Advertisement
সুজয় ঘোষাল : পরিষেবা, গ্রন্থ সংগ্রহ ইত্যাদি বিষয়গুলির সবদিক থেকেই বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পরে নাম চলে আসেশ্রীনিকেতন পল্লী শিক্ষাভবন গ্রন্থাগারের। ব্যস্ততম এইগ্রন্থাগারটি তার পাঠকদের পঠন-পাঠনের নানা রকম পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি প্রকৃতি প্রেমেরও বিভিন্ন নিদর্শন রাখে। কখনও শীতের মরশুমে মৌসুমি ফুলের বাগান বানিয়ে গ্রন্থাগারের আকর্ষণ বাড়ায়। আবার কখনও প্রকৃতির বিভিন্ন জাতের পাখিদের সাথে সখ্যতা স্থাপন করে।
প্রায় রোজই ওই গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে ঝাঁক বেঁধে পাখি বিশেষ করে পায়রাদের আগমন ঘটে। অন্য কিছু নয়, খাদ্যের নেশায় তাদের এখানে টেনে আনে। গ্রন্থাগারের কর্মীরাও সখ্যতার বশে তাদের খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পাখিদের মধ্যে পায়রাকে ‘শান্তির দূত’ বলা হয়। সেই সঙ্গে তাদের সম্প্রতি ও সৌহার্দ রূপেও গণ্য করা হয়ে থাকে। একটা সময়ে দ্রুত চিঠি আদান–প্রদানের বড়োমাধ্যম ছিল এই পায়রা।
যাইহোক, সেসব এখন অতীতের ঘটনা। বর্তমানে উন্নত নগরায়ণ বা আধুনিক প্রযুক্তির মাত্রা ছাড়া ব্যবহারে পায়রাদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। তাদের থাকবার স্থানেরও বড়ো অভাব এখন। বিশেষ কয়েক জাতের পায়রা আবার সম্পূর্ণ বিলুপ্তও হয়ে গিয়েছে। খাদ্যের সংকটও অন্যতম বড়ো কারণ। এই পরিস্থিতিতে শ্রীনিকেতন পল্লী শিক্ষাভবন গ্রন্থাগারের এই অনন্য উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখবে।
লক্ষ্য করে দেখা গিয়েছে, প্রায় প্রতিদিনই দুপুর ১টার দিকেঝাঁকে ঝাঁকে পায়রার দল ওই গ্রন্থাগারের ছাদে এসে উপস্থিত হয় খাদ্যের সন্ধানে। ওই সময় পায়রার দলটিকে গ্রন্থাগারের অস্থায়ী কর্মী ধনেশ্বর যাদব খাবার ও জল দিয়ে তাদের সাহায্য করেন। ধনেশ্বর বাবুকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন লক্ষ্মণচন্দ্র, আবুল হাসান, মালতী সাহা, সুনীল হেমব্রমরা। খাদ্যের তালিকায় থাকে চাল, গম, মটর, ভুট্টা ইত্যাদি শস্য জাতীয় দানা। তারপর চলে জল পর্ব। খাওয়া শেষ হলে নির্বিঘ্নে পায়ারার দলটি আবার উড়ে যায় ‘শান্তির বার্তা’ বহনে।
Advertisement