Advertisement
এই প্রথম কোনও বেসরকারি স্পেস এক্স মহাকাশ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারল ২ জন মহাকাশচারীকে। তাদের এই মিশনটি ছিল বেশ জটিল। হিসাবের সামান্যতম তারতম্য ঘটলেই মহাকাশযান অর্থাৎ ‘স্পেস এক্স ক্যাপসুল’-টি মহাশূন্যে ধ্বংস হয়ে যেতে পারত। ওই মহাকাশচারীরা মহাশূন্যে কাটিয়েছেন ৬৪ দিন। – ছবি : সংগৃহীত
|
রঞ্জন সরকার : ১৯৭৫ সালে স্যুয়েজ মিশন মহাকাশ বা স্পেস থেকে জলের ওপর অবতরণ করেছিল। আবারও সেই স্মৃতি উসকে দিয়ে দীর্ঘ ৪৫ বছর পর একই কায়দায় জলের ওপর অবতরণ করল মহাকাশযান ‘স্পেস এক্স ক্যাপসুল’। গত ২ আগস্ট ওই মহাকাশযানটি ২ জন মহাকাশচারীকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনে। ওই দুজন মহাকাশচারী ছিলেন ডুগ হার্লি ও বব বেনকেন। তাঁরা অবতরণ করেন মেক্সিকান উপসাগরে।
মিশনটি খুব সহজ ছিল না। ছিল বেশ জটিল। কারণ এই প্রথম কোনও বেসরকারি ‘স্পেস এক্স’ মহাকাশযান ব্যবহার করে মহাকাশ থেকে মানুষকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পারলো। এক্ষেত্রে হিসাবের সামান্য তারতম্য ঘটলেই স্পেস এক্স ক্যাপসুলটি ভূপৃষ্ঠের অনেক ওপরে, অর্থাৎ মহাশূন্যেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারত।
২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মহাশূন্যে ঘটে যাওয়া কল্পনা চাওলা ও তাঁর সঙ্গীদের মর্মান্তিক পরিণতির স্মৃতি এখনও পৃথিবীবাসীর স্মরণে রয়েছে। সেদিনের সেই মহাকাশ যাত্রায় একই সঙ্গে ছিলেন ৬ জন মহাকাশচারী ও একজন বিজ্ঞানী। মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরতে গিয়েই শূন্যে ধ্বংস হয়ে যায় তাঁদের মহাকাশযানটি।
তবে এদিনের এই স্পেস এক্স ক্যাপসুলটি ছিল বিশেষভাবে নির্মিত এবং পরীক্ষিত। ক্যাপসুলটির চারিপাশে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় ঘর্ষণ প্রতিরোধ করতে হিটশিল্ড বা তাপ নিরোধক স্তর ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও এই ক্যাপসুলটিতে ৪টি উন্নত প্রযুক্তির শক্তিশালী প্যারাসুট যুক্ত করা হয়েছিল, যাতে ভূপৃষ্ঠের অবতরণের সময় তীব্র গতিকে রোধ করতে পারে।
যদিও ওই মহাকাশচারীরা নিরাপদেই পৃথিবীতে ফিরতে পেরেছেন। এর আগে মেক্সিকান উপসাগরে ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল। ঘটনার সময় কয়েকটি বেসরকারি নৌযান তাঁদেরকে উদ্ধার করে।
প্রায় ৬৪ দিন মহাকাশে কাটিয়ে ওই দুই মহাকাশচারী পৃথিবীতে ফিরতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। আবার নতুন করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে স্বাভাবিক শ্বাস নিতে পেরে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়েন দুজনে। তাঁদের পৃথিবীতে ফেরার এই মিশন ছিল প্রায় ১৯ ঘণ্টার। ক্যাপসুল থেকে বের করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় একটি নির্দিষ্ট কক্ষে। সেখানে তাঁদের পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য রাখা হয় কিছুক্ষণ। স্পেস এক্স ক্যাপসুলটি পরীক্ষা করে তুলে দেওয়া হয় উপকূল রক্ষাবাহিনীর জাহাজে। ডুগ হার্লি ও বব বেনকেন পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরতেই প্রশংসার টুইট ছুটে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে থেকে।
Advertisement