Advertisement
করোনা পরিস্থিতির জন্য বীরভূম জেলায় তেমনভাবে কোথাও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে না। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে। সেই অভাব কিছুটা হলেও মেটাতে এগিয়ে এল এই জেলার কল্যাণপুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের একদল প্রাক্তনী। উদ্যোক্তারা এদিনের রক্তদান শিবিরটি উৎসর্গ করেছেন করোনা যুদ্ধে শহিদ স্বাস্থ্যকর্মী ও শহিদ ভারতীয় সেনা জওয়ানদের। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি
|
বিশ্বজিৎ ঘোষ : ৬ আগস্ট সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লকের ভ্রমরকোল গ্রাম-পঞ্চায়েতের কল্যাণপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তনীরা। এই রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করেন সাঁইথিয়া স্বাস্থ্য ব্লক আধিকারিক ডাঃ শুভঙ্কর সেন। এছাড়াও এদিনের শিবিরে উপস্থিত ছিলেন ভ্রমরকোল পঞ্চায়েতের প্রধান মিনু দাস, এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী শেখ তাহিরুল, লাভপুর ব্লকের স্কুল পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম, এলাকার স্থানীয় ইমাম জয়নাল আবেদিন, বিজ্ঞান মঞ্চের আমোদপুর শাখার সদস্য সুকুমার দত্ত, প্রধান শিক্ষক শুভ্রকান্তি ভাণ্ডারী প্রমুখ।
উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা গেল, করোনা পরিস্থিতির জন্য বর্তমানে তেমনভাবে কোথাও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে না। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে। এরকম অবস্থায় আপৎকালীন রোগীদের রক্তের প্রয়োজন দেখা দিলে তাঁরা সমস্যায় পড়তে পারেন। এদিনের আয়োজন ছিল মূলত রক্তের অভাব মোচনের সামান্যতম প্রয়াস। উদ্যোক্তারা আরও জানালেন, এদিনের রক্তদান শিবিরটি তাঁরা উৎসর্গ করেছেন করোনা যুদ্ধে শহিদ স্বাস্থ্যকর্মী ও লাদাখে শহিদ ২০ জন ভারতীয় জওয়ানকে।
এদিনের রক্তদান শিবিরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কল্যাণপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক আশরাফুল হাসান বললেন, এই করোনা আবহের মধ্যে কল্যাণপুর গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে এই শিবিরের আয়োজন করেছে, তা এক কথায় নজিরবিহীন। তিনি আরও বললেন, রক্ত কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই দানের মধ্য দিয়েই একে সংগ্রহ করতে হয়। আগামী দিনে এরকম মহৎ কাজে সকলকেই এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গরাও আশরাফুল সাহেবকে সমর্থন জানিয়ে রক্তদানের উদ্যোক্তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও তাঁরা আগামী দিনে যাতে এই রকম আরও শিবিরের আয়োজন করতে পারেন, তারও আহ্বান জানান।
এই শিবিরের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা প্রাক্তনী কামরুদ্দীন আহমেদ জানালেন, অনেকে এই শিবিরে স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে এগিয়ে এলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য সবাইকে সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিন মাত্র ৫০ জন রক্তদাতার থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি জানালেন, করোনার মতো এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি লাভ করে আগামীতে আরও বড়ো ধরণের রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে।
আর এক প্রাক্তনী হামিদ শেখ জানালেন, এদিনের এই ৫০ জন রক্তদাতা সকলেই কল্যাণপুর গ্রামেরই বাসিন্দা। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বহিরাগত কাউকেই এই শিবিরে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি।
উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা গেল, এদিনের রক্তদান শিবির মোটামুটিভাবেই সফল হয়েছে। সবশেষে রক্তদাতাদের সকলকেই একটি করে চারাগাছ ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
Advertisement