মমির ইচ্ছানুযায়ী তাঁর কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এল স্বর, নেপথ্যে একদল বিজ্ঞানী

Advertisement
Mummy
অনলাইন পেপার : অনেকেই তার মৃত্যুর পূর্বে নিজের শেষ ইচ্ছা জানিয়ে যায় কাছের মানুষটিকে। কিন্তু মৃত্যুর পর সেই ইচ্ছাটি যথাযথ পালন হল কিনা সে তার কিছুই বুঝতে পারে না। কারণ ততক্ষণে তার সবকিছুই চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায়। অনেকের বিশ্বাস মৃত্যুর পর শরীর নষ্ট হয়ে গেলেও বেঁচে থাকে তার আত্মা। সেই আত্মা নিজের ইচ্ছা পূরণ হওয়ার আগে পর্যন্ত অবস্থান করে তার শরীরের সন্নিকটে। ইচ্ছা পূরণের পরই নতুন রূপ ধারণের কামনায় সেই স্থান পরিত্যাগ করে। অর্থাৎ ইচ্ছা পূরণের আগে পর্যন্ত অতৃপ্ত থাকে সেই আত্মা।
     কিন্তু যদি তার শেষ ইচ্ছা কোনওভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়, তাও ওই ব্যক্তি যদি হয় মমির যুগের মানুষ, তাহলে ব্যাপারটি কেমন হতে পারে। হয়তো সে কিছুই জানতে পারবে না। কিন্তু তাঁর আত্মা হয়তো শান্তি পাবে বহুদিন পর।
     ঘটনাটি অনেকটা গল্পের মতো শোনালেও, এমনটিই ঘটেছে একটি মমির ক্ষেত্রে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেল, মমিটি বর্তমানে রাখা রয়েছে লিডস সিটি মিউজিয়ামে। কফিন বাক্সে লিখিত লিপি পাঠোদ্ধার করে জানা গেল, তার নাম নেছায়মুন। তিনি ছিলেন থিবস বা বর্তমান শহর লুক্সার-এর কার্নাক মন্দিরের ওয়াব পুরোহিত। অনেক কঠিন বাধা অতিক্রম করে মন্দিরের একেবারে পবিত্র স্থানে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিলেন তিনি। ঘটনাটি ছিল ফেরাও রাবেস ১১–এর সময়কালের।
     পুরোহিত নেছায়মুনের মমি নিয়ে গবেষণা করছেন ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, রয়্যাল হলোওয়ে এবং লিডস মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞরা। গবেষকরা জানতে পেরেছেন, নেছায়মুন মাড়ির সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি মারা যান মাত্র ৫০ বছর বয়সে। জীবিত অবস্থায় তাকে উচ্চস্বরে ধর্মীয় বিভিন্ন আচরণ পালন করতে হত। এমনকি তাকে গানও গাইতে হত। হয়তো তাই মৃত্যুর পূর্বে তার শেষ ইচ্ছা ছিল, মারা গেলেও তার কণ্ঠ যেন শোনা যায়। বিজ্ঞানীরা এই শেষ ইচ্ছাটিও পূরণ করতে বর্তমানে কিছুটা সফল হয়েছেন। তাঁরা নেছায়মুনের কণ্ঠ থেকে বের করে আনতে পেরেছেন তার নিজের স্বর’কে।
     বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মানুষের কণ্ঠনালীতে অবস্থিত বাগযন্ত্রের মাধ্যমে শব্দ তৈরি। মৃত্যুর পরেও মানুষের গলায় শব্দ তৈরি করা সম্ভব, যদি না বাগযন্ত্রের নরম টিসুটি নষ্ট না হয়ে থাকে। নেছায়মুনের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছে। মৃত্যুর এত বছর পরেও তার বাগযন্ত্রের টিসুটি তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে তার কণ্ঠ স্ক্যান করে থ্রিডি প্রিন্টিং ব্যবহার করেছেন। ফলে তৈরি হয়েছে নেছায়মুনের নিজের গলার শব্দ। এটাই মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে মৃতের কণ্ঠস্বর ফিরিয়ে আনার প্রথম পদক্ষেপ। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এরপর তাঁরা কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে নেছায়মুনের গলায় সম্পূর্ণ একটি বাক্য তৈরি করতে পারবেন।
Advertisement
Previous articleআমোদপুরে চলছে নেতাজি সুভাষ মেলা (ভিডিও সহ)
Next articleপিঁয়াজ চাষের সমস্যা ও তার গুরুত্বপূর্ণ সমাধান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here