শুরু হয়ে গিয়েছে ‘সৌর সর্বনিম্ন’, চলবে ৩০ বছর ধরে

Advertisement

‘সৌর সর্বনিম্ন’ শুরু হলে সূর্যের গড় তাপমাত্রা বেশ অনেকটাই কমে যায়। সেই সঙ্গে পৃথিবীরও গড় তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। মারাত্মক প্রভাব পড়ে পৃথিবীর পরিবেশের ওপর। কারণ ‘সৌর সর্বনিম্ন’ চলার সময়ে বজ্রপাত, ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। ফসলের ওপরেও প্রভাব পড়তে পারে মারাত্মকভাবে।

su
রঞ্জন সরকার : প্রায় দুই মাস আগেই খবর পাওয়া গিয়েছিল, সূর্যের ঘুমাতে যাওয়ার ব্যাপারে। অর্থাৎ ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হতে চলেছে সূর্যের। এবার নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরও স্পষ্ট করে জানালেন, ‘সৌর সর্বনিম্ন’ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আর তা চলবে আগামী ৩০ বছর পর্যন্ত। এর ফলাফল পৃথিবীর পক্ষে যে মোটেও ভালো হবে না, তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
     নিউইয়র্ক পোস্ট-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই অনেকটাই কমে গিয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যেহেতু এখন ‘সৌর সর্বনিম্ন’ চলছে, তাই সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্রও বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে পৃথিবীর ওপর। কারণ সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্রের দুর্বলতার সুযোগে বহির্জগতের মহাজাগতিক রশ্মির আবির্ভাব সক্রিয় হয়ে উঠবে অনেকটাই। একমাত্র মেরু অঞ্চল দিয়েই মহাজাগতিক রশ্মির প্রবেশ ঘটে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে, তাই পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চলে তার প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া মহাকাশচারীরাও বেশ সমস্যায় পড়বেন এই সময়ে।
     ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এর প্রভাবে পৃথিবীর পরিবেশও অনেকটাই পালটে যেতে পারে। প্রভাব পড়বে ঋতু পরিবর্তনের ওপরও। ১৭৯০-১৮৩০ সাল পর্যন্ত চলা ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এর সময় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছিল পৃথিবীতে। সে সময়ে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা খাদ্য সঙ্কটের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল পৃথিবীকে। ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এর শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ ১৮১৬ সাল নাগাদ পৃথিবীর কোথাও গ্রীষ্মকাল তেমনভাবে অনুভূত হয়নি। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ঘোর গ্রীষ্মে তুষারপাত হতে দেখা গিয়েছিল সে বছর। তবে এরকম কোনও পরিস্থিতি এবারের ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এ হবে কিনা তা অবশ্য জানাননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

আরও পড়ুন :
     প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতি ২০০ বছর অন্তর সূর্যের একবার ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে অনেকটাই কমে যায় সূর্যের গড় তাপমাত্রা। কারণ এই সময়ে ‘সান স্পট’গুলি উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। সূর্য তুলনামূলকভাবে শীতল হয়ে পড়ে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রাতেও প্রভাব পড়ে এই সময়ে। গড় তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রী পর্যন্ত কমে যায়।
     সাধারণত প্রতি ১১ বছর অন্তর সূর্যের মিনি ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হয়। যার প্রভাব পৃথিবীর ওপর তেমনভাবে বুঝতে পারা যায় না। কিন্তু ২০০ বছর অন্তর যে দীর্ঘদিন ব্যাপী বৃহৎ ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হয়, তার প্রভাব স্পষ্ট বোঝা সম্ভব। তাছাড়া প্রতি ৪০০ বছর অন্তর আরও বড়ো যে ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হয়, এর ফল হয় মারাত্মক। এবারের অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে যে ‘সৌর সর্বনিম্ন’ হতে শুরু করেছে, তা প্রতি ৪০০ বছর অন্তর হওয়া ‘সৌর সর্বনিম্ন’-এর অংশ। ফলে এর প্রভাব পৃথিবীর পক্ষে যে খুব ভালো হবে না তা স্পষ্ট করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
Advertisement
Previous articleশক্তি বাড়াচ্ছে ‘আমফান’, অভিমুখ বাংলার দিকেই (Live Position)
Next articleদক্ষিণ দিনাজপুরেও লক্ষ্য করা গেল আমফানের দাপট

6 COMMENTS

  1. Though the news about solar minimum is true, most of the other facts stated in this report are questionable. Watch the linked video for detailed explanation about solar minimum and its effects on Earth.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here