ব্রুসেল্লোসিস রোগ আসলে কী? বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লকের ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য উন্নয়ন আধিকারিক সমীর কুমার দাস জানালেন, এটি গবাদি পশু (গরু, ছাগল, মহিষ প্রভৃতি)-দের একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। সাধারণত ‘ব্রুসেলাঅ্যাবোটাস’ নামের ব্যাকটেরিয়া এই রোগের মূল কারণ। গবাদি পশুদের পোয়াতি অবস্থার শেষ পর্যায়ে তারা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার পর পশুর শরীরে জ্বর আসতে পারে। খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। |

জনদর্পণ ডেস্ক : শুধু যে মানুষেরই রোগ হবে, এমনটি নয়। মানুষের পাশাপাশি পশুরাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে তফাৎ একটাই, মানুষ তার রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে পারে। কিন্তু পশুরা এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অসহায়। বন্যপশুরা চিকিৎসার কোনওরকম প্রায় সুযোগ না পেলেও গবাদি পশুরা অবশ্য মানুষের দৌলতে কিছুটা হলেও উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ পেয়ে থাকে।
তবে কিছু রোগ পশু শরীর থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সচেতন হওয়া এক্ষেত্রে অতি আবশ্যিক। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছিল চীন থেকে। একাধিক বিশেষজ্ঞের ধারণা, বাদুড় ছিল এই রোগের বাহক। আর সেই বাদুড়ের থেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল মানুষের শরীরে। বিশেষজ্ঞরা আবার এও ধারণা করছেন, সেসময়ে এই বিষয়ে একটু বেশি সতর্ক হলে করোনা সংক্রমণকে বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া থেকে অবশ্যই আটকানো সম্ভব হত।
তাই পশু বা মানুষের কোনও রোগকেই হেলাফেলা করা উচিত নয়। এবার প্রাণী সম্পদ বিভাগ পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্য জুড়ে গবাদি পশুদের ব্রুসেল্লোসিস রোগের টিকাকরণ শুরু করতে চলেছে। যদিও অন্যান্য রাজ্যে ইতিমধ্যেই এই রোগের টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লকে এই টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। এবং তা চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর আগে এই রোগের কোনও টিকাকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। এই প্রথম এরকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ব্রুসেল্লোসিস রোগ আসলে কী? বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লকের ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য উন্নয়ন আধিকারিক সমীর কুমার দাস জানালেন, এটি গবাদি পশু (গরু, ছাগল, মহিষ প্রভৃতি)-দের একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। সাধারণত ‘ব্রুসেলাঅ্যাবোটাস’ নামের ব্যাকটেরিয়া এই রোগের মূল কারণ। গবাদি পশুদের পোয়াতি অবস্থার শেষ পর্যায়ে তারা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার পর পশুর শরীরে জ্বর আসতে পারে। খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে।
যদিও এক্ষেত্রে গবাদি পশুর মৃত্যুর হার খুবই কম, কিন্তু ক্ষতি হতে পারে ব্যাপক। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত হলে গবাদি পশু মৃত বাচ্চা প্রসব করে। আর জীবিত বাচ্চা প্রসব হলেও বাচ্চা শারীরিক দিক থেকে হতে পারে অনেকটাই দুর্বল। বাছুর জন্মানোর পর গাভীর ফুল নাও পড়তে পারে। দুধের পরিমাণ মারাত্মভাবে কমে যেতে পারে। আর্থিক লোকসানের মুখ দেখতে পারেন প্রাণীপালকেরা।
সমীর বাবু আরও জানালেন, এতসবের পরেও ব্রুসেল্লোসিস রোগের উপযুক্ত কোনও চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এই রোগ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় ৪ থেকে ৮ মাস বয়সের সমস্ত গবাদি পশুকে জীবদ্দশায় অন্তত একবার টিকাকরণ করাতে হবে। এছাড়াও তিনি এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে স্থানীয় প্রাণী চিকিৎসালয় বা ব্লক প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন।