Advertisement
সৌম্যদীপ্ত বোস : চলতি পথে দু’পাশের দেওয়ালগুলিতে কোথাও উজ্জ্বলভাবে লেখা থাকে ডেঙ্গু থেকে মুক্তির উপায়, কোথাও বা বুঝিয়ে দেওয়া হয়স্বাস্থ্যবিধানের মূলনীতি, আবার ছবির মাধ্যমে কোনও কোনও জায়গায় উল্লেখ করা হয় আগামী পোলিও খাওয়ানোর দিনটি কবে। এরকম ছবি কম-বেশি সবার কাছেই সুপরিচিত। কারণ প্রতিনিয়তই এলাকারহাসপাতাল বা স্বাস্হ্যকেন্দ্রগুলি এইভাবেই পরামর্শ দিয়ে থাকে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে।
কিন্তু হাসপাতাল নিজেই যদি অস্বাস্থ্যকর হয়, তবে তার পরিণাম কি হতে পারে? নিজের এলাকার পরিচিত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি অন্যকে পরামর্শ দিয়ে থাকে ঠিকই, অথচ নিজের স্বাস্থ্যের কথা আদৌ ভাবে কী? ওই সমস্ত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি ঘুরে দেখলে বোঝা যাবে, সেগুলি কতটা অস্বাস্থ্যকর। সেখানে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকে ‘বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট’ তথা ব্যবহৃত সূচ, রোগীর ফেলে দেওয়া ব্যান্ডেজ, বাদ দেওয়া ওষুধ, খন্ডিত প্লাস্টিকের সামগ্রী ইত্যাদি। অথচ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির দেওয়ালেই ঝোলানো থাকে জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণসমিতির গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা। সেখানে অধিকাংশক্ষেত্রে উল্লেখ থাকে তিন ধরনের ডাস্টবিনের কথা। যেগুলি হল কালো ব্যাগে সাধারণ বজ্যসমূহ, হলুদ ব্যাগে দেহজাত বজ্য ও পূঁজ রক্তমাখা গজ কাপড় এবং নীল ব্যাগে পরিত্যজ সূচ ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে এই নির্দেশিকা মানতে বাধ্য হয় কতজন? বেশিরভাগ সময়ই তিনটি ডাস্টবিন হয় খালি পড়ে থাকে নতুবা সেগুলি ভরে গিয়ে বাইরে উপচে ফেলে তার পরিত্যক্ত সামগ্রী।
নিজের কাছে তার স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ। সেই সম্পদে কোথাও ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত করতে ছুটতে হয় এলাকার হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা দেখা দিলে তার পরিণাম ভয়াবহ হতে বাধ্য।২০১৫ সাল থেকে চালু হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কায়াকল্প’ প্রকল্প। যার মূল উদ্দেশ্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতি ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমীক্ষা করা, যার মধ্যে প্রধান স্বাস্থ্যবিধি। যা মানতে দেখা যায় না অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে।
তবে পুরোপুরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপানোও বৃথা। জনসাধারণেরও এবিষয়ে সমান সচেতন হওয়া প্রয়োজন। নিজের এলাকার হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে ব্যবহার করার সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, এখানকার পরিবেশ যেন কোনওভাবেই দূষিত বা অস্বাস্থ্যকর না হয়ে ওঠে। কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র সুস্থ থাকলে তবেই সুচিকিৎসা পাবে জনসাধারণ।
Advertisement