Advertisement
সজয় পাল : ১৮৬০ সালের শিল্প বিপ্লবের আগে পরিবেশের গড় তাপমাত্রা যেখানে ১৫ ডিগ্রী ছিল, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ২। অর্থাৎ গত ১৫৯ বছরে পরিবেশের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ২ ডিগ্রী। আপাতভাবে সংখ্যার বিচারে খুব কম মনে হলেও পরিবেশের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য রক্ষার ক্ষেত্রে তা এক বিশাল ব্যবধান। গবেষণায় দেখা গেছে গত ৮ হাজার বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রার তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। যতটুকু পরিবর্তন হয়েছে তা গত ১০০ বছরে। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির মূল কারণ পরিবেশে কার্বনের যথেচ্ছ পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। বর্তমানে কার্বনের এই বৃদ্ধির হার বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টন।
শিল্প বিপ্লবের দিন থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের জীবনযাত্রার অগ্রগতির উদ্দেশে বিভিন্ন সময়ে তৈরি হয়েছে নানান নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। যার মধ্যে অন্যতম হল এসি (এয়ার কন্ডিশনার)। প্রায় ১০০ বছরেরও আগে মানুষ অনুভব করেছিল পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে। ঘরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ১৯০২ সালে তাই প্রথম তৈরি হয় এই যন্ত্রটি। এসির কুলিং এজেন্ট থেকে নির্গত হওয়া ক্লোরোফ্লুরো কার্বন (CFC11, CFC12), যা অন্য যে কোনও কার্বন যৌগের থেকে ১ হাজার গুণ বেশি ক্ষতিকর।
তবুও এসির ব্যবহার বন্ধ করা বা কমানো আর সম্ভবই নয়। কারণ প্রতি বছর ক্রমাগত বেড়েই চলেছে পরিবেশের উষ্ণতা। গরমের হাত থেকে রেহায় পেতে এসির কোনও বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি। তাই ভবিষ্যতে এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটির ব্যবহার বেড়েই যাবে ক্রমাগত। সমীক্ষা বলছে, গত ১০০ বছরে যতগুলি এসি বসানো হয়েছে, আগামী ১০ বছরে তার সমান সংখ্যক এসি বিশ্বের প্রতি প্রান্তে বসাতে হতে পারে। এতে কার্বনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে বছরে প্রায় ৯ হাজার কোটি টন। যার বিশাল এক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সমগ্র বিশ্বের পরিবেশের উপর। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মানুষকেই খুঁজতে হবে তার বিকল্প কোনও পথ।
Advertisement