Advertisement
সম্পূর্ণ উদাসীনতার শিকার হতে হল ভগবতীপুরের দুই বন্ধুকে। নিত্যদিনের মতো দুই বন্ধু সুমন ঘোষ ও অভিরূপ ঘোষ গিয়েছিলেন মাঠে গোরু চরাতে। কিন্তু এই যাওয়ায় তাঁদের শেষ যাওয়া হল। ব্লক চত্বরে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটল তাঁদের। এই ঘটনায় সমস্ত ভগবতীপুর গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। – ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া
|
বিশ্বজিৎ ঘোষ : অন্যান্য দিনের মতো তাঁরা দুই বন্ধু একই সঙ্গে গোরু চরাতে গিয়েছিল মাঠে। কিন্তু এদিন গোরু চরিয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারল না তাঁরা। মাঠে ছিঁড়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারে বিদুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ঘটলো তাঁদের।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লক চত্বরে। তঁদের বাড়ি আমোদপুর পঞ্চায়েতের ভগবতীপুর গ্রামে। মৃত ওই দুই বন্ধুর নাম সুমন ঘোষ (১৪) ও অভিরূপ ঘোষ (১৮)। তাঁরা দুজনেই আমোদপুর জয়দুর্গা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সুমন ঘোষ অষ্টম শ্রেণী এবং অভিরূপ ঘোষ ছিলেন একাদশ শ্রেণীর ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, গত ৩০ জুলাই দুপুর নাগাদ গোরু চরিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। সুমন পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে বিদুৎপৃষ্ট হচ্ছে দেখে তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান অভিরূপ। তখন তিনিও বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে পড়েন। ফলে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু ঘটে। পরে তাঁদের দেহ সিয়ান হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
যেহেতু এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি সাঁইথিয়া ব্লক চত্বরেই ঘটেছে। তাই স্থানীয়রা প্রশাসন দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রশাসন ভবনের সামনে দীর্ঘ সময় বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে পড়ে থাকলেও মেরামতের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এই উদাসীনতার ফলে দুটো ঝকঝকে, তরতাজা ছেলেকে আকালে চলে যেতে হল। এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছে মৃতের দুই পরিবারও। গোটা ভগবতীপুর গ্রামও শোকাস্তব্ধ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে, বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিন ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ দুটি গ্রামে ফিরিয়ে আনা হলে তাঁদের শেষ বারের জন্য দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন। সেই সঙ্গে ওই দুই পরিবারের পাশেও তাঁরা দাঁড়ান। অভিরূপের মা সুমিত্রা ঘোষ ও সুমনের মা মণিমালা ঘোষ দুজনেই শোকে বাক্যহারা। সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের ছবি পোস্ট করে শোক প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীদের অনেকেই। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাকে কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছে না স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ডাঙালীতলা শ্মশানে তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
Advertisement