গ্রাম-বাংলার এই সমস্ত বিলুপ্তপ্রায় লোকআঙ্গিক গুলিকে তুলে আনার উদ্যোগ নিল এবার মুর্শিদাবাদ এর বড়ঞা ব্লকের অন্তর্গত সাহোড়া গ্রামের ‘সাহোড়া রায়বেঁশে যুবগোষ্ঠী’। সম্প্রতি এই নিয়ে দু-দিনের একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে তারা। ‘লোকউৎসব’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে এসেছিল বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৪৯৬ জন লোকশিল্পী।

বিজয় ঘোষাল : ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন লোকআঙ্গিক ও কৃষ্টি। কম্পিউটার বা মোবাইল ও ইন্টারনেট এর এই যুগে কদর কমেছে পটের গান, বোলান গান, জারি গান সহ বিভিন্ন লোক বিনোদনের। আর তা ক্রমশ বিলুপ্তির দিকেই এগিয়ে চলেছে। তাই গ্রাম-বাংলার এই সমস্ত বিলুপ্তপ্রায় লোকআঙ্গিক গুলিকে তুলে আনার উদ্যোগ নিল এবার মুর্শিদাবাদ এর বড়ঞা ব্লকের অন্তর্গত সাহোড়া গ্রামের ‘সাহোড়া রায়বেঁশে যুবগোষ্ঠী’। সম্প্রতি এই নিয়ে দু-দিনের একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে তারা। ‘লোকউৎসব’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে এসেছিল বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৪৯৬ জন লোকশিল্পী।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল রামনগর সাহোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। প্রথম দিনের সকালে ১০১টি ঢাক নিয়ে রণপা, বহুরূপী নৃত্য, ঘোড়ানাচ ও ব্যান্ডপার্টি সহযোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে যুবগোষ্ঠীটি। তাছাড়া এই লোকআঙ্গিক লোকউৎসবে ছিল বাউল গান, আদিবাসী নৃত্য, পটের গান, জারিগান, বোলানগান, কবিগান, আলকাপ ইত্যাদি। এর পাশাপাশি ছিল পুরুলিয়ার বিখ্যাত লৌকিক শিল্প ‘ছৌ-নাচ’ প্রদর্শনী।
এছাড়া এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুটি নাটকও। উদ্বোধনী এই লোকআঙ্গিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বড়ঞা বিধানসভার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ বাগদী, নাট্যকার ড: উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, লৌকিক গবেষক ড: আদিত্য মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ড: আদিত্য মুখোপাধ্যায় এই লোকআঙ্গিক লোকউৎসব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি জানালেন, বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই লৌকিক আঙ্গিকগুলি তুলে আনার জন্য এই ধরণের লোকউৎসব এর ভীষণ প্রয়োজন রয়েছে।
সাহোড়া রায়বেঁশে যুবগোষ্ঠীর অন্যতম উদ্যোক্তা বাসুদেব ভল্লা জানান, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লৌকিক আঙ্গিক তুলে আনা ও বর্তমান সময়ে তাদের কৃষ্টির গুরুত্বকে জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরা-ই এই লোকউৎসব এর অন্যতম উদ্দেশ্য।