জন্মসূত্রে শবনম উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার বাবনেখেড়ি গ্রামের এক সুফি ধনী পরিবারের একমাত্র কন্যাসন্তান। তিনি নিজেও একজন উচ্চ শিক্ষিতা। তবে প্রেমে পড়েছিলেন দিনমজুর এক যুবকের। তার উপর যুবক সেলিম পঞ্চম শ্রেণীও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাই স্বাভাবিকভাবেই শবনমের পরিবার সেলিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। আর এই মেনে না নেওয়ার জন্যই শবনম সেলিমকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মা, বাবা সহ পরিবারের ৭ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল। |

জনদর্পণ ডেস্ক : এদেশে অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি। অপরাধের নৃশংসতা বিচার করে আদালত অপরাধীকে এই সর্বোচ্চ সাজা দিয়ে থাকে। অবশ্য নিম্ন আদালতে ফাঁসির রায় ঘোষণা করার পর অপরাধী উচ্চ আদালতে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। এইভাবে সুপ্রিম কোর্টেও যদি ফাঁসির রায় বহাল থাকে, তখন অপরাধী সবশেষে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাঁসি মকুবের জন্য আবেদন জানাতে পারে। যদি রাষ্ট্রপতিও অপরাধের নৃশংসতা বিচার করে সেই ফাঁসির রায়-ই বহাল রাখেন, তখন অপরাধীর করার আর কিছুই থাকে না। ফাঁসির দড়িকেই গ্রহণ করতে বাধ্য হন।
স্বাধীনতার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিকবার সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। তবে তা সবই পুরুষ অপরাধীর। কিন্তু এবার প্রথমবারের জন্য সেই ফাঁসির দড়ি গলায় পরতে যাচ্ছেন কোনও মহিলা। তাঁর অপরাধের চরম নৃশংসতার কথা বিচার করে আদালত এই রায় দিয়েছে।
ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার। ওই জেলার হাসানপুরের বাসিন্দা শবনমের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। তাঁর ফাঁসি হওয়ার কথা রয়েছে মথুরা জেলে। ওই জেলে মহিলাদের ফাঁসিঘরেই হবে তাঁর শেষ পরিণতি। ইতিমধ্যে ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ পরীক্ষাও করে দেখেছেন ফাঁসিকাঠ। ফাঁসির দড়ি আনা হবে বক্সার থেকে। এখন অপেক্ষা শুধু ‘ডেথ ওয়ারেন্ট’ জারির। যদিও জেল কর্তৃপক্ষ কিছুটা চিন্তিত। কারণ মথুরার এই মহিলাদের ফাঁসিঘর তৈরির পর এর আগে কখনও সেখানে কারও ফাঁসি দেওয়া হয়নি।
তবে কোন অপরাধে শবনমের এই ফাঁসির আদেশ দিল আদালত? ঘটনাটি প্রায় ১২ বছর পূর্বের। জন্মসূত্রে শবনম উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার বাবনেখেড়ি গ্রামের এক সুফি ধনী পরিবারের একমাত্র কন্যাসন্তান। তিনি নিজেও একজন উচ্চ শিক্ষিতা। তবে প্রেমে পড়েছিলেন দিনমজুর এক যুবকের। তার উপর যুবক সেলিম পঞ্চম শ্রেণীও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাই স্বাভাবিকভাবেই শবনমের পরিবার সেলিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। আর এই মেনে না নেওয়ার জন্যই শবনম সেলিমকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মা, বাবা সহ পরিবারের ৭ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল।
নিজের ফাঁসি মকুবের জন্যেও কম চেষ্টা করেনি শবনম। প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট ও পরে রাষ্ট্রপতির কাছেও আবেদন জানায় সে। কিন্তু নৃশংস অপরাধের কথা বিচার করে সুপ্রিম কোর্ট ও রাষ্ট্রপতি তাঁর ফাঁসির রায় বহাল রাখে।