৭৯ বছর পর পোস্টকার্ড ফিরে গেল প্রেরকের ঠিকানায়

Advertisement
২০০৩ সালে ওই পোস্টকার্ডটি লিওরা পান একটি দোকান থেকে। এই পোস্টকার্ডটি ১৯৪২ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেখা হয়েছিল। লিখেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা ব্রিটিশ সৈনিক এ টি মেনার্ড। তিনি পোস্টকার্ডটি ডব্লিউএইচ কাল্ডওয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছিলেন। যিনি বাসিন্দা ছিলেন নিউইয়র্কের ক্লিনটন এভিনিউ-এর। লিওরা পোস্টকার্ডটি হাতে পাওয়ার পর থেকেই প্রেরককে সন্ধান করতে থাকেন। যেন তাঁর বা তাঁর পরিবারের হাতে সেটি তুলে দিতে পারেন।
৭৯ বছর পর পোস্টকার্ড ফিরে গেল প্রেরকের ঠিকানায়
Symbolic Image – Image by Pezibear from Pixabay

অনলাইন পেপার : সিনেমার রুদ্ধশ্বাস গল্পকেও হার মানিয়ে দেবে এই ঘটনা। ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য একটি পোস্টকার্ডকে ঘিরে। পোস্টকার্ডটি প্রেরকের হাত থেকে বেরিয়েছিল ১৯৪২ সাল নাগাদ, অন্তত পোস্টকার্ডের উপর সেটে দেওয়া ডাকবিভাগের সিলের তারিখ দেখে এমনটিই জানা গিয়েছে। এবার ৭৯ বছর পূর্বের সেই পোস্টকার্ডটি একাধিক বাধা পেরিয়ে পুনরায় ফিরে গেল তাঁর প্রেরক অর্থাৎ মালিকের ঠিকানায়।

আর এর জন্যে এককভাবে সম্পূর্ণ কৃতিত্বের দাবি রাখবেন পেশায় আইনজীবী লিওরা ক্রাইজিয়ার। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলস শহরের বাসিন্দা। বরাবরই তাঁর পুরনো পোস্টকার্ড সংগ্রহের শখ রয়েছে। এই শখের বশে হঠাৎ তাঁর হাতে এসে পৌঁছায় ওই ৭৯ বছরের পুরনো পোস্টকার্ডটি।

সিএনএন সংবাদ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, ২০০৩ সালে ওই পোস্টকার্ডটি লিওরা পান একটি দোকান থেকে। এই পোস্টকার্ডটি ১৯৪২ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেখা হয়েছিল। লিখেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা ব্রিটিশ সৈনিক এ টি মেনার্ড। তিনি পোস্টকার্ডটি ডব্লিউএইচ কাল্ডওয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছিলেন। যিনি বাসিন্দা ছিলেন নিউইয়র্কের ক্লিনটন এভিনিউ-এর।

লিওরা পোস্টকার্ডটি হাতে পাওয়ার পর থেকেই প্রেরককে সন্ধান করতে থাকেন। যেন তাঁর বা তাঁর পরিবারের হাতে সেটি তুলে দিতে পারেন। এব্যাপারে সাহায্য পাওয়ার জন্য তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে বার কয়েক চিঠিও পাঠান। কিন্তু সেসময়কার কোনওরকম তথ্য দিতে ব্রিটিশ সেনা লিওরাকে অস্বীকার করে। কারণ এসবই ছিল ব্রিটিশ সেনার গোপন তথ্য।

আরও বার কয়েক চিঠি পাঠিয়ে লিওরা শুধু ওই প্রেরকের সম্পূর্ণ নামটিই জানতে পারেন। তাঁর নাম ছিল আর্থার টমাস মেনার্ড। কিন্তু এত বছর পর ওই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে খুঁজে পাবেন কি করে তিনি! এব্যাপারে লিওরা ব্রিটিশ জনমিতির তথ্য ঘাটতে থাকেন। এইভাবে তিনি পেয়েও যান বেশ কয়েকজন আর্থার টমাস মেনার্ড। পরে এঁদের মধ্যে আসল আর্থার টমাস মেনার্ড কে সেটিও পরে খুঁজে বের করতে হয়েছে তাঁকে।

একাধিকবার চিঠি ও মেইল প্রেরণের পর অবশেষে খোঁজ পান আসল আর্থার টমাস মেনার্ড-এর। একসময়ে মেইল আসে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের নরফক স্টিবার্ডের বাসিন্দা মাইকেল ভ্যালেরি বক্সারের। তিনি মেইল করেছিলেন তাঁর প্রতিবেশী বৃদ্ধ টম মেনার্ডের তরফ থেকে। উভয়ের মধ্যে কয়েকবার মেইল দেওয়া নেওয়ার পর জানতে পারা যায় আর্থার টমাস মেনার্ড আসলে ছিলেন এই টম মেনার্ডের নিজের ভাই। তবে আর্থার টমাস মেনার্ড এখন আর বেঁচে নেই।

তিনিই যে আসল আর্থার টমাস মেনার্ড, এই বিষয়েও নিশ্চিত হন আইনজীবী লিওরা ক্রাইজিয়ার। তিনি টম মেনার্ডের থেকে আর্থার টমাস মেনার্ডের হাতের লেখা চেয়ে নিয়ে মিলিয়ে দেখেন তিনিই আসল আর্থার টমাস মেনার্ড কিনা। প্রমাণ পাওয়ার পর আর দেরি না করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লিওরা পোস্টকার্ড নিয়ে পৌঁছে যান টম মেনার্ডের বাড়িতে সেটি পৌঁছে দিতে।

Advertisement
Previous articleসারা বাংলায় একমাত্র লোকপুরে-ই টিকে রয়েছে ‘সেরপাই’ শিল্প (ভিডিও সহ)
Next articleসর্ববৃহৎ হিমশৈলটি আর নেই, গলতে গলতে হারিয়েই ফেলেছে নিজের অস্তিত্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here