Advertisement
বিশ্বজিৎ ঘোষ : সবে শেষ হয়েছে আলোর উৎসব দীপাবলি। উৎসবের দিনগুলিতেগ্রাম ও শহর উভয়ই ভরে উঠেছিল আলোর রোশনায়। যদিও তার প্রায় সবই ছিল ইলেকট্রিকের এলইডি-টুনি লাইটের সৌজন্যে।
কিন্তু এমন একটা সময় ছিল, যখন এলইডি-টুনির দাপট ছিল না।গ্রাম বা শহরের সর্বত্র বাড়ীর ছাদে ও বারান্দায় দেখা মিলত মাটির প্রদীপের সারি। ১০৮টা প্রদীপে সেজে উঠত কালী মন্দিরের আঙিনা, তুলশীতলা। অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকত ছেলে-বুড়ো সকলেই। প্রায় ৩ দশক আগেও সবার কাছে সমান কদর ছিল এই মাটির প্রদীপের।
তবে যতই সময় এগিয়ে চলেছে, মাটির প্রদীপ ধিরে ধিরে নিভতে শুরু করেছে। আর তার জায়গা দখল করে নিচ্ছে রংবেরঙের খুদে ইলেকট্রিক বাতিগুলি। এইধারা ক্রমশ অব্যাহত। একথা অস্বীকার করার আজ কোনও উপায় নেই, মাটির প্রদীপের কদর আজ প্রায় একদমই কম। আর তাতেই হতাশ মৃৎশিল্পীরা। এক সময়ে যারা সবার ঘরে আলো পৌঁছে দিয়েছে, আজ তাঁদের নিজেদের ঘরই ছেয়ে গিয়েছে অন্ধকারে।
আমোদপুরের মৃৎশিল্পী পিন্টু পাল, দীনেশ পাল–রা জানালেন, প্রতিবছর তাঁরা ৪-৫ হাজারের মতো মাটির প্রদীপ তৈরি করেন। যারবর্তমান মূল্য প্রদীপ প্রতি এক টাকা। দিন দিন প্রদীপ গড়ার কাঁচামাল অর্থাৎ মাটির দাম বেড়েছে, পোড়ানোর কয়লা বা পাটকাঠির দামও অনেকাংশে বেড়েছে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রদীপ গড়তে হচ্ছে,কিন্ত সে তুলনায় বিক্রি হচ্ছে অনেক কম। তবুও বাপ–ঠাকুরদার বহুবছরের ব্যবসা তাঁরা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁদেরআক্ষেপ, এখনও কোনও সরকারি সাহায্য তাঁরা পাননি। সরকারি কোন অনুদান বা ঋণ পেলেও তাঁদের সুবিধা হত।
পিন্টুবাবু জানালেন, দীপাবলির আগে তাঁরা প্রদীপ গড়ার কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু আশানরূপ প্রদীপ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ তাঁরা।
Advertisement