৭৩৯
|
১১,৫৯১
|
স্পেন
|
৮৫,১৯৫
|
৭,৩৪০
|
চিন
|
৮১,৪৭০
|
৩,৩০৪
|
জার্মানি
|
৬৩,৯২৯
|
৫৬০
|
ইরান
|
৪১,৪৯৫
|
২,৭৫৭
|
ফ্রান্স
|
৪০,৫৫০
|
২,৭৬৪
|
ইংল্যান্ড
|
২২,১৪১
|
১,৪০৮
|
সুইজারল্যান্ড
|
১৫,৭৬০
|
৩৪৮
|
বেলজিয়াম
|
১১,৮৯৯
|
৫১৩
|
সমগ্র বিশ্ব
|
৭৫২,৮৬১
|
৩৬,২৩৩
|
(করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৫৮,৭৬৯ জন)
* সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার, ভারতীয় সময় ৩০ মার্চ রাত ১১টা পর্যন্ত
- All Rights Reserved
Advertisement