Thursday, July 31, 2025

পিঁপড়ে সমাজেও রয়েছে ডাক্তারি ব্যবস্থা ও হাসপাতাল

- Advertisement -

পিঁপড়ে –রা রোগ-সংক্রমণের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সচেতন। প্রায় ক্ষেত্রে কিছু পিঁপড়ে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্য পিঁপড়ে -রা ফেরোমোন নিঃসরণের মাধ্যমে তা বুঝতে পারে। তারা রোগাক্রান্ত পিঁপড়ে –কে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কলোনি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। যাতে বাকি পিঁপড়ে ওই রোগে আক্রান্ত হতে না পারে।

পিঁপড়ে
Image by Loc Nguyen from Pixabay

শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে এই বিশ্বে পিঁপড়ে –র সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। অন্তত ২০২২ সালে প্রকাশিত ‘Proceedings of the National Academy of Sciences’ নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে এই তথ্য জানা যাচ্ছে। ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, এই বিশ্বে পিঁপড়ে –র সংখ্যা প্রায় ২০ কুইন্টিলিয়ন (অর্থাৎ ২০ এর পিঠে ১৯টি শূন্য বসালে যে সংখ্যাটি হয়)। বলা বাহুল্য, এই সংখ্যা থেকে সহজেই বুঝতে পারা যাচ্ছে, একজন মানুষ পিছু পিঁপড়ে –র সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখের সমান।

সেই সঙ্গে তাদের ওজনও নেহাত কম নয়। হিসেব কষে জানা যাচ্ছে, পিঁপড়ে সম্প্রদায়ের মোট ওজন পৃথিবীর সমস্ত মানুষের মোট ওজনের থেকেও অনেক বেশি। অতএব পিঁপড়ে ক্ষুদ্র হলেও তাদের মোটেও নগণ্য বলা যায় না।

এর পাশাপাশি এরা এই পৃথিবীর মানুষের থেকেও পুরনো বাসিন্দা। ফসিলস গবেষণায় জানা যাচ্ছে, তাদের আবির্ভাব প্রায় ১০ কোটি বছর পূর্বে। অর্থাৎ তাদের সঙ্গে নিঃসন্দেহে ডাইনোসরের পরিবারেরও একসময় সাক্ষাৎ ঘটেছিল। বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার প্রজাতি নিয়ে পিঁপড়ে সম্প্রদায় অ্যান্টার্কটিকা বাদে প্রায় সমগ্র পৃথিবীতে কলোনি তৈরি করে বসবাস করছে।

এই পিঁপড়ে –রা আবার নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে দারুণ সচেতন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আফ্রিকার Megaponera analis নামক পিঁপড়ে কোথাও খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে যদি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে বাকি পিঁপড়ে তাদের বাসায় টেনে নিয়ে যায়। এবং নির্দিষ্ট একটি কক্ষে (পিঁপড়ে –দের হাসপাতাল ধরে নেওয়া যেতে পারে) তাদের বিশ্রামে রাখে। এই সময়ে বিশেষ কিছু পিঁপড়ে (ডাক্তার পিঁপড়ে) আহত পিঁপড়ে –দের শুশ্রূষা করতে থাকে। তাদের শরীর থেকে নিঃসৃত অ্যান্টিমাইক্রবিয়াল পদার্থ ব্যবহার করে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে দেয়। এই প্রক্রিয়াকে গবেষকেরা পিঁপড়ে -দের wound care বলেছেন।

- Advertisement -

পিঁপড়ে –রা রোগ-সংক্রমণের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সচেতন। প্রায় ক্ষেত্রে কিছু পিঁপড়ে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্য পিঁপড়ে -রা ফেরোমোন নিঃসরণের মাধ্যমে তা বুঝতে পারে। তারা রোগাক্রান্ত পিঁপড়ে –কে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কলোনি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। যাতে বাকি পিঁপড়ে ওই রোগে আক্রান্ত হতে না পারে।

এছাড়াও কলোনির কিছু পিঁপড়ে নিযুক্ত থাকে বাসা পরিষ্কারের কাজে। তারা প্রায় সব সময়ই সমস্ত কলোনি ঘুরে বেড়ায়। আর মড়া পিঁপড়ে বা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার সংগ্রহ করে বাসার বাইরে বের করে দেয়। এছাড়াও তাদের শরীরে বাস করা Streptomyces ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক উৎপন্ন করে। যা তাদের বাসা জীবাণু মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর