Saturday, May 24, 2025

মৃৎশিল্পী না অনুপ্রেরণা? কল্পতরুর নিয়তি এখন অনেক বড় উদাহরণ

- Advertisement -

এখানে নিয়তি সরকার পাল তার অনেক বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আজ। বছর ৩৪-এর এই মহিলা দুর্গাপুরের কল্পতরুর নগর কলোনির একজন মৃৎশিল্পী। সাধারণ অর্থে তাঁকে একজন মৃৎশিল্পী না বলে অনুপ্রেরণার অপর এক নামও বলা যেতে পারে। কারণ মৃৎশিল্পীদের যত উঁচুমানের শিল্পীর নাম উল্লেখ করা যায়, তাঁরা যে প্রত্যেকেই পুরুষ তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেই তালিকায় নিয়তি দেবী এক কথায় অনন্যা বললেও কম বলা হবে।

মৃৎশিল্পী

অদম্য আত্মবিশ্বাস আর কঠিন পরিশ্রম একজন সাধারণ মানুষকে কতটা উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে, তার উদাহরণ ইতিহাস বারবার তুলে ধরেছে বিভিন্নভাবে। এমন অসংখ্য সাধারণ মানুষ অসাধারণ মানুষে পরিণত হতে পেরেছে। তার উপর সে যদি কোনও নারী হন, তাহলে তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা। সেই প্রতিবন্ধকতাগুলিকে সরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে তাকে বেশ বেগ’ই পেতে হয় তাঁকে। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকলে কোনও শক্তিই তাকে আটকে রাখতে পারে না। লক্ষ্যভেদ তার সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

এখানে নিয়তি সরকার পাল তার অনেক বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আজ। বছর ৩৪-এর এই মহিলা দুর্গাপুরের কল্পতরুর নগর কলোনির একজন মৃৎশিল্পী। সাধারণ অর্থে তাঁকে একজন মৃৎশিল্পী না বলে অনুপ্রেরণার অপর এক নামও বলা যেতে পারে।

কারণ মৃৎশিল্পীদের যত উঁচুমানের শিল্পীর নাম উল্লেখ করা যায়, তাঁরা যে প্রত্যেকেই পুরুষ তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেই তালিকায় নিয়তি দেবী এক কথায় অনন্যা বললেও কম বলা হবে।

অন্যান্য নারীর মতো তাঁর জীবনেও এসেছে একাধিক প্রতিবন্ধকতা। মাত্র অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পঠনপাঠনের পর তিনি আর এগোতে পারেননি লেখাপড়ার জগতে। তাই বলে জীবনকেও এখানে থামিয়ে রাখেননি এই মৃৎশিল্পী। বেলস্টার সংস্থা থেকে ২০২৪ সালে মাত্র ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেছিলেন দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের গোঁড়ার দিকেও তিনি দ্বিতীয় ঋণ হিসেবে ৯৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন ওই একই সংস্থার থেকে।

- Advertisement -

তারপর অদম্য আত্মবিশ্বাস ও কঠিন পরিশ্রমে তার হাতেই এখনও পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে ৬০টি দুর্গা, ১২০টি কালী, ১৯০টি বিশ্বকর্মা, ৭০টি মনসা, ৩০টি করে গণেশ ও কার্তিক, ২৫০টি সরস্বতী ও ৫০টি লক্ষ্মী প্রতিমা।

প্রায় ৪ লক্ষ টাকা বার্ষিক বিনিয়োগে তিনি গড়ে তুলেছেন কয়েক লক্ষ টাকার আয়ের সফল ব্যবসা। তার অধীনে এখন কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১৫ জন কর্মচারী। সেই সঙ্গে পরোক্ষভাবে উপকৃত হন আরও অন্তত ৩৫ জন সদস্য।

মাটির সঙ্গে নিয়তি দেবীর সম্পর্ক বরাবরের। এর পাশাপাশি তিনি তাঁত ও দর্জির কাজও জানেন। এই অসাধারণ সফলতার পেছনে আছে তাঁর অদম্য পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস। তবে তিনি বেলস্টার সংস্থাকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন আন্তরিকভাবে।

কল্পতরু নগর কলোনির বাসিন্দাদের মতে, মৃৎশিল্পী নিয়তি দেবীর এই পথচলা শুধু তাঁর নিজের নয়, গোটা সমাজের নারীশক্তির জাগরণ। যা দেখিয়ে দেয় কীভাবে আর্থিক সহায়তা ও ঐতিহ্যবাহী দক্ষতা মিলিয়ে গড়ে তোলা যায় আত্মনির্ভর এক ভবিষ্যৎ।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর