Advertisement
জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায় : শীত বিদায় নিতে চলেছে। আর সেই সুযোগে এলাকা জুড়ে উপদ্রব বাড়াতে তৎপর হয়েছে মশা। দিন ও রাতের চব্বিশ ঘণ্টায় ক্ষণকালের জন্যেও তাদের সূচ থেকে রেহায় পাওয়ার উপক্রম নেই। এদিকে মশা মারার হাজার রকম সামগ্রী বিকোচ্ছে হাটে-বাজারে। ধূপ থেকে শুরু করে লিকুইড, গায়ে মাখার বিষাক্ত ওষুধ, চাইনিজ মসকিউটো কিলিং নেট কোনও কিছুই বাদ যাচ্ছে না ক্রয়-বিক্রয়ে। পৌরসভার এলাকাগুলিতে তো নিয়ম করে প্রায় দিনই নালা-নর্দমায় মশা মারার তেল দেওয়া হচ্ছে। তবু মশার বংশ কি সত্যিই ধ্বংস করা যাচ্ছে? উত্তর আসছে ‘না’।
মশা মূলত ছোট্ট একটি পতঙ্গ শ্রেণীরপ্রাণী। অথচ তার সূচ ফোটানোর যন্ত্রণায় মস্ত বড়ো হাতিও কাবু হয়ে যায়। অবশ্য পরিবেশের উপর মশার ইতিবাচক কোনও প্রভাবও নেই। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, গোদ, চিকুনগুনিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগ ছড়ানো ছাড়া তাদের বিশেষ কোনও কাজও নেই। তাই কোনও উপায়ে তাদের বংশকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা গেলেও পরিবেশে তার কোনও প্রভাব পড়বে না, এটা নিশ্চিত। কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল করা আদৌ কী সম্ভব?
কয়েক বছর আগে আমেরিকার ইলিনয়েসের মশক নিধন কর্মসূচির কর্মকর্তা রজার এস নেস্কি বলেছিলেন, বর্তমান পৃথিবীতে সব মশা মেরে ফেলার মতো কোনও অস্ত্র এখনও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই পুরোপুরি নির্মূল করা একেবারেই অসম্ভব। পঞ্চাশের দশকে সমগ্র লাতিন আমেরিকা জুড়ে একযোগে মশা নিধনের অভিযান চালিয়েও মশার বংশ নির্মূল করতে পারেনি।
বর্তমান বাজারে যে সব মশা মারার ধূপ বা লিকুইড বিক্রি হয়, তা অনেক উন্নতমানের। কিন্তু সে সব প্রয়োগে মশা মরছে কোথায়? আসলে মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে মশারাও ধীরে ধীরে প্রস্তুত করে নিচ্ছে নিজেদের। পরিবেশে টিকে থাকতে অন্য সব প্রাণীর মতো মশাদের শরীরের জিনেও পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়ত। তাই বছর বছর মশা নিধন সামগ্রীর ফর্মুলায় পরিবর্তন ঘটিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। উপরন্তু বিষাক্ত ফর্মুলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ নিজেই।
Advertisement