Saturday, May 24, 2025

সার্বজনীন অ্যান্টিভেনম : মানুষের রক্ত দিয়েই তৈরির চেষ্টা সাপের বিষের ওষুধ

- Advertisement -

দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সন্ধান করছিলেন এমন একটি অ্যান্টিভেনম, যা যে কোনও পরিস্থিতিতে যে কোনও প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে। সম্ভবত তার কিছুটা আভাস এবার হয়তো পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

অ্যান্টিভেনম
Image by Endang Sahadi from Pixabay

সাপে কামড়ালে এখন আর ওঝা-ফকিরের প্রয়োজন পড়ে না। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার দৌলতে প্রয়োজন পড়ে অ্যান্টিভেনম এর। তবে সেক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। অ্যান্টিভেনম শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে পুস করার সময় ওই প্রজাতির সাপ (যে প্রজাতির সাপ দংশন করেছে)-এর বিষের কিছুটা অংশ শরীরে ঢোকানো হয়, যাতে রক্তে ওই একই প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে।

চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে যদি ওই প্রজাতির সাপের কোনও অ্যান্টিভেনম না থাকে, অথবা বুঝতেই পারা না যায়, রোগীকে কোন প্রজাতির সাপ দংশন করেছে, তাহলে চিকিৎসা কেন্দ্রে থাকা সঠিক অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না।

তাই দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সন্ধান করছিলেন এমন একটি অ্যান্টিভেনম, যা যে কোনও পরিস্থিতিতে যে কোনও প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে। সম্ভবত তার কিছুটা আভাস এবার হয়তো পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা টিম ফ্রিড যে কিনা প্রথম জীবনে ছিলেন একজন ট্রাক চালক। পরে তিনি সাপ নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে তিনি দু’শো বারেরও বেশি সাপের কামড় নিয়েছেন। এছাড়াও প্রায় আঠারো বছর ধরে সাতশো বারেরও বেশি সাপের বিষ ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে ধারণ করেছেন। বলা বাহুল্য, এই সমস্ত বিষের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপ অর্থাৎ মাম্বা, কোবরা, ক্রেইট, তাইপান প্রজাতির সাপ ছিল অন্যতম।

- Advertisement -

টিম ফ্রিড চেয়েছেন, তাঁর নিজের শরীরে ওই সমস্ত বিষাক্ত সাপের বিষের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। তাঁর সমস্ত কার্যকলাপ তিনি নিজেই নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ধারণ করে রাখতে শুরু করেন। মজার ব্যাপার, এই প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা তাঁর শরীরে এমন একটি অ্যান্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন, যা একাধিক প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর হচ্ছে।

সেন্টিভ্যাক্স নামের এক বায়োটেক কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরেই ব্রডলি নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডির উপর গবেষণা করছিল। ব্রডলি নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে, এমন একটি অ্যান্টিবডি যা সমস্ত রকম সাপের বিষের সাধারণ অংশগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করবে।

বলা বাহুল্য, ওই কোম্পানির কর্মকর্তাদের নজরে চলে আসেন টিম ফ্রিড। তাঁর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া হয় রক্ত। তাঁদের গবেষণা ছিল ইলাপিডস এর উপর। ইলাপিডস মূলত বিষধর সাপগুলির দুটি গোত্রের একটিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ।

এই ব্যাপারে গবেষকরা সবচেয়ে বিষাক্ত উনিশটি ইলাপিডস প্রজাতির উপর টিম ফ্রিড এর শরীর থেকে নেওয়া অ্যান্টিবডি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ‘সেল’ সাময়িকীতে এই গবেষণার বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এই গবেষণায় তাঁরা দুটি ভিন্ন ব্রডলি নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডির সন্ধান পেয়েছে। যা দুটি ভিন্ন নিউরোটক্সিন এর উপর কাজ করতে পারে। গবেষকেরা এই বিষয়ে একটি অ্যান্টিভেনম ককটেলও তৈরি করেছেন। সম্পূর্ণ গবেষণাটি তাঁরা ইঁদুরের উপর প্রয়োগ করেছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, উনিশটি আলাদা প্রজাতির বিষাক্ত সাপের মধ্যে তেরোটিতে সুরক্ষা দিয়েছে। বাকিগুলিতে আংশিক সুরক্ষা দিতে পেরেছে। যদিও এই গবেষণা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকেরা।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর