লকডাউনে অসহায় শিল্পীদের পাশে দাঁড়াল অপর শিল্পী সংগঠন

Advertisement
1
জনদর্পণ ডেস্ক : বিগত মাস খানেকের মধ্যেই খুব দ্রুত করোনা যেন স্বাভাবিক সমস্ত কিছুকেই অস্বাভাবিক করে তুলেছে। বিশ্ব জুড়ে করোনা যেমন একদিকে কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য মানুষের সুস্থ-সবল প্রাণ, অপরদিকে আবার দীর্ঘ ‘লকডাউন’-এর যাঁতাকলে তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার। ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে কাজ হারিয়েছে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ। যদিও মারণ ভাইরাস করোনাকে আটকাতে লকডাউন মেনে নেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও পথও খোলা নেই বিশ্ববাসীর কাছে।
     লকডাউনের আঘাত থেকে কম-বেশি সবাই-ই এখন ক্ষতিগ্রস্ত। বাদ যাচ্ছে না একাধিক শিল্পী সম্প্রদায়ও। বীরভূম জেলার বোলপুর-শান্তিনিকেতন অঞ্চলে বাউল শিল্পী, ডোকরা শিল্পী ও মৃৎশিল্পীদের একটা কদর রয়েছে বরাবরই। বাউল শিল্পীদের ভুবন ভোলানো গান আর ডোকরা ও মৃৎশিল্পীদের অভিজ্ঞ হাতের সূক্ষ্ম কাজ সমগ্র বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে এক প্রকার। এঁদের টানেই প্রতিনিয়ত শান্তিনিকেতন এলাকায় ভিড় জমাতে এগিয়ে আসেন দূর-দূরান্তের পর্যটকেরা। অনেকটা এঁদের পরোক্ষতায় পর্যটন শিল্পও এগিয়ে চলে সরল গতিতে। যদিও লকডাউনের কারণে এ সবই এখন বন্ধ।
2
     এই বাউল শিল্পীরা কখন সোনাঝুড়ি, কখন খোয়াইয়ের হাটে খোলা আকাশের নিচে, আবার কখনও ভুবনডাঙার মাঠে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করেন। কিন্তু লকডাউনএর জন্য এই মানুষগুলি আজ ভীষণভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন। লকডাউন কেড়ে নিয়েছে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ছন্দকে। একদিকে কর্মহীনতা, অন্যদিকে খাদ্যের অভাব তাঁদের ছন্দযুক্ত জীবনকে করে তুলেছে ছন্দহীনখুব অসহায়ভাবে দিন কাটছে তাঁদের।
     অপরদিকে শান্তিনিকেতন এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু ডোকরা শিল্পী যাঁরাকখন খোয়াইয়ের হাটে, কখনবা মেলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় ডোকরা শিল্পের পসার সাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আজ তাঁদের অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। জীবনযুদ্ধে তাঁরাও বিপর্যস্ত। এঁদের পাশাপাশি এই এলাকায় কয়েকজন মৃৎশিল্পীকেও খুঁজে পাওয়া যাবে। তাঁরাও এই সময়ে সম্পূর্ণ কর্মহীন।
3
     ঠিক এই রকম বিপর্যয়ের মুহূর্তে বীরভূম পুলিশের সহায়তায় শান্তিনিকেতন থানার উদ্যোগে ৫০ জন শিল্পীর হাতে (বাউল, ডোকরা, মৃৎশিল্পী) খাদ্য সামগ্রী তুলে দিল আর এক শিল্পী সংগঠন। সংগঠনের অন্যতম সদস্যা প্রতিভা গাঙ্গুলী জানালেন, শান্তিনিকেতন এলাকার সায়রবীথি পার্ক প্রাঙ্গণে ১ মে ওই শিল্পীদের হাতে চিড়ে, মুড়ি, ছাতু, তেল, পেঁয়াজ, কুমড়ো, ঝিঙে, বিস্কুট, চা, চিনি, লবণ, ডাল, মাস্ক ও সাবান তুলে দিয়ে সহযোগিতা করল চতুর্দশী’, ‘ঋত্বিক একাডেমিঅ্যাসোসিয়েশন অফ ইয়ুথ হোস্টেল শান্তিনিকেতন’-এর সদস্যরা।
     ওই একই দিনে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এলেন লাভপুরের গোপ্তাগ্রামের ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন’ (৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী) বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ পাল। তিনি সম্পূর্ণ নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই শিল্পীদের হাতে সাবান তুলে দেন।
Advertisement
Previous articleবাবা সাহেবের সঙ্গে ভারতীয় শ্রমিকদের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়
Next articleঐতিহাসিক ঈদ উৎসবের প্রারম্ভ ও ব্যঞ্জনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here