Advertisement
অনলাইন পেপার : বিবর্তনের পথের পথিক হয়ে বহুবার বিবর্তিত হয়েছে পৃথিবীর সমস্ত কিছুই। যারা বিবর্তনের পথ বেয়ে চলতে পেরেছে, তারাই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পেরেছে। আর বাকিরা হারিয়ে গিয়েছে চিরদিনের জন্য।
এখানে সমস্ত কিছু বলতে প্রাণী ও উদ্ভিদ উভয়কেই বোঝানো হয়েছে। তবে এই বিবর্তন শুধু শুধু হয়নি। প্রাণী বা উদ্ভিদ নিজের প্রয়োজনে নিজেকে বিবর্তিত করেছে বারংবার। উদ্ভিদের মধ্যে মিল্কউড এমনই একটি উদ্ভিদ, যে নিজের আত্মরক্ষার স্বার্থে নিজের শরীরে বিষ জমিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছে। এই বিষ (কার্ডিও গ্লাইকোসাইড) তাদের শরীরের দুধের মতো সাদা রসের সাথে মিশে থাকে, যার এক ফোঁটা যে কোনও পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে প্রবেশের পর মুহূর্তেই তার ভবলীলা সাঙ্গ হতে খুব বেশি সময় নেয় না। এককালে (যদিও এখনও) আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ শিকারের সময় এই রস তাদের তিরের ফলায় মাখিয়ে নিত। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রধানত পক্ষী শ্রেণীর প্রাণীদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে মিক্লউড–কে এইভাবে বিবর্তিত হতে হয়েছে।
তা সত্ত্বেও মোনার্ক বাটারফ্লাইপ্রজাতির প্রজাপতির থেকে সে নিজেকে কিন্তু আড়াল করতে পারেনি। এই প্রজাতির প্রজাপতির প্রধান খাদ্য সামগ্রী হল মিল্কউড গাছের দুধেল রস। নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই প্রজাপতিরা জেনে বুঝেই এই বিষ পান করে থাকে। আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী তাদের গবেষণায় দেখেছেন, মোনার্ক বাটারফ্লাই–এর শরীরে অবস্থান করা এক ধরণের জিন তাদের এই বিষ পান করতে সাহায্য করে। এই প্রজাতিরাও বিবর্তনের চাকায় বহুবার বিবর্তিত হয়েছে। ওই বিশেষ ধরণের জিন মিল্কউড গাছের বিষাক্ত রস তাদের শরীরে কোনও প্রভাব ফেলতে দেয় না। বরং ওই রস পান করতে উজ্জীবিত করে।
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই বিষাক্ত গাছকে মোনার্ক বাটারফ্লাই এতটাই পছন্দ করে, যে তারা প্রধানত এই গাছের পাতাতেই ডিম পেড়ে থাকে। শুধু তাই নয় পরে শুঁয়োপোকারাও এই গাছের পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করতে সমর্থ হয়। অবশেষে সেই বিষ জমা হতে থাকে মোনার্ক বাটারফ্লাই–এর রঙিন ডানাতেও।
Advertisement