হিমবাহের গভীরে মিলল অজানা ভাইরাসের সন্ধান

Advertisement

Penguin1
সোমনাথ মুখোপাধ্যায় : সারা বিশ্বজুড়ে যখন করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে তখন এক নতুন আতঙ্কের মেঘ দেখা দিয়েছে মানব সভ্যতার ঈশান কোণে। ২০১৫ সালে চিনা ও মার্কিন বিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানকারী দল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিল তিব্বতের প্রাচীন হিমবাহগুলির গভীরে। তারা প্রাচীন জমাট বাঁধা বরফের স্তরগুলিতে ৫০ মিটার (১৬৪ ফুট) ড্রিল করে বরফের অন্তস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। সেই নমুনা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে (জীবাণু শূন্য পরিবেশের মধ্যে) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন bioRxiv (pre-print server)-তে। তারা যে তথ্য তুলে ধরেছেন তা চোখ কপালে তুলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
     তারা তাদের গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন, ১৫০০০ হাজার বছরের প্রাচীন বরফের স্তরের  মধ্যে তারা মোট ৩৩টি ভাইরাসের গোষ্ঠীর সন্ধান পেয়েছেন। যার মধ্যে ২৮টির কথা বিজ্ঞানীদের আগে জানা ছিল না। বিষয়টি অত্যন্ত আশঙ্কা ও উদ্বেগের। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন ও উষ্ণায়নের ফলে গ্লেসিয়ারগুলি গলে গিয়ে এইসব অজানা প্রাচীন ভাইরাস (যার প্রকৃতি ও কার্যকারিতা এখনবিজ্ঞানীদের জানা নেই) প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়লে তার ফল জীবজগতের পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। নানা ধরনের মারাত্মক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে উদ্ভিদ ও প্রাণী কুলের মধ্যে। যা মহামারীর রূপ ধারণ করবে। কারণ এইসব অজানা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার কোন উপায় এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।
ice

     প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যেভাবে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়ে চলেছে এমনটা চলতে থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে মেরু অঞ্চলে ৭০ শতাংশ বরফ গলে যাবে। এর ফলে শুধুমাত্র সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে স্থলভাগকে গ্রাস করবে তাই নয় এর ফলে বরফের নিচে আটকে থাকা গ্রীন হাউস গ্যাসগুলি বিশেষ করে মিথেন বায়ুমন্ডলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এবং বদলে দেবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চরিত্র।
virus
     কিন্তু তার ঢের আগেই গ্লেসিয়ারের প্রাচীন বরফের স্তর গলে গিয়ে তার গভীরে আবদ্ধ থাকা অজানা আণুবীক্ষণিক জীবগুলি (ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া) প্রকৃতিতে মুক্ত হয়ে জীবজগতের ধ্বংস সাধনে তৎপর হবে। এমনিতেই সাধারণভাবে প্রচলিত রোগ জীবাণুগুলি অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে যার ফলে সাধারন রোগ‌ও এখন দুরারোগ্য হয়ে উঠছে। ইদানিং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী যক্ষ্মা, নিউমোনিয়ায় সারা পৃথিবীতে অসংখ্য লোক মারা যাচ্ছেন। বোতলের দৈত্য বাইরে আসার আগেই সাবধান হওয়া দরকার। কারণ হাতে আর সময় বিশেষ নেই। কাজেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের গ্রীন হাউস গ্যাস উৎপাদনের ওপর যে কোন প্রকারে লাগাম টানতে হবে। বাড়াতে হবে ক্লিন‌ ও গ্রীন এনার্জির ব্যবহার। প্রকৃতিকে নির্মল ও দূষণমুক্ত রাখার প্রথম পদক্ষেপটি শুরু করুন বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে।

Advertisement
Previous articleবিশ্বের নজর এখন করোনাভাইরাসের দিকে
Next articleআমোদপুরে চলছে নেতাজি সুভাষ মেলা (ভিডিও সহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here