পৃথিবী -তে প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছে, কারণ পৃথিবী রয়েছে এক্কেবারেই ‘গোল্ডিলকস জোন’-এ। সৌরজগতের আর কোথাও প্রাণ থাকতে পারবে কিনা এই অনুসন্ধান মানুষের দীর্ঘদিনের। যদিও উন্নত কোনও প্রাণী নেই, এব্যাপারে এখন নিশ্চিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। হয়তো থাকতে পারে কোনও অণুজীব বা কোনও ব্যাকটেরিয়া। থাকলে এটুকুই যথেষ্ট।

এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে আমরাই কী শুধু একা? নাকি অন্য কোথাও, অন্য কোনও গ্রহে রয়েছে মানুষের মতো বা তার থেকেও বেশি উন্নত প্রাণীর বসবাস? এর উত্তর আজও মেলেনি। তবে স্টিফেন ফ্লেমিং এর মতো একাধিক পদার্থবিদের দাবি, “হয়তো আমরা একা নই”। হয়তো পৃথিবী থেকে বহু বহু আলোকবর্ষ দূরে, পৃথিবী -র মতোই অন্য কোনও গ্রহে রয়েছে মানুষের মতো কোনও উন্নত প্রাণী। যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখনও তার কোনও সন্ধান পাননি। আর জানবেনই বা কেমন করে। এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কতটুকুই বা তাঁরা জানতে পেরেছেন?
তাই বলে সন্ধান থামিয়ে রাখলে তো চলবে না। সন্ধান চালিয়ে যেতে হবে। এবাপারে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড অনেক দূরের বিষয়, সৌরজগতের কোথায় কি রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখনও তার সম্পূর্ণ সন্ধান করে উঠতে পারেননি। এখনও তাঁদের অনেক বড় প্রশ্ন, “সৌর জগতের কোথাও কী আদৌ কোনও প্রাণ থাকতে পারে?” থাকলে পৃথিবী -র মানুষই হয়তো ভবিষ্যতে লাভবান হতে পারবে। কারণ পৃথিবী -র পাশাপাশি সেখানেও মানুষ কোনও এক সময়ে পারবে বসতি গড়তে।
পৃথিবী -তে প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছে, কারণ পৃথিবী রয়েছে এক্কেবারেই ‘গোল্ডিলকস জোন’-এ। সৌরজগতের আর কোথাও প্রাণ থাকতে পারবে কিনা এই অনুসন্ধান মানুষের দীর্ঘদিনের। যদিও উন্নত কোনও প্রাণী নেই, এব্যাপারে এখন নিশ্চিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। হয়তো থাকতে পারে কোনও অণুজীব বা কোনও ব্যাকটেরিয়া। থাকলে এটুকুই যথেষ্ট। অন্তত জানা যাবে, পৃথিবী -র বাইরেও প্রাণ টিকে থাকতে পারে। এখনও পর্যন্ত ৫টি সম্ভাব্য স্থানে এই সন্ধান চলছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনেক বেশি আশাবাদী মঙ্গল গ্রহকে নিয়ে। কারণ এই লাল গ্রহে যে এক সময় জলের উপস্থিতি ছিল, তা এখন অনেকটাই নিশ্চিত তাঁরা। তাঁদের এই আশা জাগিয়েছে সেখানকার প্রাচীন নদীখাত, হ্রদ বা বড় জলাশয়ের চিহ্নগুলি। মাটির নিচে এখনও তরল জলের স্তর থাকতে পারে বলে অনুমান তাঁদের। আর সেখানেই হয়তো টিকে থাকতে পারে কোনও মাইক্রো জীবের।
বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপাকে নিয়েও আশাবাদী জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কারণ তাঁদের ধারণা, ইউরোপার সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা শক্ত বরফের নিচে হয়তো জমা রয়েছে তরল জল। মাঝে মধ্যে সেই জলকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বাষ্পাকারেও ঊর্ধ্বাকাশে উঠতে দেখেছেন। হয়তো এই জলেই জন্ম নিতে পারে কোনও অণুজীব।
শুধু বৃহস্পতি নয়, শনির উপগ্রহ এনসেলাডাস-কে নিয়েও যথেষ্ট আশাবাদী জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এখানেও বরফের নিচে জমে রয়েছে তরল জল। এখানে সবচেয়ে আশার কথা জানিয়েছে ক্যাসিনি মহাকাশযান। এই মহাকাশযানটি জলের নিচে এমন কিছু জৈব উপাদানের উপস্থিত শনাক্ত করেছে, যা জীবন টিকে থাকার জন্য উপযুক্ত।
টাইটান শনির আর একটি উপগ্রহ। দীর্ঘদিন ধরেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পাখির চোখ এই উপগ্রহটি। এখানে তরল মিথেন, ইথেন এবং ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। এছাড়াও এখানে জটিল জৈব অণুর সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। যা ভিন্ন কোনও জীবের ধারণা দিয়ে থাকে।
সম্ভাবনা যদিও কম, কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান চালাতে কার্পণ্য করছেন না শুক্র গ্রহের ক্ষেত্রেও। এই গ্রহের ভূপৃষ্ঠ অত্যন্ত উত্তপ্ত। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের কিছুটা উপরি অংশে মনোরম তাপমাত্রা রয়েছে। যা জীবনের জন্য একেবারেই উপযুক্ত। এছাড়া এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে রয়েছে ফসফিন গ্যাস। জীবনের সঙ্গে এই গ্যাস জড়িত।