শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়বে, এমন কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও মেলেনি

Advertisement
তাপমাত্রার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের হ্রাস-বৃদ্ধির সরাসরি কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা তার কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা পাননি। বরং তাঁরা স্থান ভেদে অর্থাৎ একেক দেশে করোনা ভাইরাসের চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটার কিছু প্রমাণ পেয়েছেন মাত্র। তবে এই পরিবর্তন আবহাওয়া জনিত কোনও কারণে ঘটেছে কিনা, সেব্যাপারে কোনও বিশেষজ্ঞই এখনও একমত হতে পারেননি। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছিল গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে।

শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়বে, এমন কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও মেলেনি
Image by fernando zhiminaicela from Pixabay

অনলাইন পেপার : গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরৎ পেরিয়ে শীত এখন দ্বার প্রান্তে প্রায়। করোনার ছোবল তবুও অব্যাহত ভারতে। গত বসন্তে শুরু হয়ে আবার আগামী বসন্ত আসতে আর কয়েকটা মাস বাকি মাত্র। মাঝের কয়েকটা মাস গোটা ভারত জুড়ে ব্যাপক সংক্রমণ হতে শুরু করেছিল। সে সময় প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯০ হাজারের উপর। যদিও সেই সংখ্যা এখন অনেক কমে গড়ে ৩৫-৪৫ হাজার প্রতিদিনে নেমে এসেছে। ভারতের কয়েকজন করোনা বিশেষজ্ঞ এই সূচক দেখে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, এদেশে করোনা আক্রান্তের ঊর্ধ্বসীমা নাকি পেরিয়ে গিয়েছে।

তবু এখনও ভয়ের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন কিছু বিশেষজ্ঞ। তাঁদের ধারণা, শীতে আর এক দফা করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকছে। কারণ শীতেই নাকি যে কোনও সর্দি-কাশি-জ্বর সৃষ্টিকারী ভাইরাসের বৃদ্ধি ঘটে। করোনা সংক্রমণও যেহেতু সর্দি-কাশি-জ্বর-এর সম গোত্রীয়, তাই শীতের আবহাওয়ায় এরও বৃদ্ধি ঘটা অমূলক কিছু নয়।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা একেবারেই অনুকূল। এমনিতেই দেখা গিয়েছে এই ভাইরাসের বহিরাবরণ অর্থাৎ যাকে ‘নিউক্লিয় এনভেলাপ’ বলা হচ্ছে, সেটি অনেকটা তৈলাক্ত প্রকৃতির। এই অংশটি গ্রীষ্মের তুলনায় শীতের পরিবেশে অনেকক্ষণ টিকে থাকতে পারে। কারণ এই ভাইরাসটিকে নিস্ক্রিয় করতে প্রয়োজন পড়ে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির। শীতে এই রশ্মির পরিমাণ থাকে খুবই কম।

কিন্তু তাপমাত্রার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের হ্রাস-বৃদ্ধির সরাসরি কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা তার কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা পাননি। বরং তাঁরা স্থান ভেদে অর্থাৎ একেক দেশে করোনা ভাইরাসের চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটার কিছু প্রমাণ পেয়েছেন মাত্র। তবে এই পরিবর্তন আবহাওয়া জনিত কোনও কারণে ঘটেছে কিনা, সেব্যাপারে কোনও বিশেষজ্ঞই এখনও একমত হতে পারেননি।

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছিল গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে। যত সময় অতিবাহিত হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বেড়েছে। আর এই বৃদ্ধি কিন্তু পুরোটাই ঘটেছে গ্রীষ্মকাল বা গরম আবহাওয়ায়। যদি গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের দিকে নজর দেওয়া হয় তবে দেখা যাবে, এখানে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল বসন্তের মাঝামাঝি সময় থেকে। ভরা গ্রীষ্মেই এর দাপট ছিল সবচেয়ে বেশি। আমেরিকা বা ইউরোপের দিকে নজর দিলেও দেখা যাবে, সেখানেও সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে গ্রীষ্মের মরশুমেই। তাই সর্দি-কাশি-জ্বর সৃষ্টিকারী অন্য ভাইরাসগুলি শীতের মরশুমে বেশি বৃদ্ধি পেলেও, করোনা ভাইরাস যে এই মরশুমে তাদের মতোই আচরণ করবে এমন কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, জানাচ্ছেন একাধিক করোনা বিশেষজ্ঞ।

এখনও পর্যন্ত সমগ্র বিশ্ব জুড়ে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেদেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে এর পরই রয়েছে ভারত। এখানে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। তবে সুস্থের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ভারতে এখনও পর্যন্ত এই সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৭১ লক্ষ ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।

Advertisement
Previous articleবিশ্বের ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর মধ্যে স্থান পেয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানী ড. প্রবীর ঘোষ
Next articleপ্রথম উপন্যাসেই ‘বুকার’ জিতে নিলেন ডগলাস স্টুয়ার্ট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here