Advertisement
অনলাইন পেপার : স্থলভাগের মতো সমুদ্রের জলদেশেও আছে গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুসংস্থান। সেখানকার বাস্তুসংস্থান বিনষ্ট হলে ক্ষতির মুখে পড়বে স্থলভাগের বাস্তুসংস্থানও। কারণ সমুদ্রের জলদেশ এবং স্থলভাগ একে ওপরের পরিপূরক। স্থলভাগ যে ক্রমাগত দূষিত হচ্ছে, তা কারোরই অজানা নয়। কিন্তু সামুদ্রিক জলভাগও যে দারুণভাবে দূষিত হয়ে চলেছে দিনের পর দিন, এবার তারই একটি প্রতিবেদন তুলে ধরল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মানব সমাজের দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপে ক্রমশ দূষিত হয়ে উঠছে সমুদ্রের জল। বিশেষ করে সমুদ্রের যে অংশে কলকারখানার পরিমাণ বেশি, সেখানে বিষাক্ত রাসায়নিক, জীবাশ্ম জ্বালানীর নাইট্রোজেন ও বর্জ্যপদার্থ মিশছে মারাত্মকভাবে। সেই সাথে কার্বনের পরিমাণও সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী করছে। আর তাপমাত্রা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই অক্সিজেনের হার কমে যায়। তাই সমুদ্রের জলে অক্সিজেনের উপস্থিতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ১৯৬০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সমুদ্রের জলে অক্সিজেনের পরিমাণ গড়ে ২ শতাংশ কমে গিয়েছে। তবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের কোনও কোনও স্থানে এই পরিমাণ ৪০ শতাংশেও পৌঁছিয়েছে। যার ফলে সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান ইতিমধ্যেই দারুভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে।
আইইউসিএন-এর ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৬০ সাল নাগাদ সমুদ্রের ৪৫টি অংশে এই অক্সিজেনের কমতি লক্ষ করা গেলেও ২০১০ সাল নাগাদ প্রায় ৭০০টি অংশে লক্ষ করা গিয়েছে। এই অক্সিজেনের কমতি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। আর এই অঞ্চলে বাস্তুসংস্থানের বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
সমুদ্রের জলে এই অক্সিজেনের কমতির জন্য মার্লিন, টুনা, হাঙরের মতো দ্রুতগামী মাছেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা জলে অক্সিজনের অভাবে ক্রমাগত উপরের দিকে উঠে আসতে চাইছে। কিন্তু সেখানেও তাদের রেহায় মিলছে না। কারণ জলের উপরি অংশেও ভেসে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, এইভাবে চলতে থাকলে ২১০০ সালের আগেই সমুদ্রের জলে অক্সিজেনের পরিমাণ ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমে যেতে পারে। যার ফল হবে অত্যন্ত মারাত্মক। পরোক্ষভাবে এর সবচেয়ে প্রভাব পড়বে মানব সমাজের ওপর।
Advertisement