রক্তের ঘাটতি মেটাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন ভুবনডাঙায়

Advertisement
১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের দিনই বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হল একাধিক রক্তদান শিবিরের। এদিন ভুবনডাঙার জাগরণী সংঘ তার নিজস্ব প্রাঙ্গণেও একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বোলপুর শাখার মাড়োয়ারী যুব মঞ্চ। তাদের এদিনের মূল উদ্দেশ্য ছিল জেলা জুড়ে সঞ্চিত রক্তের ঘাটতি কমানো। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি

রক্তের ঘাটতি মেটাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন ভুবনডাঙায়
জনদর্পণ ডেস্ক : ১৪ জুন ছিল বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করতে এদিন বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল বোলপুরের সুকান্তপল্লী-ভুবনডাঙার জাগরণী সংঘের আয়োজন। এদিন জাগরণী সংঘ বোলপুর শাখার মাড়োয়ারী যুব মঞ্চকে সঙ্গে নিয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে জাগরণী সংঘ প্রাঙ্গণে। তাদেরকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে বীরভূম ভলেন্টারি ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন।
     বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে এমনিতেই থমকে গিয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জন-জীবন। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন থ্যালাসেমিয়া ও মুমূর্ষু রোগীরা। কারণ করোনার জেরে জেলার সর্বত্র রক্তের চাহিদা দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলিতেও রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। তাই রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে জেলার থ্যালাসেমিয়া, মুমূর্ষু রোগী ও প্রসূতি মায়েদের। করোনার কারণে লকডাউনের মাঝে এতদিন কোনও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এদিন বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের দিনই জেলা জুড়ে প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন মেনে বেশ কয়েকটি শিবিরের আয়োজন করে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাতে ব্যাপক সাড়াও পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
রক্তের ঘাটতি মেটাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন ভুবনডাঙায়
     এদিন সকাল ১০টা নাগাদ রক্তদান শিবিরের আয়োজন শুরু হয় ভুবনডাঙার জাগরণী সংঘ প্রাঙ্গণে। প্রধান অতিথি হিসাবে এই শিবিরের উদ্বোধন করেন পদ্মশ্রী ডঃ সুশোভন বন্দোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন বর্তমান পৌরসভার প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা কাউন্সিলার ওমর শেখ, সুকান্ত হাজরা, ও বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়াও রক্তদান শিবির প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন ফ্লোচার্ট কল্যাণ মিত্র।
     উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সমাজসেবী প্রতিভা গাঙ্গুলি জনদর্পণ প্রতিনিধিকে জানালেন, এদিনের রক্তদান শিবিরে তাঁদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ ইউনিট রক্তের। কিন্তু শিবির শুরু হওয়ার পরই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক রক্তদাতা উপস্থিত হতে শুরু করেন। তাতে তাঁদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও ৬ ইউনিট সর্বমোট ৪০ ইউনিট রক্ত এদিন তাঁরা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। উপস্থিত সকলেই অবশ্য রক্ত দান করার সুযোগ পাননি। ফিরে যেতে হয়েছে প্রায় ১০-১২ জনকে।
রক্তের ঘাটতি মেটাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন ভুবনডাঙায়
     প্রতিভা গাঙ্গুলি আরও জানালেন, এদিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে এত বিপুল মানুষের সাড়া পাবেন, তা পূর্ব থেকে তাঁদের জানা ছিল না। অত্যন্ত উৎসাহ প্রকাশ করেছেন বোলপুর লাগোয়া সিয়ান হাসপাতাল থেকে আগত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এদিনের রক্তদান শিবিরে যোগ দিতে এগিয়ে আসেন সুদূর লাভপুরের গোপ্তা অঞ্চলের অধিবাসী ইন্দ্রজিৎ পাল। ইনি শারীরিক দিক থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী।
     বীরভূম ভলেন্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নুরুল হক জানালেন, শুধু একদিন নয় সারা বছর ধরেই মানুষকে এভাবে রক্তদানে উৎসাহিত করার জন্য তাঁরা তাঁদের নিজস্ব ঢঙেই এগিয়ে যাবেন।
     যেহেতু মারণ ভাইরাস করোনা এখন ছড়িয়ে পড়েছে চতুর্দিকে। তাই করোনার বিষয়টিকেও মাথায় রেখেছেন এদিনের রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তারা। শিবিরে প্রবেশের পূর্বে আগত সকলকেই স্যানিটাইজড্ করা হয়েছে। এমনকি প্রত্যেক রক্তদাতা রক্তদানের আগে ও পরে প্রতিটা সিটের বেডকভার পালটিয়ে এবং তাকে স্যানিটাইজড্ করে তবেই রক্তদানের উপযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও রক্তদানের শেষে প্রত্যেক রক্তদাতার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে একটি করে মাক্স, হ্যান্ড কভার, মাথার টুপি ও হ্যান্ডওয়াশ।
Advertisement
Previous article“লুপ্তপ্রায় খেলা” মনে করিয়ে দেবে শৈশবের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলিকে
Next articleযক্ষ্মা রোগীদের অন্যতম নিরাপদ আশ্রয় ছিল বীরভূমের ‘নিরাময় টিবি স্যানিটোরিয়ম’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here