Advertisement
পৃথিবীর হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১০-১১ বছর অন্তর সূর্যের উপরি অংশের কোনও কোনও জায়গায় বড়ো আকারের বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। যার ফলে উৎপন্ন ক্ষতিকারক সৌর কণিকা বা মহাজাগতিক রশ্মি প্রবল বেগে সৌরমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। এমনিতেই অহরহ মহাজাগতিক রশ্মিগুলি (যার অধিকাংশই আসে সূর্য থেকে) মহাকাশে ছুটে বেড়াতে থাকে। যার প্রভাব পড়ে গ্রহগুলির উপর। |

অনলাইন পেপার : প্রায় ১০০ বছর পর আবারও এক ভয়ঙ্কর সৌর ঝড়ের সাক্ষী হতে চলেছে পৃথিবী। শেষবার এত তীব্র সৌর ঝড় আছড়ে পড়েছিল ১৯২১ সাল নাগাদ। তবে সেসময়ে ইন্টারনেট পরিষেবার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের তত রমরমা না থাকায় তেমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি পৃথিবী। শুধু টেলিগ্রাফ পরিষেবার উপরই প্রভাব পড়েছিল মাত্র।
কিন্তু এবারের সৌর ঝড়ে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশাল ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও টেলি যোগাযোগ পরিষেবা দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন একাধিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী। যার ফলে বিশ্ব জুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় তীব্র প্রভাব পড়তে পারে। তবে কবে বা কখন সেই সৌর ঝড় আছড়ে পড়বে, তার কোনও পূর্বাভাস দিতে পারেননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কারণ পৃথিবীর অভ্যন্তরে সংঘটিত ভূমিকম্পের মতো সূর্যের ভেতরে ঘটে চলা বিস্ফোরণের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।
পৃথিবীর প্রাণ পুরুষ সূর্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত হয়ে চলে শক্তির উৎপাদন। এক্ষেত্রে সেখানে ছোটো ছোটো বিস্ফোরণ খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু সেই বিস্ফোরণ যদি অতি ভয়ঙ্কর আকারে ঘটে, তবে তার প্রভাব সমগ্র সৌরমণ্ডলে পড়তে বাধ্য। সেক্ষেত্রে বাদ যায় না পৃথিবীও। সূর্যের ভেতর এই রকম বড়ো বড়ো বিস্ফোরণে যে ভয়ানক তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এক কথায় সৌর ঝড় (Solar storms) বলেছেন।
পৃথিবীর হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১০-১১ বছর অন্তর সূর্যের উপরি অংশের কোনও কোনও জায়গায় বড়ো আকারের বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। যার ফলে উৎপন্ন ক্ষতিকারক সৌর কণিকা বা মহাজাগতিক রশ্মি প্রবল বেগে সৌরমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। এমনিতেই অহরহ মহাজাগতিক রশ্মিগুলি (যার অধিকাংশই আসে সূর্য থেকে) মহাকাশে ছুটে বেড়াতে থাকে। যার প্রভাব পড়ে গ্রহগুলির উপর। তবে গ্রহগুলির যদি নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র থাকে, তবে ভূ-পৃষ্ঠের অনেক বাইরে চৌম্বক ক্ষেত্রে ওই রশ্মিগুলি আটকা পড়ে যায়। রক্ষা পায় ওই গ্রহের পরিবেশ।
পৃথিবীরও নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে। তাই যুগ যুগ ধরে ধেয়ে আসা মহাজাগতিক রশ্মির গ্রাস থেকে রক্ষা পায় পৃথিবীর জীবমণ্ডল। তবে সৌর ঝড়ের সময় ক্ষতিকারক কণিকা বা মহাজাগতিক রশ্মির বেগ ও পরিমাণ অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এমনকি সময়ে সময়ে চৌম্বক ক্ষেত্র ভেদ করেও কিছু পরিমাণ রশ্মি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। যেমনটি ঘটেছিল ১৯২১ সালের সৌর ঝড়ের সময়ে।
যদিও এই সৌর ঝড়ে পৃথিবীতে বসবাসরত প্রাণীদের জীবনহানির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এর তীব্র প্রভাব পড়বে ইন্টারনেট পরিষেবা, স্যাটেলাইট, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায়। জীবনহানির সম্ভাবনা থাকবে মহাকাশ স্টেশনে বসবাসকারী মহাকাশচারীদের। সৌর ঝড় যদি কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস স্থায়ী হয়, সেক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বিশ্ব জুড়ে।
Advertisement