অভিশপ্ত ‘গুলাব’ যেন ঝরে গিয়ে পরিণত হয় সাধারণ নিম্নচাপে। কিন্তু তখনও অবশিষ্ট থেকে যায় ঘূর্ণাবর্তের। গুজরাত উপকূলের কাছে এটি আবার নেমে পড়ে আরব সাগরে। এবার যেন হালে পানি পায় এই ঘূর্ণাবর্ত। ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হল ‘গুলাব’-এর থেকেও ভয়ঙ্কর আর একটি ঘূর্ণিঝড়ে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাহিন’। এটি কাতারের প্রস্তাবিত নাম। যার বাংলা অর্থ ‘শিকারের পাখি’। |

অনলাইন পেপার : পূর্বাভাস অনুযায়ী গত ২৬ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলের কাছে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’। ভয়ঙ্কর তাণ্ডব চালিয়েছিল ওই দিন রাতভোর। অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই বিশাল অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে সেটি শক্তি ক্ষয় করে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ, পরে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হয়। এখন আবারও সেটি শক্তি সঞ্চয় করে তৈরি হয়েছে আগের চেয়েও ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘শাহিন’-এ।
সাধারণত একটি ঘূর্ণাবর্ত থেকে শক্তি সঞ্চয়ের পর একটিই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সেটিকে বিরলের থেকেও বিরল বলা চলে। কারণ ঘূর্ণাবর্ত যতক্ষণ সাগরের মুক্ত অঞ্চলে থাকবে, তার শক্তি ততই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। পরে সাগর থেকে স্থলভাগের বদ্ধভূমিতে উঠে এলে ক্রমশ শক্তি কমে যায় তার। ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় থেকে ধাপে ধাপে ধাপে প্রথমে অতি গভীর নিম্নচাপ, পরে গভীর নিম্নচাপ এবং শেষে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে অবশেষে শান্ত হয়ে যায়।
গত সপ্তাহের প্রথম দিকে মায়ানমার উপকূলের কাছে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল, ক্রমশ সেটি উত্তর-পশ্চিমে সরতে সরতে চলার পথে শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেছিল। অবশেষে তার রূপান্তর ঘটে ‘গুলাব’ ঘূর্ণিঝড়ে। যদিও এই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বা আয়লার মতো অতটা ভয়ঙ্কর ছিল না। কিন্তু উপকূলে প্রবেশের সময় তার শক্তি ছিল যথেষ্ট। ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ উপকূলে আছড়ে পড়ার পর নিমেষের মধ্যে গুঁড়িয়ে যায় অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলের একাংশ।
পরে এটি আরও উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হতে হতে শক্তি হারাতে থাকে। অভিশপ্ত ‘গুলাব’ যেন ঝরে গিয়ে পরিণত হয় সাধারণ নিম্নচাপে। কিন্তু তখনও অবশিষ্ট থেকে যায় ঘূর্ণাবর্তের। গুজরাত উপকূলের কাছে এটি আবার নেমে পড়ে আরব সাগরে। এবার যেন হালে পানি পায় এই ঘূর্ণাবর্ত। ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হল ‘গুলাব’-এর থেকেও ভয়ঙ্কর আর একটি ঘূর্ণিঝড়ে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাহিন’। এটি কাতারের প্রস্তাবিত নাম। যার বাংলা অর্থ ‘শিকারের পাখি’।
এমনটি শেষবার ঘটেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে। সেবার অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’ ১৫ নভেম্বর আঘাত হেনেছিল তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির উপকূল অংশে। স্থলভূমিতে প্রবেশের পর শক্তি হারিয়ে সেটি সাধারণ নিম্নচাপেও পরিণত হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার আরব সাগরে প্রবেশ করে সেটি পুনরায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়।
উইন্ডিডটকম-এর চিত্র থেকে জানা যাচ্ছে, শাহিন পাকিস্থান ও ইরান উপকূল ঘেঁষে ক্রমশ পশ্চিমে সরতে থাকবে। পরে ওমানে প্রবেশ করে এটি শক্তি হারাবে। যদিও শাহিন ভারতে প্রবেশ করবে না, তবে প্রভাব ফেলতে পারে কিছুটা। এর প্রভাবে গুজরাত ও মহারাষ্ট্র উপকূলে হতে পারে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি।