অনেক ক্ষেত্রেই ল্যাবরেটরিতে করা করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট আসতে সময় লেগে যায় বেশ কয়েকদিন। তাই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির উপযুক্ত চিকিৎসাও শুরু হয় দেরিতে। ডিএনএনাজ নামের একটি সংস্থা তৈরি করেছে এমন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে ৯০ মিনিটেই জানা যাবে করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট। তবে একটি যন্ত্র দিয়ে একবারই পরীক্ষা করা যাবে। অতি জরুরী ক্ষেত্রে এই যন্ত্রে ব্যবহার উপযোগী হবে। – ছবি : সংগৃহীত |
অনলাইন পেপার : সামান্য উপসর্গ বা সন্দেহ মাত্রই অনেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিচ্ছেন। তার নমুনা চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরিতে। সেখানে বিশ্লেষণের পর রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে করোনা পরীক্ষার। তার পরেই ওই ব্যক্তি জানতে পারছেন তিনি পজিটিভ, না নেগেটিভ। তবে নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা হয়ে তার হাতে রেজাল্ট আসতে অনেক ক্ষেত্রেই সময় লেগে যাচ্ছে বেশ কয়েকটা দিন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই করোনা পজিটিভ হলেও তার চিকিৎসা পেতে বেশ দেরিই হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু আবিস্কৃত নতুন যন্ত্রে এবার পরীক্ষার রেজাল্ট পেতে সময় লাগবে মাত্র ৯০ মিনিট, অর্থাৎ দেড় ঘণ্টা প্রায়। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরের ইম্পিরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীরা সামনে এনেছেন এমন একটি কম্পিউটার চিপ বা যন্ত্র, যা কিনা করোনা পরীক্ষা করতে সময় নেবে মাত্র ৯০ মিনিট। যে কাজটি ল্যাবরেটরিতে করতে অনেকটাই বেশি সময় লাগবে, সেই একই কাজ করতে এই নতুন যন্ত্র সময় নেবে সে তুলনায় খুবই কম। যন্ত্রটি তৈরি করেছে ডিএনএনাজ নামের একটি সংস্থা।
কেমনভাবে পরীক্ষা করবে এই যন্ত্র? পদ্ধতি জানলে যে কেউ ব্যবহার করতে পারবে এই যন্ত্রটি। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, প্রথমে গলা বা নাক থেকে সংগ্রহ করা সোয়াব বা নমুনা ওই যন্ত্রের একটি নীল রঙের আধারে রাখতে হবে। এই আধারটিতেই মজুত রয়েছে করোনা পরীক্ষার সমস্ত রকম রাসায়নিক। পরে আধারটি জুতোর বাক্সের মতো দেখতে ওই যন্ত্রের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে হবে। তারপর পরীক্ষা হয়ে ৯০ মিনিটেই রেজাল্ট জানা যাবে। তবে ওই আধারটি একবার ব্যবহারের পর পুনরায় আর ব্যবহার করা যাবে না।
কীভাবে নিশ্চিত হল ওই যন্ত্রের ফলাফল একেবারেই সঠিক? বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সংবাদদাতা জেমস গ্যালাহার এব্যাপারে জানিয়েছেন, গবেষণার বিষয়টি ল্যানসেট মাইক্রোব বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ৩৮৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাশাপাশি একই সঙ্গে ওই যন্ত্র ও ল্যাবরেটরিতে আলাদাভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই ফলাফল একই দেখা গিয়েছে। যার নমুনা পজিটিভ তার উভয় ক্ষেত্রেই পজিটিভ এবং যার নমুনা নেগেটিভ তার উভয় ক্ষেত্রের পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে।
বিশ্ব জুড়ে প্রতি মুহূর্তেই বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই সংক্রমণ ছড়িয়েও পড়ছে খুব দ্রুত। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোনও রকম উপসর্গ ছাড়াই করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসছে পজিটিভ। তাই অধিকাংশ মানুষ বুঝতেই পারছেন না, তিনি করোনায় আক্রান্ত কিনা। এক্ষেত্রে দ্রুত ও ভালো ফল দিতে পারে ডিএনএনাজ-এর করোনা পরীক্ষার এই নতুন যন্ত্র।
তবে এই যন্ত্র দিয়ে একই সঙ্গে অধিক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। কারণ একবার ব্যবহারের পরই এটিকে ফেলে দিতে হবে। কিন্তু অতি জরুরী পরিস্থিতিতে এই যন্ত্র উপযোগী হয়ে উঠবে, জানিয়েছেন ইম্পিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক গ্রেয়াম কুক।