হারিয়ে যেতে পারে প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্ভিদ প্রজাতি, আশঙ্কা গবেষকদের

Advertisement
পরিবেশে উদ্ভিদের মতো উপকারি বন্ধু বোধহয় দ্বিতীয় আর কেউ নেই। জীব সৃষ্টির আদিকাল থেকেই তারা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পাশাপাশি ‘জীবন বায়ু’ দান করে চলেছে নিঃস্বার্থভাবে। অথচ কোনওরকম শত্রুতা ছাড়ায় শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করার অভিপ্রায়ে মানুষ দিনের পর দিন নিধন করে চলেছে পরিবেশের এই পরম বন্ধুরূপী উদ্ভিদদের। সম্প্রতি ‘রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস কিউ’ জানিয়েছে উদ্ভিদ কুলের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রজাতি এখন বিলুপ্ত হওয়ার মুখে। – ছবি : সংগৃহীত
lane 3797149 12802
Image by Mabel Amber from Pixabay

অনলাইন পেপার : সমগ্র উদ্ভিদ কুল যে নিতান্ত বিপদের মধ্যে রয়েছে, তা আর নতুন করে বলার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রায় প্রতিদিনই তাদের গড় সংখ্যা হ্রাসের দিকেই রয়েছে। মানুষের তীব্র চাহিদার শিকার হয়ে বিনা বাধায় ধরাশায়ী হচ্ছে একের পর এক উদ্ভিদ প্রজাতি। সমগ্র বিশ্ব জুড়েই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের সংখ্যা। আর তারই সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে মানুষের বাসস্থান, খাদ্য আর কর্মসংস্থানের। এই সমস্ত চাহিদা পূরণের তাগিদে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একপ্রকার ধ্বংস হতে হচ্ছে উদ্ভিদ সমাজকে।

আর এবার গবেষকরা জানাচ্ছেন আরও এক আশঙ্কার কথা। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস কিউ’ তাদের এক তথ্যে জানিয়েছে, বিশ্বের সমগ্র উদ্ভিদ কুলের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রজাতি বর্তমানে তীব্র আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে। এমনকি তারা বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে সিএনএন সংবাদ সংস্থায়। তথ্যটির শিরোনাম ছিল ‘State of the worlds plants and fungi 2020’। প্রতি বছরই ‘রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস কিউ’ এই রকমই একটি করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে থাকে।

এবছরের নতুন তথ্য প্রকাশ করতে গবেষণা করেছেন ২১০ জন বিজ্ঞানী। যাঁরা ৪২টি দেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নতুন ওই তথ্যে উদ্ভিদদের বিলুপ্ত হতে চলার কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে গিয়েই উদ্ভিদ ধ্বংস করা হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও অবৈধ ব্যবসাও উদ্ভিদদের বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই সংস্থাটি ২০১৬ সালে প্রায় ২০ শতাংশ উদ্ভিদ প্রজাতির বিলুপ্ত হওয়ার কথা প্রকাশ করেছিল।

উদ্ভিদদের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে এক বিশাল পরিমাণে ঔষধি বৃক্ষ। যা দিয়ে বিভিন্ন রোগের ছোটোখাটো চিকিৎসা করা সম্ভব। সুপ্রাচীনকাল থেকেই চিকিৎসার জন্য ওই সমস্ত ঔষধি বৃক্ষের উপরই নির্ভর করে এসেছে মানুষ। তবে অধিকাংশ উদ্ভিদের ঔষধি গুণের কথা জানা আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, অনেক উদ্ভিদ প্রজাতির ঔষধি গুণের কথা জানার আগেই তারা বিলুপ্তি হতে চলেছে। এবছর ৫৪১১টির মতো ঔষধি বৃক্ষ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। তার মধ্যে গবেষণায় জানা গিয়েছে প্রায় ৭২৩টি প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। মানুষ এখনও যদি উদ্ভিদ সম্পর্কে সতর্ক না হয়, ভবিষ্যতে আরও অনেক উদ্ভিদ প্রজাতিকে চিরদিনের জন্য হারাতে হতে পারে।

Advertisement
Previous articleকেমন ছিল কোম্পানি আমলের সাহেব-সুবোদের দুর্গা পুজো?
Next articleআসন্ন দুর্গোৎসব উপলক্ষে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করল পাহাড়পুরের নাট্য ভারতী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here