২ ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ থেকেই শুরু হচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের মেগা ইভেন্ট

Advertisement

images%2B%252812%2529
সোমনাথ মুখোপাধ্যায় : শীতকালে মেঘমুক্ত নির্মল রাতের আকাশ জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহীদের কাছে রীতিমতো আকর্ষণের বিষয়। তার ওপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের রাতের আকাশ হল জ্যোতির্বিজ্ঞানের দিক থেকে অত্যন্ত ঘটনাবহুল। আর সেইসব আকর্ষণীয় ঘটনাগুলো যদি কোন টেলিস্কোপ ছাড়াই খালি চোখে দেখা যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। যে কোন লোকই সেইসব ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ করে আনন্দ ও জ্ঞানলাভ করতে পারবেন। কাজেই অন্তত ডিসেম্বর মাসের জন্য অ্যামেচার জ্যোতির্বিজ্ঞানী হতে বাধা নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন ঘটনাটা কবে শুরু হবে। এবং কিভাবে তা উপভোগ করবেন।
images%2B%252813%2529
উল্কাবৃষ্টি (Meteor Shower) – শুরু হয়ে যাচ্ছে ২ ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ থেকেই। রাতের আকাশে একাধিক উল্কা পতনের দৃশ্য অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। কিন্তু এই সুন্দর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রথমেই বেছে নিতে হবে একটি অন্ধকার মাঠ, যার ধারেকাছে কোন আলোর প্রভা নেই। শহরের চেয়ে গ্রামবাংলা থেকে এই দৃশ্য সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে। মোটকথা অন্ধকার জায়গা থেকে উল্কা বৃষ্টির অপূর্ব দৃশ্য সবচেয়ে ভালো প্রত্যক্ষ করা যাবে। তা বলে বাড়ির ছাদ থেকে দেখা যাবে না এমনটা নয়। যদি ২ ডিসেম্বর আকাশের দিকে চোখ রেখেও খুব বেশি উল্কাপাত দেখতে পাওয়া যাবে না, ফলে ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে। বাস্তবিক জেমিনিডস উল্কা বৃষ্টি (Geminids meteor shower) সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে ডিসেম্বরের ১৩ তারিখের রাত থেকে ১৪ তারিখ ভোরবেলা পর্যন্ত। American meteor society (AMS) জানাচ্ছে, সেদিন উল্কাপাতের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রতি ঘন্টায় ১৫০টি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আশা করছেন এবারের উল্কা বৃষ্টি অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে। তবে এদিন হতাশ না হলেও এর অনেকটাই পূর্ণিমার চাঁদের জন্য নাও দেখা যেতে পারে। কারণ ১২ ডিসেম্বর পূর্ণিমা। তাই দেখার জন্য বেছে নিন চাঁদের বিপরীত দিকের অপেক্ষাকৃত অন্ধকার আকাশকে। অবশ্যই হতাশ হবেন না, তাকিয়ে থাকুন অন্তত ২০৩০টা উল্কাপাত দেখতে পাবেনই। যদি মন না ভরে তাহলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই, ডিসেম্বরের ২১ ও ২২ তারিখে উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাবেন যদিও তার হার থাকবে অনেকটাই কম, ঘণ্টায় মাত্র দশটি
images%2B%252814%2529
বলয়গ্রাস সূর্য গ্রহণ এই বলয়গ্রাসটি এই দশকের শেষ সূর্য গ্রহণ। এটি দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার কিছু কিছু অংশে। এইসময় চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দিয়ে সরাসরি অতিক্রম করবে। তবে উল্লেখিত জায়গাগুলি ছাড়া অন্য জায়গাগুলিতেও আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে, উপরি পাওনা হতে পারে ‘Ring of fire’।
ধূমকেতু – ৮ ডিসেম্বর রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের মেগা ইভেন্ট। ওইদিন সম্প্রতি আবিষ্কৃত ২১/বরিসভ নামক একটি বহির্জাগতিক বৃহৎ ধূমকেতু সূর্যের খুব কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে ফলে পৃথিবী থেকে তাকে খালি চোখে উজ্জ্বলভাবে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। (২১/বরিসভের বিষয় বিশদজানতে চোখ রাখুন জনদর্পণের ওয়েব সাইটে)
     কাজেই বন্ধুরা ডিসেম্বর মাস জুড়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ঘটনাক্রম মহা উৎসাহের সঙ্গে উপভোগ করুন। তবে সূর্য গ্রহণ দেখার জন্য অতি অবশ্যই উপযুক্ত সর্তকতা নেবেন। খোলা চোখে সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাবেন না। এর জন্য উন্নত মানের বিশেষ ধরনের গ্রহণ দেখার যে চশমা পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করতে পারলে ভালো। নচেৎ চোখের ক্ষতি, এমনকি চোখ নষ্ট‌ও হয়ে যেতে পারে।

Advertisement
Previous articleআবিস্কার হল দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোল, পাল্টে যাবে প্রচলিত ধারণা
Next articleপ্রাণের বীজ বহনে ধূমকেতু

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here