মা ও শিশুর পুষ্টি বিষয়ক সমস্যা নিয়ে প্রদর্শনী রাজনগরে

Advertisement
বীরভূম জেলার রাজনগর ব্লকের বহু প্রত্যন্ত গ্রামে মা ও শিশুর অপুষ্টি দূর করতে আশাকর্মীর পাশাপাশি বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও কাজ করে আসছে। এরকমই একটি সংস্থা ‘সিনি’। গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই সংস্থার পক্ষ থেকে রাজনগরে একটি পুষ্টি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এদিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ৫০ জনেরও বেশি মা ও শিশু। তাঁদেরকে সামনে রেখে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার সাজিয়ে রাখা হয়। এই সব পুষ্টিকর খাবারের গুনাগুণ সম্পর্কে এই সভায় বিশদ আলোচনা চলে। – ছবি  : জনদর্পণ প্রতিনিধি

মা ও শিশুর পুষ্টি বিষয়ক সমস্যা নিয়ে প্রদর্শনী রাজনগরে

সুজয় ঘোষাল : কিছুদিন আগেই ভারতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে ২০২১-২২-এর সাধারণ বাজেট। কোভিড পরবর্তী এই বাজেটে বিশেষভাবে স্বাস্থ্য বিষয়ক খাতে খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যে মা ও শিশুর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে বিশেষভাবে। যার জন্য মিশন পোষণ ২.০ প্রকল্প চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

বিগত প্রায় ১ বছর ধরে দেশ জুড়ে চলা কোভিড মহামারি ও লকডাউনের ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সামনে উঠে এসেছে। তার মধ্যে অন্যতম শিশু ও মায়েদের পুষ্টিগত সমস্যা। সাধারণত অপুষ্টিকে উপেক্ষা করা বা পুষ্টিকর খাবার না গ্রহণ করার প্রবণতা প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজও দেখা যায়। এর সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন গ্রামঞ্চলে অপুষ্টির মাত্রাকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মা ও শিশুর মধ্যে থাকা অপুষ্টিকে রোগের পর্যায়ে না ফেলে উদাসীন থাকেন অনেকেই।

যদিও গ্রামাঞ্চলে বর্তমানে ‘আশাকর্মী’-রা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সময়ে প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে আসছেন এবং ঘরোয়াভাবে কীভাবে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা যাবে, তারও সমাধান দেখিয়ে আসছেন। তবুও কোভিড পরবর্তী সময়ে ভারতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু ও প্রসূতি মায়েদের অপুষ্টির লক্ষণ যেভাবে বৃদ্ধির পাচ্ছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বীরভূম জেলার রাজনগর ব্লকের বহু প্রত্যন্ত গ্রামে মা ও শিশুর অপুষ্টি দূর করতে আশাকর্মীর পাশাপাশি বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও কাজ করে আসছে। এরকমই একটি সংস্থা ‘সিনি’। গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই সংস্থার পক্ষ থেকে রাজনগরে একটি পুষ্টি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এদিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ৫০ জনেরও বেশি মা ও শিশু। তাঁদেরকে সামনে রেখে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার সাজিয়ে রাখা হয়। এই সব পুষ্টিকর খাবারের গুনাগুণ সম্পর্কে এই সভায় বিশদ আলোচনা চলে।

সাধারণত প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলি অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার কিনতে অসমর্থ থাকেন। তাই তাঁরা যেন এইসব ঘরোয়া প্রণালীতে পুষ্টিকর খাদ্যের জোগান রাখতে পারেন, সেজন্যই এদিনের এই পুষ্টি প্রদর্শনী করা হয়েছে। এর সঙ্গে এইসব মানুষগুলি যাতে বাড়ির সামান্য জায়গা বেছে নিয়ে এইসব পুষ্টিকর খাবার কম খরচে উৎপন্ন করতে পারেন, সেবিষয়েও এদিন আলোচনা করা হয়েছে।

সিনির এক কর্মকর্তা জানালেন, “বর্তমানে মানুষ বাজার চালিত বিভিন্ন পুষ্টিকর বেবিফুডের দিকে বেশি ঝোঁকেন। তাই তাঁরা ঘরোয়া উপায়ে পুষ্টিকর খাবারের দিকে খুব বেশি নজর দেন না। গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলি বাজার চালিত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারেন না। তাই তাঁরা যাতে স্বল্প পুষ্টির জোগান পান, সেজন্যই এই পুষ্টি প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীতে আমরা সেই সব শাক-সবজিকে রেখেছি, যেগুলি আমরা নিজেদের বাড়ির সামান্য জায়গা ব্যবহার করেই উৎপন্ন করতে পারি।”

পুষ্টির গুনাগুণ সম্পর্কিত বিষয় ছাড়াও এদিন পুষ্টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব, প্রসূতি মায়ের পরিচর্যা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

Advertisement
Previous articleখোঁজ পাওয়া গেল বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম গিরগিটির
Next articleসৃজনী শিল্পগ্রামে ৩ দিনের জন্য শুরু হয়েছে সিকিম উৎসব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here