Advertisement
সুজয় ঘোষাল : ভারতীয় সংবিধানের ১১তম তপশীল অনুযায়ী দেশের প্রতিটা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৯টি বিষয়ের ওপর বিভিন্ন কার্যাবলী নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তার মধ্যে অনত্যম হল সামাজিক বনসৃজন। আর তাই গ্রাম্য পরিবেশের স্বাভাবিক সুস্থতা ও ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রায় অধিকাংশ গ্রাম বনভূমির বিকাশের জন্যেও একাধিক উদ্যোগ নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে গ্রামগুলির পতিত, অনুর্বর বা অকৃষি জমি সমাজিক বনসৃজনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কিন্তু মূয়রাক্ষী নদীর তীরবর্তী অঞ্চল যেমন রামনগর, মালঞ্চা, আমড়া ইত্যাদি গ্রামগুলির বাঁধ লাগোয়া প্রায় ২-৩ কিলোমিটার জায়গা প্রায় ফাঁকা ও অব্যবহৃত অবস্থায় এখনও পড়ে রয়েছে। এই অঞ্চলে বাঁধের সম্প্রসারণ করা হয়েছিল প্রায় দুই বছর আগে। বাঁধ সম্প্রসারণের পূর্বে এখানে গুল্ম (শর) জাতীয় এক প্রকার গাছের ঝোপ ছিল। এই ঝোপ তখন নদী বাঁধের ভূমিক্ষয় রোধ করত। কিন্তু বাঁধের সম্প্রসরণের জন্য এই ঝোপ মাটি চাপা পড়ে যায়। এখনও মূয়রাক্ষী নদী বাঁধে শর জন্মালেও তা আগের তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে এলাকার বিস্তীর্ণজায়গা প্রায় ফাঁকা অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
ময়ূরাক্ষী নদীর তীরবর্তী এই ফাঁকা স্থানগুলি বিভিন্ন বৃক্ষজাতীয় গাছ লাগিয়ে পূরণ করা অবশ্যই যেতে পারে। এক্ষেত্রে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সামজিক বনসৃজন করলে, একদিকে যেমন গ্রামাঞ্চলে কাজের সুযোগ প্রসারিত হবে, অপরদিকে গ্রামীণ সম্পদেরও বৃদ্ধি ঘটবে।
রামনগর গ্রামের বেশকিছু স্থানীয় মানুষ ইতিমধ্যেই অভিযোগে জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, কয়েক বছর আগে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মূয়রাক্ষী সেচখাল বরাবর শিশু, আম, জাম, মেহগনি, শিরীষ ইত্যাদি গাছের চারা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক পরিচর্চার অভাবে সেইগাছগুলি মারা গিয়েছে। আবার কিছু গাছ বড়ো হলেও পরে সেগুলিকে নিয়ম এড়িয়ে কেটে ফেলা হয়েছে।
তাই উলকুন্ডা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মূয়রাক্ষী নদীর তীরবর্তী এই গ্রামগুলিতে সামাজিক বনসৃজনের উদ্যোগ কার্যকর হলে ভূমিক্ষয় রোধ এবং সুবজায়ন দুই-ই হবে। এর পাশাপাশি গাছগুলির সঠিক পরিচর্চা ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপরেও নজর দিতে হবে।
Advertisement