সূর্যমুখী চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে জেলার চাষিরা

Advertisement
Sunflowers FULL

গৌর গোপাল পাল : বিগত দিনে সারা রাজ্যে সূর্যমুখী নতুন ফসল হিসাবে বেশ পরিচিতি লাভ করলেও বর্তমানে এই চাষে বেশ খানিকটা ভাটা পড়েছে। ১৯৬৯ সালে এ দেশে এই ফসলের বিজ্ঞান ভিত্তিক চাষ শুরু হয়। ১৯৭২ সাল থেকে সূর্যমুখী চাষের নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গও। অন্যান্য অর্থকরী ফসলের সাথে প্রতিযোগিতার দরুন কৃষকদের আগ্রহী করার সমস্যা সূর্যমুখী চাষে বরাবরই রয়ে গিয়েছেতাই এই রাজ্য তথা বীরভূমে সূর্যমুখী চাষের প্রয়াস সেই ভাবে সফলতা পাইনি।
     বছরের যে কোনও সময়েই সূর্যমুখীর চাষ করা যায়। তাপ ও আলোক অসংবেদনশীল হওয়ায় এই ফসলে সেই সুবিধাটুকু আছেতবে বর্ষাকালে ফুল অবস্থায় বৃষ্টি পেলে ফলন কমে যায়। তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রীর নিচে যেমন ভালো অঙ্কুরোদগম হয় না, তেমনি ৩৫ ডিগ্রীর বেশি হলে পরাগরেণু শুকিয়ে গিয়ে ফলনও কমে যায়। তাই সূর্যমুখী চাষে ১৫-৩৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা হওয়া প্রয়োজন। যা এই রাজ্য তথা বীরভূমের প্রায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা। আবার বেশি অম্ল বা ক্ষার মাটি ছাড়া প্রায় সব জমিতেই সূর্যমুখী চাষ করা যায়। ঋতুভেদে বিভিন্ন জাতের বীজও আছে।
     সূর্যমুখী চাষে ফলন পাওয়া যায় বেশ ভালো। সেচ সেবিত এলাকায় একর প্রতি ৭-৮ কুইন্টাল গড় ফলন পাওয়া যায়। অসেচ সেবিত এলাকায় এর গড় ফলন প্রায় ৩-৪ কুইন্টাল। এছাড়া ধান বা গম সংরক্ষণের মতো সূর্যমুখীর বীজও সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব।
     সূর্যমুখী বীজে ৪৫-৫২ শতাংশ তেল থাকে। এই তেলে ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ ৬২.৫ শতাংশ। যা হৃদপিণ্ডের ধমনীতে জমা কোলেস্ট্রল দূর করতে সাহায্য করে। হার্টের রুগিদের ক্ষেত্রে এই তেল যথেষ্ট উপাদেয়।
     তবুও জেলা তথা রাজ্যে এই সূর্যমুখী চাষে মানুষের আগ্রহ কোনও দিনও জন্মায়নি। কোনও চাষি উৎসাহ নিয়ে এই ফসলের চাষ করলেও পরের বছর তিনি আর এই ফসল ফলাতে চান না। সমগ্র বীরভূমে একটিও সূর্যমুখীর মিল থাকায় জেলায় এই ফসল চাষে চাষিদের অন্যতম অনীহার কারণ বলে অনেকে মনে করেন।

Advertisement
Previous articleএক দেবীর তিন লৌকিক বিগ্রহ শোভা পায় পশোয়া গ্রামে
Next articleপরিযায়ী পাখিরা আদৌ ‘অতিথি’ নয়, জন্মসূত্রে তারা আঞ্চলিক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here